চট্টগ্রামের অন্ততঃ ২০ কারখানায় এখনো এপ্রিল মাসের বেতন পাননি শ্রমিকরা

0
868

কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আগেই আশ্বস্ত করেছিল বুধবার এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে। কিন্তু আশা নিয়ে সকালে এসে দেখেন কারখানায় তালা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা সড়কে এসে অবস্থান নেন। বুধবার চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন ঈদগাঁ এলাকার তৈয়বা ফ্যাশন নামে তৈরি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। এপ্রিল মাসের বেতন নিয়েই বুধবার চট্টগ্রামের আরও দুটি কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের অন্ততঃ ২০ কারখানায় এখনো এপ্রিল মাসের বেতন পাননি শ্রমিকরা।

শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তৈয়বা ফ্যাশন গার্মেন্ট লিমিটেডে এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। সাব কন্ট্রাকে কাজ করা ওই কারখানার ২২০ শ্রমিককে গতকাল বুধবার বেতন পরিশোধ করা হবে বলে কারখানার মালিক রুস্তম আলী আশ্বস্ত করেন। কিন্তু গতকাল সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এসে দেখেন কারখানায় তালা মেরে মালিক লাপাত্তা। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সকাল ৯টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাঙ্ক রোড (ডি টি রোড) অবরোধ করেন। ফলে রাস্তার দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় অফিসগামী মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়ে। পরে শিল্প পুলিশ ও ডবলমুরিং থানা পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে আশ্বস্ত করে আধা ঘণ্টা পর সড়ক থেকে সরিয়ে কারখানায় ফিরিয়ে নেয়। এ সময় পুলিশের আরেকটি দল কারখানা মালিক রুস্তম আলীকে তাঁর পাহাড়তলীর বাসা থেকে কারখানায় নিয়ে আসেন। পরে শ্রমিক প্রতিনিধি, ভবনের মালিক ও পুলিশের উপস্থিতিতে কারখানা মালিক আগামী ৪ জুন এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন বলে জানান শিল্প পুলিশের উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ মিয়া। এদিকে নগরের বালুচড়া এলাকায় সাদমুসা গ্রুপের কারখানায় প্রায় ২ হাজার ৮০০ শ্রমিক এপ্রিল মাসের বেতনের দাবিতে কাজ না করে কারখানায় অবস্থান নেন। গতকাল সকালে এ কারখানায় শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার তারিখ ঘোষণা করেছিল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা বেতন বুঝে পাননি। এছাড়া চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় অবস্থিত সানম্যান গ্রুপের শিরিনা গার্মেন্টসে বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেছেন। শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মোহাম্মদ মমতাজ জানান, আগেরদিন মঙ্গলবার এক হাজার শ্রমিকের এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকরা ঈদের আগে মে মাসের বেতন পাওয়া নিয়ে সন্দিহান। মালিক কর্তৃপক্ষের কাছে মে মাসের বেতন পাওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস না পেয়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন। শ্রম মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মে মাসের বেতন ১০ জুন এবং ঈদ উৎসব ভাতা ১৪ জুনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামে এখনো অন্ততঃ ২০টি কারখানায় এপ্রিল মাসের বেতনই পরিশোধ করা হয়নি। অতীতে বেতন-ভাতা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে এমন ১০২ কারখানাকে ‘দুর্বল কারখানা’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে শিল্প পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। গতকাল ঝামেলা হওয়া কারখানাগুলো ওই দুর্বল কারখানাগুলোর মধ্যেই পড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − thirteen =