রুপসায় হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ‍্য়বাহী মৃৎ শিল্প

0
510

রেজাউল ইসলাম তুরান‍ঃ খুলনা রুপসায় কালের আবর্তে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে  ঐতিহ‍্য়বাহী মৃৎ শিল্প। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে এ মৃৎ শিল্প। এক সময় এ গ্রামগুলো মৃৎ শিল্পের জন্য খুবই বিখ্যাত ছিল। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন শিল্প সামগ্রীর প্রসারের কারনে এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। সরেজমিনে সোমবার (২১ মে) উপজেলার আলাইপুরের পালপাড়া এলাকা ঘুরে জানা যায়, গ্রামে নিয়োজিত মৃৎশিল্পিদের মধ্যে অধিকাংশ পাল সম্প্রদায়ের। প্রচীন কাল থেকে ধর্মীয় এবং আর্থ সামাজিক কারণে মৃৎশিল্পে শ্রেণীভক্ত সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তী সময়ে অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা মৃৎশিল্পকে পেশা হিসেবে গ্রহন করে। এখানে ৬০ টি পরিবারের প্রায় ৫০০ জন লোক এ পেশার সাথে নিয়োজিত ছিল।

বর্তমান বাজারে এখন আর আগের মতো মাটির তৈরি জিনিস পত্রের চাহিদা নেই। কারন এর স্থান দখল করে নিয়েছে দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাষ্টিকের তৈজসপত্র। ফলে বিক্রেতারা মাটির জিনিসপত্র আগের মতো আগ্রহের সাথে নিচ্ছেনা। সে কারণে অনেক পুরোনো শিল্পিরাও পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছে। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির জিনিসপত্র তার পুরোনো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। ফলে এ পেশায় যারা জড়িত এবং যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন মৃৎশিল্প তাদের জীবন যাপন একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুঃখ কষ্টের মাঝে দিন কাটলে ও মৃৎশিল্পীরা এখনও স্বপ্ন দেখেন। কোন একদিন আবারও কদর বাড়বে মাটির পণ্যের। সেদিন হয়তো আবারো তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ-শান্তি। আর সেই সুদিনের অপেক্ষায় আজও দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে উপজেলার আলাইপুর পালপাড়া গ্রামের (কুমার) চিত্ত পাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন মাটি সংগ্রহে অনেক খরচ করতে হয়। কিছু দিন আগে মৃৎ পন্য গুলো নৌকায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় কম খরচে পাঠানো হোত কিন্তু নদীনালা না থাকায় এখন আর পাঠানো যায় না।যদি পরিবহন পাঠান হয় তাহলে খরচ বেশি লাগে এবং মাটির জিনিস অনেক সময় ভেঙ্গে যায়। এ কারনে আমাদের কে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। যার কারনে প্রায় ২ বছর হল পেশা বদলে ফেলেছি।  তাছাড়া আমাদের তৈরিকৃত মৃৎ শিল্প ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে ও সুন্দর্য পাচ্ছে। তিনি বলেন সরকারি কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সাহায্য জন্য এগিয়ে আসে তাহলে মৃৎ শিল্প কে বাঁচান সম্ভব হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

8 + 13 =