ইফতারে ফালুদা হতে পারে উত্কৃষ্ট খাবার

12
1236

রোজাদারের ইফতার পর্বে চাই পুষ্টিকর ও বিশুদ্ধ খাবার। তবে ইফতারি হিসেবে আমরা যেসব খাদ্য বেছে নেই তা অনেকাংশেই সেভাবে পুষ্টির জোগান দিতে পারে না। আবার সারা দিন রোজা রেখে ইফতার পর্বে অনেকে ভাজা-পোড়া খেতে পছন্দ করে না। কারণ তাতে এসিডিটির ঝক্কি সামলাতে হয়। সে ক্ষেত্রে ইফতারে ফালুদা হতে পারে উত্কৃষ্ট খাবার। অতিরিক্ত গরমে ফালুদা যেমন আরামদায়ক, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মত।

একই সঙ্গে বেশ সুস্বাদুও। ইফতারে এক গ্লাস ফালুদা নিমেষেই ফিরিয়ে আনে কর্মশক্তি, শরীরকে করে তোলে সতেজ ও তরতাজা। ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় ফালুদা তৈরি ও বিক্রি হয়। ঝটপট ঘরেও তৈরি করা যায় সুস্বাদু ফালুদা। ফালুদা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় সাগুদানা, দই, ঘন দুধ, চিনি, সিদ্ধ করা নুডলস, পেস্তা বাদাম কুচি, কাজু বাদাম, স্ট্রবেরি, আম, কলা, আপেল, আঙুর, বেদানা, খেজুর, জেলি, বরফ কুচি ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর উপাদান। ফালুদায় রয়েছে দুধ, নুডলস, চিনিসহ নানা ফল। ফলে এ খাবারে সরাসরি পাওয়া যায় প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। এ ছাড়া ফালুদায় ব্যবহার করা হয় বাদাম, পেস্তাসহ বিভিন্ন ফল। তাতে শরীরে মেলে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও উপকারী আঁশ। সব মিলিয়ে ফালুদা পুষ্টিকর এক ইফতার মেন্যু। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ইফতারির বাজার ঘুরে দেখা যায়, নানা আকারের ফুড গ্রেডেড বক্সেও ফালুদা বিক্রি হচ্ছে। তা কিনে বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এর স্বাদ উপভোগ করা যায়। বিভিন্ন ধরনের ফালুদা তৈরি হয়। ফ্রুট ফালুদার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। হোটেল ও মান ভেদে ফালুদার দামেরও তারতম্য রয়েছে। তবে সবচেয়ে উত্তম হলো ঘরে তৈরি করা ফালুদা। রাজধানীর পুরান ঢাকা, গুলশান, বনানীর নানা রেস্তোরাঁয় অতি উত্কৃষ্ট মানের ফালুদা তৈরি করা হয়। এখানকার বেশির ভাগ ফালুদার সঙ্গে আইসক্রিম দেওয়া হয়। সেটি ফালুদার স্বাদ আরো বাড়িয়ে দেয়। বেইলি রোডের ক্যাপিটালের ইফতার বাজারে ছোট-বড় দুই ধরনের বাটিতে ফালুদা পাওয়া যায়। ছোট বাটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা এবং বড় বাটি ৩০০ টাকা। স্টার হোটেল অ্যান্ড কাবাবের রেস্টুরেন্টগুলোতেও ফালুদা বিক্রি হচ্ছে। এখানকার ফালুদার দাম পড়বে ১০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। রাজধানীর হোটেল আল রাজ্জাকের ফালুদার বেশ নামডাক আছে। অন্যান্য হোটেলের মতো এখানেও রোজায় ফালুদা বিক্রি হয় প্লাস্টিকের বিভিন্ন কনটেইনারে। সবচেয়ে ছোটটির দাম পড়বে ১০০ টাকা। আর সবচেয়ে বড়টির দাম ৫০০ টাকা। পুরান ঢাকার লালবাগের রয়েল, মিরপুরের প্রিন্স, মালিবাগের আবুল হোটেল, মোহাম্মদপুরের নবাবী ভোজেও উত্কৃষ্ট মানের ফালুদা বিক্রি হয়। দাম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। বেইলি রোডের আলিফ জুস বারের কর্ণধার আলিম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে বিভিন্ন টাটকা ফল দিয়ে ফালুদা তৈরি হয়। গরমের সময়ে বরাবরই ফালুদার চাহিদা বেশি থাকে। আর রমজান মাসে চাহিদাটা আরো বেড়ে যায়। আমাদের এখানে বড় আকারের এক গ্লাস ফালুদার দাম ১৬০ টাকা। আর ছোট আকারের এক গ্লাস ফালুদা বিক্রি হয় ১০০ টাকা করে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আনোয়ার ভুঁইয়া বলেন, ‘ফালুদা উত্কৃষ্ট খাবার। তাতে থাকে নানা উপকারী খাবারের মিশ্রণ। ফালুদায় থাকে দুধ। দুধের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুত করে। মানবদেহের জন্য দরকারি প্রোটিন দুধ সরবরাহ করে। এ ছাড়া এতে ব্যবহৃত হয় নুডলস, চিনি, রোজ সিরাপ, নানা জাতের বাদাম ও ফল। এই গরমে ফালুদা একদিকে যেমন শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করবে, তেমনি ইফতারিতে যোগ করবে বাড়তি আনন্দ।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 3 =