আলোচিত সন্ত্রাসবান্ধব মাদকবান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদের “প্রাইজপোষ্টিং” এখন যাত্রাবাড়ী থানার ও’সি

0
850

বেরাইদ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রগুলো কোথায়? মাদকবান্ধব হয়েও ইয়াবার বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে জন্ম দিচ্ছেন হাস্যরসের
বিশেষ প্রতিবেদক ঃ
কাজী ওয়াজেদ পুলিশ বাহিনীকে কলঙ্কিত করার অন্যতম খলনায়ক। বিগত দিনে অগণিত অনৈতিক কর্মকান্ড করে পুলিশকে বিতর্কিত করেছেন। গণমাধ্যমসহ সাধারণ মানুষের মাঝে তিনি সন্ত্রাসবান্ধব মাদকবান্ধব হিসেবেই বিবেচিত। ডিএমপির বিভিন্ন থানায় তিনি দায়িত্ব পালনকালে হাজারো অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থেকেছেন। বারবার হয়েছেন সাময়ীক বরখাস্ত। আবার অলৌকিক ক্ষমতা বলে আবার ফিরেছেন স্বপদে। সম্প্রতি তাকে প্রাইজপোষ্টিং হিসেবে বাড্ডা থানা থেকে যাত্রাবাড়ি থানায় বদলী করা হয়েছে। তিনি যাত্রাবাড়ি থানায় যোগদান করার পর থানা এলাকার সচেতন মানুষের মাঝে আতঙ্কভাব বিরাজ করছে। তারা মনে করছেন এলাকাটি অচিরেই অশান্ত জনপদে পরিণত হবে। তবে তার এই যোগদানকে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আর মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে আনান্দ বার্তা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

