অস্থির ব্রয়লার মুরগির বাজার ও মাছের বাজার

0
563

সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামে রমজানে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি করায় আপত্তি ছিল বিক্রেতাদের। বাড়তি দামে বিক্রিও হচ্ছিল। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনের নিয়মিত বাজার তদারকিতে রাজধানীর অনেক জায়গায়ই এখন নির্ধারিত দামে গরু-খাসির মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে অস্থির ব্রয়লার মুরগির বাজার। রমজানে দাম বেড়েছে দেশি ও পাকিস্তানি কক জাতের মুরগির।

বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছের দামও। ‘তিন দিন আগে আমাদের জরিমানা করছে। তার পর থাইকা ৪৫০ টাকা কেজি বেচি। হাতিরপুলের সবাই এখন এই দামে বিক্রি করে।’ বলছিলেন হাতিরপুল বাজারের মাংস বিক্রেতা মো. সুমন। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৫০ টাকা, বিদেশি গরুর মাংস ৪২০ এবং খাসির মাংস ৭২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আবার বিদেশি গরু জবাই করলেও সবই দেশি গরুর মাংস বলে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের দোকানগুলোয় বিদেশি গরু বলে কিছু নেই। সুপারশপগুলোতে গরুর মাংস ৪৫০ টাকা দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে এখনো মহল্লার কিছু কিছু দোকানে গরুর মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। রামপুরার ওয়াপদা রোডে একটি মাংসের দোকানে ৫০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়। দোকানের মালিক আনিস ব্যাপারী বলেন, ‘না পোষাইলে কেমনে বিক্রি করুম? পোষাইতে তো হইবো।’ রমজানের আগে থেকেই ১৫-২০ টাকা বেশি দামে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির মাংস। এই দাম ১৪৫ টাকার বেশি হতে পারে না—এমনটাই জানা গেছে খোঁজ নিয়ে। গত সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সকালবেলা ১৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। পরে সিটি করপোরেশনের বাজার অভিযানের পর প্রতিটি মুরগির দোকানে এই দাম লিখা হয় ১৪৫ টাকা করে। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা আনিস মিয়া বলেন, ‘মুরগির খাবারের দাম বাড়তি। এই কারণে প্রায় দেড় মাস ধরেই মুরগির দাম বেড়েছে। আর কমেনি।’ রমজানে এসে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে দেশি ও কক জাতের মুরগির দাম। ছোট আকারের এক হালি কক মুরগি রমজানের আগে ৬০০ টাকার মধ্যে মিললেও এখন দাম অন্তত ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।  দেশি জাতের একটি মুরগি রমজানের আগে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন পড়ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা। রমজানে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি রুই মাছ আগে কেজিপ্রতি ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়। বড় রুই আগে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন দাম ৩২০-৩৪০ টাকা। পাবদা ৩০০-৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৩০০-৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫০-৫০০, মলা ২৫০-৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি শিং ও মাগুর মাছ ৬০০-৬৫০ টাকা এবং চাষের মাছগুলো ৪০০-৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যেসব সরপুঁটি মাছ ১৩০-১৫০ টাকা কেজি দরে আগে বিক্রি হয়েছে সেগুলো এখন ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০-১১০ টাকার তেলাপিয়া এখন কেজি ১২০-১৩০ টাকা এবং কই ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। হাতিরপুল কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রমজানে মাছের সরবরাহ একটু কম। আবার চাহিদা বেশি। তাই দাম একটু বাড়তি।’ সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে মাছ কিনতে আসা এক ক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পাবদা মাছ কিনলাম। ৪০০ টাকা কেজি। এই মাছ আগে ছিল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × 1 =