প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সকল ফ্যাসিস্ট ও নাৎসী নেতাদের ‘ওভারটেক’ করেছেন

1
562

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সকল ফ্যাসিস্ট ও নাৎসী নেতাদের ‘ওভারটেক’ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এখন শুধু ছাত্ররাই নয়, ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না আটক ও জুলুমের করালগ্রাস থেকে।

গোয়েন্দা পুলিশ একর পর এক ছাত্রী আটকের লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্ন্াহার হলের সামনে থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তাসনিম ইমিকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কয়েক ঘন্টা নির্মম প্রহর গুনতে হয়। ইমির আটকের ১২ ঘন্টা পর ইডেন কলেজের কোটা আন্দোলনের আরেক নেত্রী লুৎফুন্নাহার লুমাকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এই জালিম সরকারের হাত থেকে বাঁচতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রী ও সমর্থনকারী নারীরাও রেহাই পাচ্ছে না। এই সকল ঘটনায় জাতির সম্ভ্রম ধুলায় লুটিয়ে গেলেও সরকারের চন্ডমুর্তির কোন পরিবর্তন হয়নি। ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীদের গ্রেপ্তার করে সভ্যতার শেষ রশ্মিটুকু নিভিয়ে দিল সরকার। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশু-কিশোরদের চলমান আন্দোলনে সামাজিক গণমাধ্যমে উস্কানী ও সহিংসতার মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন থানায় ৫১টি মামলায় প্রায় শ’খানেক ছাত্রছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে ওই মামলাগুলোতে আসামী করা হয়েছে। কোমলমতি শিশু-কিশোরদের আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারা মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সমাজের অগ্রগণ্য মানুষরাও বিসি¥ত হয়েছে তারা যা পারেনি শিশু-কিশোররা চোখে আঙুল দিয়ে সেটা করে দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শিশু-কিশোররা পথ দেখিয়েছে। কিন্তু এখন আন্দোলনরত শিশু-কিশোররা যে পথ দেখছে তাতে তারা প্রতিদিনই শিহরিত হয়ে উঠছে। তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, রিমান্ডের হাড়-হীন করা অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে, এরপর পাঠানো হচ্ছে জেলখানায়। মুখে যাই বলুন, সরকার প্রধান শিশু-কিশোরদের সাথে নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছেন। অভিভাবকরা বাচ্চাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত, ভীত, শিহরিত। এসময় তিনি শিশু-কিশোরদের আন্দোলনে সরকারের বর্বরোতার নিন্দা জানিয়ে তাদের মিথ্যা মামলা ও রিমান্ড প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি জানান। রিজভী আহমেদ বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের অন্যায় আর জুলুমের শিকার হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে সকল অধিকার থেকে দুরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এমননি অসুস্থ খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তাঁর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। উন্নতমানের যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তাঁর সুচিকিৎসার অধিকারও দেয়া হচ্ছেনা। তার বিপুল জনপ্রিয়তাই এই জনসমর্থনহীন সরকার প্রধানের চক্ষূশুল। তাই প্রতিহিংসার জ্বালা মিটাতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে বানোয়াট অসত্য মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। সাজা দিয়ে বন্দী করা হয়েছে দেশনেত্রীকে। বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে। বাংলাদেশ এখন জুলুমের গ্যাসচেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। দেশের সর্বত্র রক্ত ঝরছে। সারাদেশে জনপদের পর জনপদে অসংখ্য মিথ্যা মামলা এবং সেই মামলায় হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে আসামী করে গ্রেপ্তার করা এবং অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 − six =