Site icon Aparadh Bichitra

অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় তদন্তকারী কর্মকর্তাদের খাম দিয়ে ম্যানেজ করছেন

মোঃ আবদুল আলীমঃ
ঢাকার প্রাণকেনেদ্র যাত্রাবাড়িতে অবস্থিত শহীদ জিয়া স্কুল এন্ড কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাধিক ভুক্তভোগি শিক্ষক, অভিভাবক এমনকি ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ৪৮ নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু বাদি হয়ে অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিব, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সহ প্রধানমন্ত্রীর কাযালয়ে পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

 

এতগুলো দপ্তরে অভিযোগ দয়ের করার পরও দুর্নীতিবাজ এ অধ্যক্ষ বহাল তবিয়তে রয়েছে। আরও তিনি দাপটের সাথে বলছেন যে বাংলাদেশে এমন কোন কর্মকর্তা নেই যাকে তিনি ম্যানেজ না করছেন। তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রচুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এসব সংবাদের জের ধরে ও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারের বেশ কয়েকটি দপ্তর বিশেষ করে জেলা শিক্ষা অফিসার এর দপ্তর থেকে তদন্ত করতে এসছিল একটি টিম। শহীদ জিয়া স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন এ পর্যন্ত যতবার ফাতেমা রশিদের অভিযোগের তদন্ত করতে সরকারী তদন্ত কর্মকর্তাগণ এসেছেল ফাতেমা রশিদ ততবার তদন্তকারী কর্মকর্তাদেরকে মোটা খাম ধরিয়ে দেন। এ কারনে নাকি তার বিরুদ্ধ অভিযোগের পাহাড় থাকা সত্বেও তিনি দাপটের সাথে বলছেন যে খাম দিয়ে সকলকে ম্যানেজ করে ফেলছেন। এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মনে ভয় ও শঙ্কা বিরাজ করছে ফাতেমা রশিদের আচরন দেখে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে যেসব শিক্ষককে তিনি সন্দেহ করছেন তাদেরকে নিজ কামরায় ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদ ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন ও ভীষনভাবে শাসাচ্ছেন।
দুর্নীতিবাজ এ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট বিভাগ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পরোক্ষভাবে তার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন ও নিরপরাধ শিক্ষকদেরকে এক ধরনের চাপের মধ্যে রাখছেন। ভুক্তভোগি শিক্ষকগণ, অভিভাবক ও এলাকাবাসীগণ বলছেন যে বর্তমানে দেশে আইন নেই, নিয়ম শৃঙ্খলা নেই, বিচার নেই এবং প্রসাশনের সকল স্তরে চলছে অরাজকতা। তারই ধারাবাহিকতা হচ্ছে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদের বহাল তবিয়তে থাকা। শিক্ষা জীবনে একটি তৃতীয় বিভাগ থাকলে অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব নেয়ার কোন বিধান নেই অথচ ফাতেমা রশিদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বরাবরই এড়িয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির তহবিল তসরূপ করা, সিনিয়র শিক্ষককে টপকিয়ে তার নাম ফ্লুয়িড দিয়ে মুছে জুনিয়র শিক্ষককে সিনিয়র বানানো, স্কুল কাম কলেজটির সভাপতির স্বাক্ষর নকল করে বিভিন্ন কারসাজি করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ছাদের ওপর মোবাইল কোম্পানীর বিশালাকারের টাওয়ার গোপনে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়া, কলেজের দেয়াল ঘেঁষে অন্যায়ভাবে চারটি দোকান নির্মান করে ভাড়া আত্মসাৎ করা, ছাত্রীদের কামরা ভেঙে নিজের কামরা প্রসারিত করা, কোন ছাত্রী একদিন গড়হাজির থাকলে তাকে ৫০ টাকা জরিমানা করে জরিমানার টাকা কলেজ তহবিলে জমা না করে আত্মসাৎ করা, ৫ লাখ টাকা দিয়ে কলেজের নামে গাড়ি ক্রয় করে ১৬ লাখ টাকা কলেজ থেকে তুলে নেয়া, ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করা ইত্যাদি কারনে তার বিরুদ্ধে কলেজে বেশ কয়েকবার দেয়াল লিখন ও এলাকায় পোস্টার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সবই যেন বৃথা হয়ে যাচ্ছে ফাতেমা রশিদের কাছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা অত্মসাৎ করে তিনি ৯৩/১১/চ, পূর্ব ধলপুর, উত্তর যাত্রাবাড়ি ঠিকানায় আলীশান ভবন নির্মান করেছেন। পুরাতন ঢাকার দয়াগঞ্জে ফ্ল্যাট কিনেছেন, বেইলী রোডে কিনেছেন বিশালাকারের ফ্ল্যাট, গুলিস্তান আন্ডারগ্রাউন্ডে তার রয়েছে অনেকগুলো দোকান এবং যাত্রাবাড়ি-মিরপুর ১ নং রোডে চলাচলকারী ট্রান্স সিলভা বাস পরিবহনে তার শেয়ার রয়েছে। দর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ দতন্ত করলে এসব ব্যপারে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাবে। তার এসব দুর্নীতির বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোন তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “এ ব্যাপরে ইতোপূর্বে অনেক সাংবাদিক আমার সাথে যোগযোগ করছিল। আমি তাদেরকে রশি দিয়ে বাঁধতে চেয়েছিলাম”। দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদের দুর্নীতির কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্রী সংখ্যা দিনের পর দিন কমে আসছে। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে এ প্রতিবেদকের তদন্ত অব্যহত আছে। আগামি সংখ্যায় চোখ রাখুন। (চলবে)