ধামরাই থানার ওসি রিজাউল হক ও এস.আই জামালউদ্দিনের শেল্টারে অপহরণকারী বাচ্চু গ্যাংয়ের নির্যাতনের শিকার বাদি পালিয়ে বেড়াচ্ছে

0
1391

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সাভারের ধামরাই থানার ওসি রিজাউল হক ও পিবিআই এসআই জামাল উদ্দিনের শেল্টারে উজ্জল (১৪) কে অপহরনকারী চক্রের মুল হোতা বাচ্চু মিয়ার নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অপহরন মামলার বাদী মোঃ আক্কাস আলী। অপহরনকারী বাচ্চু মিয়া দেয়া প্রাননাশের হুমকি মাথায় নিয়ে আক্কাস আলী ওসির কোন সহযোগিতা পাচ্ছেনা বরং মামলার তদন্তকারী পিবিআই এস আই জামালউদ্দিন অপহরনকারী বাচ্চু মিয়ার কালো টাকায় নিজেকে বিক্রি করে মামলার বাদী মোঃ আক্কাস আলীর মেয়ের জামাই হারুন মিয়া (৩০) ও আত্মীয় আলতাফকে ধরে নিয়ে অমানবিক শাররিক নির্যাতন করে।

আক্কাস আলী নিত্যান্তই গরীব মানুষ। তাই ওসি রিজাউলের হকের অনৈতিক চাহিদা মেটাতে পারেনা। আর অপহরনকারী বাচ্চুর গডফাদার সিরাজ মাষ্টার অনেক টাকার মালিক। তাই বাচ্চু ও সিরাজ মাষ্টারের সাথে ওসি রিজাউল হকের মধুর মধুর সম্পর্ক। আক্কাস আলী তার একমাত্র ছেলে উজ্জলকে অপহরনকারী বাচ্চু গংয়ের নিকট অপহরনের ফাঁদে হারিয়ে এক বছর যাবৎ বিচার ও ছেলেকে ফিরে পাবার আশায় বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। আক্কাস আলী জানেনা বাচ্চু গং তার ছেলে ডেকে নিয়ে কি করেছে। মেরে ফেলেছে নাকি গুম করে রেখেছে। ছেলে হারিয়ে আক্কাস আলী থানায় গিয়ে ওসি রিজাউল হকের গালিগালাজ ও হুমকি দমকি ছাড়া গত এক বছরে আর কিছুই পায়নি। ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে আক্কাস আলী ও স্ত্রীর চোখের এখন শুকিয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ধামরাই উপজেলার বড় চন্দ্রাইল গ্রামের অতি দরিদ্র আক্কাস আলী। তার একমাত্র ছেলে সন্তান উজ্জল (১৪) অনেকটাই সহজ সরল। আক্কাস আলীর অর্থকড়ি কিছুই নেই, আছে শুধু মাথা গোজার একটুরা পৈত্তিক ভিটা। আর ঐটুকু জমির উপর নজর পড়েছে তার প্রতিবেশী আরেক আক্কাছ আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়ার। বাচ্চু মিয়া জমিটুকু গ্রাস করার জন্য সন্ধি করে তার গুরু সিরাজ মাষ্টার ও ওসি রিজাউল হকের সাথে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু সুত্র জানায় সিরাজ মাষ্টারের দরকার কিডনী, বাচ্চুর দরকার জমি আর ওসি রিজাউল হকের দরকার টাকা। তিনে মিলে টার্গেট করে গরীবের সন্তান উজ্জলকে। সুত্র জানায়, আসামী বাচ্চ (৪০), আক্কাস আলীর ছেলে উজ্জল (১৪) কে বাড়ী থেকে রংয়ের কাজের কথা বলে পার্শ্ববতী সিরাজ মাষ্টারের বাড়িতে নিয়ে যায়। উজ্জলের মা উজালা বেগম ওই দিন বেলা ১২ টার সময় বাচ্চু মিয়ার মোবাইলে ফোন করে উজ্জল কোথায় আছে জানতে চাইলে বাচ্চু তাকে জানায় উজ্জল তার কাছে নেই। এতে সে স্ত্রী চিন্তিত হয়ে পড়ে। সাথে সাথে সে তার স্বামীকে ছেলে উজ্জলের ব্যাপারে জানায়। তারা উভয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারা অন্যান্য আত্মীয় স্বজনকে সাথে সবাই নিয়ে মিলে উজ্জলকে অনেক খোজাখুজি করে কোথায় না পেয়ে পরের দিন ধামরাই থানায় একটি জিডি করি যার