কাজী ওয়াজেদ বাড্ডা থানায় দায়িত্বকালীন সময়ের শেষদিকে আলোচিত কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে। খুনের প্রতিটি ঘটনায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তিনি একটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধারে আন্তরিকতা দেখাননি। আলোচিত বেরাইদ হত্যাকান্ড, ডিশব্যবসায়ী হত্যাকান্ডের পূর্বপরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি পূর্ব থেকেই অজ্ঞাত ছিলেন না, এমন অভিযোগ উঠে সে সময়। তিনি চিহ্নিত অস্ত্রধারীদের প্রত্যেককেই পূর্ব থেকেই চিনতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ফলে তাদেরকে নিরাপত্তা বিধান করা হয়। এমনকি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধারে তিনি তৎপর হননি।
ডিএমপির থানাগুলোর মধ্যে বাড্ডা থানা হাজারো আশ্চর্যবোধক চিহ্নের জন্ম দিয়ে গেছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ। বিগত প্রায় দু’বছর ধরে উক্ত থানা এলাকায় তারই পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটেছে অগণিত ঘটণা। তিনি থানা এলাকাটিকে এক আতঙ্কিত জনপদে পরিণত করে গেছেন। তারই আমলে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে মাঝে মধ্যেই প্রকম্পিত হয়েছে বাড্ডার মাটি। জনপদটিকে তিনি অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করে গেলেও এলাকাবাসি ভুগেছেন নরকযন্ত্রণায়। কাজী ওয়াজেদ উক্ত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যতদিন কর্মরত ছিলেন ততদিন এই নরকযন্ত্রণা বাড্ডাবাসীর জন্য সাধারণ নিয়তি হিসেবেই বিবেচনায় নিতে বাধ্য হন। এমনটিই মনের মধ্যে স্থায়ীভাবে নিয়েই বাড্ডা থানা এলাকার মানুষ এতদিন দিনযাপন করেছেন। এতদিন মানুষের সাধারণ মৃত্যুর নিশ্চয়তা ছিলো না। অস্ত্রের প্রকাশ্য মহড়া, প্রকাশ্যেই হত্যাকা-, ছিনতাই, রাহাজানি, মাদকের অপব্যবহার আর নারী ব্যবসা এমন পর্যায়ে পৌছেছিলো, তাতে সভ্যতা উপহাস করেছে। মনুষ্য জাতিকে কালিমালিপ্ত করেছে। বলতে হয়, সে সময় এক ওয়াজেদেই এতকিছু। বাড্ডা এলাকার সাধারণ ও সভ্য মানুষগুলো অন্ধকার জগতের বাসিন্দাদের অমানবিকতা তথা পশুত্বের কাছে অসহায় ছিলেন। কারণ, অন্ধকার জগতের বাসিন্দাদের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন আইনের রক্ষক তথা থানার স্বয়ং সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ!
বাড্ডা থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াজেদের অনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে পুলিশের উর্দ্ধতন মহলে না জানার কিছুই নেই। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত থেকে অনেক অবাঞ্চিত কাহিনীর জন্ম দিয়েছেন। পুলিশ বাহিনীকে অপমানিত করেছেন, কলঙ্কিত করেছেন, জনগণের মাঝে পুলিশের ভাবমূর্তী বিনষ্ট করেছেন। যা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। তার অনৈতিক কর্মকান্ডের পাহাড় হিমালয়সম হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে হুংকার ছুড়লেও পরবর্তিতে রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকাকেই বেছে নেন। তার অনৈতিকতার জন্য একাধিকবার সাময়িক বরখান্ত করা হলেও পরবর্তিতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে পাক-পবিত্র করে আবার স্বপদে তথা প্রাইজপোষ্টিং দেওয়া হয়। এই রহস্য ভেদ করা গণমাধ্যমগুলোর সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি যে ম্যানেজপটু তা কমবেশী সবার জানা। ধারণা করা যায়, উর্দ্ধতনদের ম্যানেজ করেই তিনি নিজেকে সাধুবেসে রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। বললে এতটুকুও কটুক্তি হবে না যে, পুলিশের এই কর্মকর্তা একজন ময়ুরপুচ্ছাদিত কাক। অর্থাৎ তিনি পুলিশের পবিত্র পোষাকে আবৃত আপাদমস্তক একজন অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ উক্ত থানা এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। গণমাধ্যমেও বহুবার তা প্রকাশিত হয়েছে। পুলিশের উর্দ্ধতন মহলেও বিষয়টি আলোচনায় থাকা অস্বাভাবিক নয়। তার বিরুদ্ধে পাহাড়সম অপরাধ থাকার পরও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নীরবতা জনমনে নানান পশ্নের জন্ম দিয়েছে বারবার। এদিকে বাড্ডা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ উক্ত থানা এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন বলে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগ উঠে। ফলে সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানের তেমন একটা প্রভাব তার সময়কালে বাড্ডা এলাকায় পড়েনি। তার আমলে ধরা পড়েনি উক্ত এলাকার একটিও চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। কাজী ওয়াজেদের এই বিতর্কিত ভূমিকায় সরকারের মাদক বিরোধী অভিযান সফলতার মুখ না দেখার আশঙ্কা তৈরী হয়েছিলো বাড্ডা এলাকায়। সরকারের চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে যেসকল সংস্থাগুলো তৎপর সেই সংস্থাগুলো প্রকৃত তদন্ত চালালে বাড্ডা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদের মাদকসম্পৃক্ততার প্রমান মিলবে এমনই অভিযোগ উক্ত থানা এলাকার অনেকেরই। তবে নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা নাম-পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তবে তারা সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানের সফলতা চান। যদিও বাড্ডা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ সরাসরি মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন তারপরও তিনি নিজেেেক ধোয়া তুলশিপাতা হিসেবে প্রচারে ব্যস্ত থেকেছেন। বাস্তবে তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করলেও ফেসবুকে মাদকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে তিনি হাস্যরসের জন্ম দিচ্ছেন।
আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সম্প্রতি বদলী করা হয়েছে যাত্রাবাড়ি থানায়। উক্ত থানাটিকে রাজধানীতে মাদক প্রবেশের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সেই থানায় আলোচিত কাজী ওয়াজেদকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়াকে অনেকেই “প্রাইজপোষ্টিং” হিসেবেই দেখছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 + eight =