মিয়ানমার থেকে রেকর্ডসংখ্যক গবাদি পশু আমদানিতে স্বস্তি ফিরেছে কোরবানির হাটে

0
663

নানা শঙ্কার মাঝেও শেষ মুহূর্তে মিয়ানমার থেকে রেকর্ডসংখ্যক গবাদি পশু আমদানিতে স্বস্তি ফিরেছে কোরবানির হাটে। মিয়ানমারের রাখাইনে বিরাজমান পরিস্থিতিতে বড় শঙ্কা ছিল অন্য বছরের মতো এবার পশু আমদানি নিয়ে। কিন্তু সেই শঙ্কা আপাতত কেটে গেছে। ব্যবসায়ীরা আগের মতো ট্রলারে ট্রলারে আমদানি করছেন পশু। চলতি মাসের গত ১৭ দিনে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়েছে ৯ হাজার পশু।

তবে গত ৫/৬ দিন ধরে বৈরি আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডরে গবাদি পশু নিয়ে কোনো ট্রলার ভিড়তে পারেনি। এতে পশু আমদানিকারকরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন পশুর হাটের ব্যবসায়ীরাও অনেকটা শঙ্কায় ছিলেন। এমনকি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পশুর হাটে রীতিমতো পশু সংকটেরও শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। বৈরি হাওয়া কেটে যাওয়ার সাথে সাথেই তেমন আশঙ্কাও আপাতত কেটে গেছে। গত কদিন ধরে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডরে গবাদিপশু আমদানি বেশ বেড়েছে। গত শুক্রবার থেকে শাহপরীর দ্বীপ করিডরে স্থানীয় পশু আমদানিকারকদের কাছে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে কোরবানির পশু। পশু আমদানি বাড়াতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন আমদানিকারক ও গবাদি পশু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ছিল, রোহিঙ্গাদের জন্য ১০ হাজার গরু কেনা হলে বাজারে গরুর দাম বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য যে সংখ্যক গরু দরকার সেই সংখ্যক গরু রাখাইন থেকে এসে যাওয়ায় উদ্বেগও কেটে গেছে। টেকনাফ শুল্ক স্টেশন সূত্রমতে, গত শুক্রবার ও শনিবার দুদিনে শাহপরীর দ্বীপ করিডরে মিয়ানমার থেকে এসেছে  ৩ হাজার ২৯৯ গবাদি পশু। এর মধ্যে গত শুক্রবার ১১ ট্রলারে ১ হাজার ১২৯টি এবং শনিবার বিকেল পর্যন্ত আরো ১৩ ট্রলারে এসেছে ২ হাজার ১৭০ পশু। গতকাল শনিবার একদিনেই ২ হাজার ১৭০ গবাদি পশু আমদানি হয়েছে। এটিই এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ পশু আমদানির রেকর্ড। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রেকর্ড পরিমাণ গবাদিপশু আমদানি হচ্ছে। করিডরে আমদানি করা পশুগুলো সরকারি কোষাগারে রাজস্ব আদায় শেষে বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পশু ব্যাপারীদের কাছে। এদিকে চলতি মাসের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৯ হাজার ২২ পশু আমদানির বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪৫ লাখ ১১ হাজার টাকা। যা গত জুলাই মাসে করিডর থেকে রাজস্ব আয়ের চেয়ে ১৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বেশি। টেকনাফ শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি করে এ করিডর রাজস্ব প্রাপ্তিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর বৈরি হাওয়া কেটে শুক্রবার থেকে আবারও মিয়ানমার থেকে পুরোদমে পশু আমদানি শুরু হয়েছে। শাহপরীর দ্বীপ করিডরের পশু আমদানিকারকরা জানান, আবহাওয়া পরিস্থিতি গত দুদিনের মতো স্বাভাবিক থাকলে কোরবানির আগ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমাণ গবাদিপশু আমদানি করা সম্ভব হবে। এতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন পশুর হাটে কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে। আমদানিকারকদের দাবি, টেকনাফ সদর থেকে শাহপরীর দ্বীপের দূরত্ব এবং যাতায়াত সমস্যার বিষয়টি বিবেচনা করে শাহপরীর দ্বীপ করিডর সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক এবং শুল্ক স্টেশনের অস্থায়ী বুথ স্থাপন করা দরকার।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 3 =