রায়গঞ্জে পৌর মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

0
712
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলায় যত্রতত্র অর্ধশতাধিকের বেশি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। ৫/৬ ইটভাটায় সঠিক কাগজপত্র থাকলেও বাকী ইটভাটায় নেই কোন কাগজপত্র।
অবৈধ ইটভাটাগুলো এখন পরিচালিত হচ্ছে পেশী শক্তি দিয়ে। পেশী শক্তি দিয়ে রায়গঞ্জ
পৌরসভার অন্তর্গত ৫নং ওয়ার্ডের লক্ষীকোলা মৌজার তিন ফসলী জমি থেকে অবৈধ প্রায় ১০/১২ টি ইটভাটায় ইটের কাঁচামাল হিসেবে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ব্রম্মগাছা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে স্থাপিত (এডিবি) ইটভাটার স্বত্তাধিকারী ও রায়গঞ্জ উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামের ইটভাটাসহ ২৯টি ইটভাটা বন্ধের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বন্ধের নোটিশ প্রদান করা সত্ত্বে ও ২৯টি অবৈধ ইটভাটা চলছে দেদাচ্ছে। সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে,কালো তালিকাভূক্ত এডিপি’র ইটভাটার মালিক রফিকুল ইসলাম লক্ষীকোলা গ্রাম থেকে কৃষকদের ৩ ফসলী জমি হতে বিভিন্ন দালাল চক্রের মাধ্যমে পৌর মাটি সংগ্রহ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কৃষক বলেন, মাটি কেনার দালালরা বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যেম সাধারণ মানুষকে মাটি দিতে বাধ্য করায়। কি এমন কৌশল ব্যবহার করে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টাকার লোভ দেখিয়ে একজন কৃষকের নিকট থেকে প্রথমে একটু বেশী গভীর করে মাটি নেয়। যার ফলে ঐ জমির চতুর দিকের জমি অনেক উচু হয়। আর উচু হওয়াতে তাদের জমিতে ইরি বা বোরো মৌসুমে পানি রাখা সম্ভব হয় না এবং নিচের জমিতে বৃষ্টি বা সেচের পানি জমাট বেধে থাকলে উচু জমির ধস নামে। আর পানি না থাকার আশংকা ও ধস নামার আশংকা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই সবাই মাটি দিতে বাধ্য হচ্ছে। অন্যকৃষককে নিকট থেকে নিতে বাধ্য করা হয়।

তিন ফসলী জমির মাটি দিতে বাধ্য হওয়া নাম প্রকাশ না হওয়া শর্তে লক্ষীকোলা গ্রামের এক কৃষক বলেন, এডিবি ইটভাটার মালিক রফিকুল ইসলামকে যদি মাটি না দেওয়া হয়। তাহলে তিনি বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের চাপ দেয়া হয়। এক পর্যায়ে আমাদের মতো সাধারণ কৃষককে মাটি দিতেই হয়।

রফিকুল ইসলাম তার রেজিষ্ট্রেশন বিহীন ভেকু ও রেজিষ্ট্রেশনহীন ১০টি ট্রাক দিয়ে ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামে স্থাপিত আরএসবি,মামা ভাগ্নে,বর্ণ ও তানিয়া ইটভাটা ছাড়া ও ধানগড়া ইউনিয়নের আবুদিয়া গ্রামের ৩টি ইটভাটায় প্রতিনিয়ত পৌর সভার মাটি সরবরাহ করছে।

রায়গঞ্জ পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নুরুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ইটভাটা কিভাবে চালিত হয় আমার বুঝে আসেনা। তবে আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নিকট দাবি রাখবো খুব দ্রুত এই অবৈধ ইটভাটা গুলো বন্ধ করে দেয়া হোক।

তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় কিছু লোক গভীর ক্ষোভে প্রতিবেদককে উদ্দেশ্যে করে বলেন, লেখে কি করবেন স্যার (এডিবি) ইটভাটার মালিক আগে বিএনপি করতো। এখন অবৈধ ইটভাটাকে চালানোর জন্য আ’লীগে যোগ দিয়েছেন। অবৈধ শুধু কাগজেই থাকবে বৈধ স্যার।

এভাবে রায়গঞ্জ পৌরসভা আওতাধীন লক্ষীকোলা গ্রাম থেকে ইটভাটার কাজে মাটি সরবরাহ করা হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে লক্ষীকোলা গ্রাম জলাশয়ে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক। তাছাড়া মাটি পরিবহনকারী অতিরিক্ত ট্রাকের কারণে চাঁদপুর জুগিদহ ব্রিজ হতে লক্ষীকোলা বাজারের (এলজিইডির) সড়কের বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের নিকট রায়গঞ্জ বাসীর দাবি উপজেলা ও পৌরসভার সৌন্দর্য রক্ষার্থে অবৈধ ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হোক।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 + eight =