নং-১২৭৪। কিন্তু থানার ওসি রিজাউল হক কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করে বরং উজ্জলের বাবা আক্কাস আলীকে ভয়ভীতি মুলক হুমকি দমকি দিয়ে কালক্ষেপন করেত থাকে। ওসি রিজাউল হক উজ্জলের বাবা আক্কাস আলীকে কোন পাত্তাই দেয় না, বলে পরে আয়। আবার তাকে থানায়ও ঢুকতে দেয়া হয়না, কনসটেবলরা গালমন্দ করে, দমকি দিয়ে বের করে দেয়। এভাবে চলে যায় এক সপ্তাহ। অপহরনের সপ্তাহ খানেক পরে আসামী বাচ্চুর আত্মীয় আসমা আক্তার সুরভী বেগম আক্কাস আলীর স্ত্রী উজালা বেগমের অনুপস্থিতে তাদের ঘরে প্রবেশ। এসময় সুরভী ঘরে ঢুকে তাদের ছোট মেয়ে সামনে উজ্জলের জামা কাপড় খুজ বের করে প্যান্ট শার্ট নিয়ে যায়। ঘটনাটি আক্কাস আলী ও তার স্ত্রী ওসি রিজাউল হক সহ এলাকার লোকজনদের জানায়। কিন্তু ওসি কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে বিষয়টি মাদবরদের হাতে ছেড়ে দেয়। মাদবররা উজ্জলকে উদ্ধারের নামে করতে থাকে বিভিন্ন টালবাহানা। মাদবররা আক্কাস আলীকে বাচ্চুর নিকট থেকে টাকা পয়সা বিনিময়ে আপোষ মীমাংসা করার চাপ দিতে থাকে। এতে ১ মাস সময় কেটে যায়। এদিকে থানার ওসি রিজাউল হক উজ্জলকে খুজে বের করার কোন প্রকার সহযোগিতা বা পদক্ষেপ গ্রহন করেনা এবং অপহরন মামলা না নিয়ে আক্কাস আলীকে থানা থেকে বের করে দেয়। আক্কাস আলী ছেলের শোকে উপায়ন্ত না পেয়ে ৫/৩/১৭ ইং তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করে। মামলা নাম্বার ৭৫/২০১৭ ইং ধারা ৩৬৫/৩৪ দঃ বিঃ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ধামরাই থানাকে মামলা রজু করা নির্দেশ প্রদান করে। যার নং ১৪ তাং ১৪/০৩/২০১৭। মামলাটি পিবিআই এসআই জামাল উদ্দিনের নিকট তদন্তে দেয়া হলে এসআই জামাল উদ্দিন আক্কাস আলীর মেয়ের জামাই হারুন মিয়া (৩০) ও আত্মীয় আলতাফকে ধরে নিয়ে হাত পা বেধে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে। এঘটনার কিছুদিন পরে ঈদের দিন আক্কাস আলী স্ত্রী ছেলে উজ্জলের জন্য কান্নাকাটি করতে থাকলে আসামী বাচ্চু মিয়া, শওকত আলী (৪২), আসমা আক্তার সুরভী বেগম (৩২), সালমা বেগম (২৪), আছমা বেগম (৩০), রাজু ওরফে রাইজু (২১) একযোগে তার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে হত্যার চেষ্টা করে। এঘটনায় আক্কাস আলী বিজ্ঞ আদালতে আরও একটি মামলা করে। যার নং ২১৪/২০১৭। এতে আসামীরা আরো বেশী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাকে প্রানে মেরে ফেরার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই সে বাড়ীতে দিন যাপন করতে পারেনা। আক্কাস আলীকে যেকোন সময় হত্যা করা হবে বলে আতংক ছড়িয়েছে। এদিকে একটি সুত্রে জানা গেছে, উজ্জলকে হত্যা করে তার কিডনী খুলে নিয়ে সিরাজ মাষ্টারের আত্মীয়ের কিডনীতে ট্রান্সফার করা হয়েছে। সিরাজ মাষ্টার অনেক টাকার মালিক। তাই সে আমার মতো গরীবের ছেলেকে টার্গেট করে বাচ্চুকে দিয়ে এঘটনা ঘটিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা সিরাজ মাষ্টারের গাড়িতে উজ্জলকে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখেছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

14 − 9 =