দশমিনায় ভরা মৌসুমেও ইলিশ শুন্য নদী ক্রয়ক্ষমতা সাধারনের নাগালের বাহিরে

0
615

দশমিনা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা এবং এর আশ পাশের দীপাঞ্চলে ভরা মৌসুমেও রয়েছে ইলিশ শুন্য দনী,দাবী জেলেদের। অপর দদিকে কমছে না ইলিশের দাম,দাবী সাধারন ক্রেতাদের। তাই ইলিশের দাম নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন স্থানীয় ক্রেতারা। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় বড় ইলিশের পাইকারি ও খুচরা বাজার গুলোতে মৎস্য আড়ৎ সমুহে গিয়ে ইলিশের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে। গাড়ী  ও ট্রলার থেকে নামানো টাটকা ইলিশ পাওয়া যায় উপজেলার এমন সব বাজারে গিয়েও চোখে পড়ে একই চিত্র। একটু দামাদামি করে পাইকারদের পাশাপাশি খুচরা বিক্রেতারাও কিনে নেন ইলিশ। টাটকা ইলিশের স্বাদ নিতে, মাছ কিনতে আসা অনেক ভোজন বিলাসীকে দামের কারণে ফিরে যেতে হচ্ছে,রিক্ত হস্তে। মোঃ শামীম খা নামের এক ক্রেতা বলেন, ইলিশ  কিনতে এসে দাম শুনে ফিরে যেতে যাচ্ছি।

 

এতচড়া দামে সাধারণ মানুষের পক্ষে ইলিশ কেনা সম্ভব  নয়। মনির হোসেন ও  নুর ইসলাম নামে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশের এখন ভরা মৌসুম। এখনও যদি চড়া দামে কিনতে হয়, তাহলে তো খুবই দুঃখজনক। আমাদের এ এলাকায় আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এই চার মাস ইলিশ ধরার উপযুক্ত মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখন শ্রাবণ মাস চললেও ইলিশ মিলছে খুবই কম। আড়ৎদ্বাররা জানান, উপকূলীয় এলাকায় এখন আর আগের মতো ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।ভরা মৌসুম চললেও জেলেদের জালে ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না। তাদের দাবি, চাহিদার তুলনায় চলতি মৌসুমে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় মাছ কিনতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। ইলিশের মৌসুম চললেও সরবরাহ কম। যেকারণে দাম বেশি। গদি মালিক গাজী মজিবুর রহমান, বাশবাড়ীয়ার মিরাজ খান,কালারানী বাজারের গাজী খোকনসহ তারা এ প্রতিনিধিকে জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাজারে বড় আকারের ইলিশ আসছেনা। আর দামও খুব বেশি। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের পাইকারি মূল্য ১৮শ থেকে১৯শ টাকা।  আর খুচরা ১৯শ থেকে ২ হাজার টাকা। এক কেজি সাইজের ইলিশের পাইকারি দাম ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা, আর খুচরাবাজারে ১৬শ থেকে ১৭শ টাকা। ৫শ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম পাইকারি ৭শ থেকে ৮শটাকা, আর খুচরা ৮শ থেকে ৯শ টাকা।  ৫শগ্রামের সাইজের নিচের ইলিশের পাইকারি দাম৬শ থেকে ৭শ টাকা ও ৮শ থেকে ৯শ গ্রামের ইলিশের দাম ১২শ থেকে ১৪শ টাকা। উপজেলা জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃশাহ আলম খা বলেন, এ বছর ইলিশের সরবরাহ ভালো ছিল না । কিন্তু এ উপজেলা থেকে জেলেরা মাছ শিকার ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজে চলে গেছে,তাই  কমে যাচ্ছে জেলের সংখ্যা।২৮ জুলাইয়ের পর তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরার  অনুমতি দেবে সরকার। তখন মাছের সরবরাহ বাড়তে পারে বলে মনে হয়। আর তখন দাম ও কমে যেতে পারে বলে আশা করি। তবে কি কারনে নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছেনা ইলিশ?  এমন প্রশ্নের জবাবে নদী তীরবর্তি সাধারন মানুষের বক্তব্য ছিল অনেকটা আক্ষেপের সুরে। তাদের ভাষায়,জেলেদের খাম খেয়লীপনাই এ জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী। কারন,সরকার আমাদের সুখের কথা চিন্তা করেই নদীতে বাঁধা জাল,বেড় জাল,বেহুন্দী জাল এবং সবচেয়ে বেশী ক্ষতি কারক কারেন্ট জাল নদীতে ফালাইতে নিষেধ করলেও, জেলেরা মুলতঃ সেই জালগুলোই বেশী ব্যবহার করেছে। তাদের মতে,বাঁধা জালে চাপিলা নামের যে ছোট ইলিশের পোনাগুলো ধরা পরে,দেখা গেছে সেগুলোই মাত্র এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ঝাটকা ইলিশ হয়। আবার এই ঝাটকা গুলোই মাত্র দুই মাসের মধ্যে বড় ইলিশে পরিনত হচ্ছে। প্রশাসন কি এ ব্যাপারে নজরদারী করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন,মৎস্য অফিসার ও কোস্ট গার্ড মাঝে মাঝে অভিযান চালান,তবে আরো বেশি বেশি অভিযান পরিচালনা করলে ভাল হবে। তবে এ কাজে অনেক নেতারাও জড়িত।   তারাও জেলেদের নদীতে নামতে অনেক ক্ষেত্রে সাহস যোগায় বলেও শুনাযায়। ঐ সব সাধারন মানুষ সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইসরাইল হোসেনকে স্মরন করে বলেন, তার মত অফিসার উপকুলের প্রত্যেক উপজেলায় থাকলে, কোন সিজনেই ইলিশ কিংবা কোন মাছের আকাল দেখা দিতনা। আপনারা পাড়লে তারে আবার আনার ব্যবস্থা করেন। দশমিনা উপজেলা মৎস্য অফিসার মাহাবুব আলম তালুকদার বলেন,আমার লোকবল কম,তার তুলনায় এলাকা অনেক বড়,তাই প্রায়ই কোস্টগার্ড নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে আসছি। দশমিনা হাজির হাটের নৌ পুলিশ ফাঁরি স্থাপনের জন্য আমার ভূমিকাছিল সবচেয়ে বেশী। তিনি আক্ষেপ করে বলেন,আমি জেলেদের কোন সুযোগ দেইনা বলেইতো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × 1 =