Site icon Aparadh Bichitra

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের দুর্নীতি অব্যাহত

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দুর্নীতির বরপুত্র ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের দৌরাত্মে বেকাদায় পড়ে গেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর। আসল মুক্তিযোদ্ধারা অনাহারে দিন যাপন করলেও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের চেয়ারম্যান পদে চাকুরী নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকুরী পেলেন তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সহ বিভাগীয় তদন্ত।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আব্দুর রহমান নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগে লোক পরিচয় দিয়ে বাগিয়ে নিচ্ছে একের পর এক সুবিধা। তবে তার সেসব পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তার নিয়োগে অনিয়ম সহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার চাকুরী সংক্রান্ত তথ্য তলব করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। এসব তথ্য পেলে চাঞ্চল্যকর অনেক কিছু ফাস হতে পারে। সুত্র জানায়, সাতটি বিষয়ে তথ্য চেয়ে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। এতে স্বাক্ষর করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন নিয়োগ-৩ অধিশাখার উপসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান। তবে এ চিঠি নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। চিঠিতে তার (আব্দুর রহমান) উপসচিব পদে পদোন্নতির তারিখ ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। তেমনি কত দিনের মধ্যে তথ্যাবলী প্রেরন করতে হবে, তার কোন সময় সীমা দেওয়া হয়নি। ফলে এ ফাক গলেই বিষয়টি ফাইলচাপা পড়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
চিঠির তথ্য অনুসারে আব্দুর রহমান (৭৩৯৮) ১৯৮৬ সালের ৩০ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের উন্নয়ন প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর উপসচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
এতে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে :
আব্দুর রহমানের চাকুরী উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় ও অর্থ বিভাগের সস্মতিপত্র এবং প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের জিও (সরকারী আদেশ) এর কপি। চাকুরী রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের পর নিয়মিতকরনের আদেশ। ক্যাডারভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সরকারী কর্মকমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সুপারিশের অনুলিপি।
সিনিয়র স্কেলে পদোন্নতির পরীক্ষা পাশের গেজেটের কপি:
পরীক্ষায় অংশগ্রহন বা পাশ না করে থাকলে প্রমার্জন সংক্রান্ত আদেশের অনুলিপি। সিনিয়র স্কেলে পদোন্নতির আদেশের অনুলিপি। উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে প্রেরিত সুপারিশের অনুলিপি এবং সিনিয়র স্কেল পদে পদোন্নতির জণ্য উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্তির পুর্বে অন্য কোন পদোন্নতি প্রাপ্ত হলে তৎসংক্রান্ত আদেশের অনুলিপি।
সুত্র মতে জানা গেছে, আব্দুর রহমানের এসব তথ্য সঠিক ভাবে পাওয়া গেলে তার নিয়োগে অনিয়ম সহ জালিয়াতির অনেক ভয়াবহ দুর্নীতি প্রকাশ পাবে। বিশেষ করে তিনি চাকুরীতে যোগদান করেছেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। অথচ তিনি আসলে মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের ডাটাবেজের তথ্যানুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৬০ সালের ১৫ মে মাসে। সেই হিসাবে ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ পর্যন্ত তার বয়স ছিল ১০ বছর ১০ মাস ১১ দিন। কাজেই ঐ সময় মুক্তিযোদ্ধে যোগদান করার দাবি কতটুকু বাস্তবসম্মত তা প্রশ্নসাপেক্ষ। তাছাড়া সরকারীভাবেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকা হবার ক্ষেত্রে মুক্তিবার্তা লাল বহির ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সর্বনিম্ন ১৩ বছর এবং ভারতীয় তালিকার ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর সর্বনিম্ন ১৩ বছর সীমা নির্ধারন করা আছে। তবে এ বিষয়টি যাচাই করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অপর একটি সুত্র জানায়, আব্দুর রহমান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকুরীতে বহাল তবিয়তে আছে। দুর্নীতির মাধ্যমে ধ্বংস করে দিচ্ছে রাজউককে। হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তার কাছে এখন আছে কালো টাকার পাহাড়। যেকোন সংস্থা তদন্তে এলে পরে আর তাদের খবর থাকেনা। কালো টাকা দিয়ে সব কিছু ধামাচাপা দিয়ে রাখে। তবে বিয়ষটি যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর করা যায় তাহলে এর সুবিচার নিশ্চিত হবে। মহাদুর্নীতির কবল থেকে বেচে যাবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক।