চামড়া কিনতে ৬০১ কোটি টাকা ঋণ দিলেও, তার খুব অল্পই হাতে পেয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। বেশির ভাগটাই গেছে আগের বকেয়া ঋণ সমন্বয়ে। পুরোনো ঋণ ব্লক করে নতুন করে টাকা দেয়ার দাবি ছিলো মালিকদের। কিন্তু ব্যাংকগুলো সাড়া দেয়নি। তাই নগদ অর্থের সংকটে চামড়া কিনতে পারেননি অনেক ট্যানারি মালিকরা । ঠিক কত পশু এবার কোরবানি হয়েছে এখনও সেই হিসেব চূড়ান্ত হয়নি।
কেননা, সব চামড়া কেনা শেষ করেনি পোস্তার আড়ত বা সাভারের ট্যানারিগুলো । উল্লেখ, গতবার ৬৩ লাখ গরু মহিষ আর ৪০ লাখ ছাগল ভেড়া কোরবানি হয়েছিলো। এবছর তার চেয়ে কিছুটা বেশি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতবছরের কোরবানির গরু মহিষের চামড়ার দাম এ বছরের দর অনুযায়ী কিনতে দরকার ছিলো ৬৬১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর ছাগল ভেড়ার চামড়ার দাম হয় ২৮ কোটি টাকা। সবমিলে ৬৮৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। চামড়া কিনতে এবছর রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ৪ ব্যাংক ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে ৬০১ কোটি টাকা। ভুলুয়া ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার যদি ২০ কোটি টাকা লোন হয়, আমি সুপার এডজাস্ট করেছি ১০ কোটি টাকা। যেটা আমাদেরকে লোন দেয় কোরবানির সময়, সেটাকে বলে সুপার। কিন্তু বাকি ১০ কোটি টাকা সরকার আমাকে আর দেয়নি। শুধু ওই ১০ কোটি টাকাই দিয়েছে।’ ব্যাংকগুলোও স্বীকার করেছে, এটাই নিয়ম। আগের ঋণ শোধ না করলে, সমন্বয় করা ছাড়া কোন উপায় নেই। সোনালী ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘আমরা যখন ৭০ কোটি টাকা দিলাম, এরমধ্যে একটা টেনারি ফেক্টরি ১০০% শোধ করে ফেলেছে। ফলে সে তার ২৫ কোটি টাকার পুরাই নিতে পেরেছে। আর বাকি দুইটা ফ্যাক্টরির তাদের আন্ডারওয়ে প্রসেসের কারণে কিছু টাকা বাকি আছে। ফলে ওই পরিমাণ টাকা তারা কম পেয়েছে। কিন্তু অনেক দেশেই দুঃসময়ে ব্যবসায়ীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকগুলো, এমন উদাহরণ দিয়ে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করতে হলে, সহায়ক নীতিমালা তৈরি করতে হবে সরকারকে। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, ‘ট্যানারি মালিক হয়তো ২’শ থেকে ২’শ ৫০ কোটি টাকা পাবে তিনটা ইন্সটলমেন্টে। একটা পলিসিতে যদি আনা যায়, এই কাঁচা চামড়ার বেচা কেনা, তাহলে এই বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে না।’ গত ১৫ বছরের মধ্যে কাঁচা চামড়ার দামে রেকর্ড দরপতন হয়েছে এবছর। তবে এখনো ট্যানারী মালিকরা আশাবাদী যে কোরবানী হওয়া সকল চামড়া কিনে নিতে পারবেন তারা। তখন আরেকটু চাঙ্গা হবে বাজার ।