গোড়াই হাইওয়ে থানার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের দায়সারা তদন্তে চাঁদাবাজী ও ঘুষ-দূর্নীতিতে আরও বেপরোয়া!

0
1426

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি দৈনিক মুক্ত খবর সহ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় গোড়াই হাইওয়ে থানার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদের প্রেক্ষিতে তদন্ত করেন গাড়ীপুর রিজিওনের হাইওয়ের এএসপি আলাউদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে এএসপি আলাউদ্দিন হাইওয়ে থানার অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ঘটনার স্থানে না গিয়ে কারও সাক্ষাতকার না নিয়ে এমনকি দায়িত্বশীল কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত না করেই দায়সারা একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট। যে প্রেক্ষিতে ওই গোড়াই হাইওয়ে থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘুষ-দূর্নীতি যেন থামছেই না। সম্প্রতি থানার ওসি আবু কাউছার নতুন যোগদান করলেও পরিবহন সেক্টর হতে মাসিক মাসোয়ারা এবং বিভিন্ন চাঁদাবাজি স্পট থেকে সুকৌশলে অনৈতিক কর্মকান্ড চলছেই।

সঠিক তদন্তের স্বার্থে ওই সকল উত্থাপিত অভিযোগকারী পুলিশদের মোবাইলের বিকাশ নাম্বার, ডাচ-বাংলা নাম্বারে একাধিকবার রহস্যজনক টাকা লেনদেনের বিষয়টি তদন্ত না করার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি বলে একটি মহল দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও মহাসড়ক সহ গোড়াই সখিপুর রোডে চলাচলরত সিএনজি, লেগুনা, বাস, ট্রাক, লোকাল ট্রাকসহ, কার্গো ও বিভিন্ন কোম্পানীর গাড়ী হতে টার্গেট মামলা ও যানজট নিরসনের নামে পরিবহনের গতিরোধ করে নানা কৌশলে চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্য অভিযোগের স্থানীয় বাসীদের নিকট থেকে তদন্তের স্বার্থে সাক্ষাতকার নেওয়ার কথা থাকলেও ভূক্তভোগীদের নিকট থেকে কোন সাক্ষাতকার নেওয়া হয়নি। সঠিক তদন্তের স্বার্থে সরেজমিনে ওই গোড়াই হাইওয়ে থানার মোড়ে চাঁদাবাজির দৃশ্য প্রকাশ্যে ঘটলেও তদন্ত কর্মকর্তা স্বশরীরে গিয়ে তদন্ত করেননি। ডিউটিরত অফিসার সঙ্গীয় কনস্টেবলসহ পাবলিককে দিয়ে পরিবহণ থেকে প্রতিনিয়তই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে। অথচ ওই তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত তো দূরে থাক তার প্রতিবেদনে দূর্নীতির কোন চিত্রই তুলে ধরেননি। গোড়াই এলাকার বিভিন্ন পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনের একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে চাঁদাবাজির চিত্র প্রমাণ করার চেষ্টা না করে অফিসে বসেই দায়সারা প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে একটি মহল জানিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিদিন ভোর ৬ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত আবার ২টা থেকে রাত ১০ টা অবধি পর্যন্ত এরা নিরব চাঁদাবাজি দৃশ্য অহরহই চোখে পড়ার মত। তাও তার প্রতিবেদনে কিছুই উল্লেখ করেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোড়াই স্ট্যান্ডের একাধিক ব্যক্তি জানান, সিদ্দিক ও শহিদুল নামক (ছদ্ম নাম) দুই পাবলিকের দ্বারা এস আই ফজলুর নেতৃত্বে অফিসার ও কনস্টেবল গণসহ ডিউটি করতে এসে যেভাবে চাঁদা তোলে তাতে স্থানীয় লোকজন তাদের ভয়ে ভীত স্বন্ত্রস্ত থাকে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি তদন্ত প্রতিবেদনে সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা তা করেননি। চাঁদা আদায়কৃত টাকা পুলিশের অনেক এএসআই ও কনস্টেবলদের মধ্যে ভাগ-বন্টন না হলেও বঞ্চিত পুলিশদের নিকট থেকে কোন তথ্যই জানেননি তদন্ত কর্মকর্তা সঠিক তদন্তের স্বার্থে। সখিপুর টু গোড়াই ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে গভীর রাতে শাল, গজারি ও সেগুন গাছ ও বল্লী পাচার হয়। গোড়াই মোড়ে আসতেই এস আই ফজলুকে চাঁদা আদায় করেন ২৩’শত টাকা। সখিপুর-মির্জাপুর গোড়াইয়ের হোসেন মার্কেটসহ হাটুভাঙ্গা গোড়াইতে ইটের ভাটা আছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি। এসব ইটের ভাটায় ইট ও মাটি বহনের জন্য মাহেন্দ্র ট্রলি আছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি। প্রতিটি ইটের ট্রলি থেকে হাইওয়ে গোড়াই থানার নামে আদায় হয় ৫ হাজার টাকা। কালিয়াকৈর মালিক সমিতির ব্যানারে ড্রাম ট্রাক, লোকাল ট্রাক সহ যত গাড়ী চলে তাদের নিকট থেকে প্রতিমাসে চাঁদা তোলেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। রাস্তার পাশে মাছের ট্রাকের গাড়ীতে পানির বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে চাঁদা আদায় হয় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। খুব ভোরে মাছ ও মুরগীর গাড়ী থেকে চাঁদা তোলেন গাড়ী প্রতি ৫’শত টাকা। উত্তরবঙ্গ থেকে লোকাল বাস চলাচল করে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি। প্রতি গাড়ীর ব্যানার হতে চাঁদা তোলা হয় মাসের প্রথম সপ্তাহেই ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। বহিরাগত ট্রাক ও লোডকৃত ট্রাক গোড়াই থানার সামনে আসা মাত্র কিংবা মহাসড়কে দেখা মাত্র মামলা, রিকুজিশন ও রেকারের ভয় দেখিয়ে ট্রাক প্রতি আদায় হয় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। রাস্তার বাস অথবা ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন দূর্ঘটনায় বিকলাঙ্গ হলেই রেকার বিলের নামে আদায় করা হয় ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা। অথচ রেকার বিলে এ টাকা জমা হয় না। আতœসাতের অভিযোগ তদন্ত করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। উপরোক্ত তথ্যগুলো সঠিকভাবে তদন্তের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে দূর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের রক্ষা করার জন্য দায়সারা ভিত্তিহীন একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছেন। সঠিক তদন্ত করে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী পরিবহন মালিক ও শ্রমিকগণ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 − 3 =