বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় সংসদ সদস্যসহ অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন চালানো হয়েছে

0
548

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বহু সংসদ সদস্যসহ অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন চালানো হয়েছে, প্রায় দেড় শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সম্প্রতি প্রয়াত সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজাকে ড্রিল দিয়ে হাত-পা ফুটো করাসহ অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছিল। তার পর থেকেই তিনি অসুস্থতা নিয়ে বেঁচে ছিলেন।

অবশেষে তাঁকে মৃত্যুবরণ করতে হলো। এই সংসদের অনেক সদস্যই বিএনপির দ্বারা নির্যাতিত। গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরুর দিনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা এবং বিরোধী দলের চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই আলোচনায় আরো অংশ নেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশদ এরশাদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসনে আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সরকারি দলের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মীর শওকাত আলী বাদশা, আবদুস সালাম মুর্শেদী ও মো. মনিরুল ইসলাম এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, কাজী ফিরোজ রশীদ, নুরুল ইসলাম ওমর ও মো. ফখরুল ইমাম। আলোচনা শেষে স্পিকার শোক প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। এরপর দুজনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর বর্তমান সংসদের দুজন সংসদ সদস্যের মৃত্যুর কারণে সংসদ অধিবেশনের দিনের অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত রেখে সংসদ মুলতবি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুজন সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি। তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মোস্তফা রশিদী সুজা খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একজন ক্রীড়া অনুরাগী এবং প্রাণবন্ত সুদক্ষ নেতা ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী ওপর যে অত্যাচার করা হয়, সেই অত্যাচারে শিকার হয়েছিলেন মোস্তফা রশিদী সুজাও। তাঁর পায়ে ড্রিল দিয়ে ফুটো করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর হাত-পায়ে অমানুষিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল। এমনকি তাঁর ভাই ও শিশুসন্তানকে পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অপারেশন ক্লিন হার্টের সময়।’ তিনি বলেন, ওই সময় খুলনার যুবলীগ নেতা মাসুদকে তো মেরেই ফেলা হয়েছিল। এ রকম অসংখ্য নেতাকর্মীকে নির্যাতন করা হয়। ওই সময় প্রায় ১৫০ জনের মতো নেতাকর্মী মারা যায়। এই সংসদের অনেক সংসদ সদস্যই আছেন, যাঁরা বিএনপির দ্বারা নির্যাতিত। এই নির্যাতনের ফলেই মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে খুলনা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক যে ক্ষতি হলো, তা পূরণ হওয়ার নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকজন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল  ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাঁর বিরাট ভূমিকা ছিল। আমরা দুজন দক্ষ সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি। এই সংসদের প্রায় ১৫ জন সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন।’ প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত সব নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেন, প্রয়াত এই দুই নেতাই অসম্ভব ভালো ও ত্যাগী রাজনীতিবিদ ছিলেন। ভালো মানুষগুলো একে একে চলে যাচ্ছেন। দশম জাতীয় নির্বাচনের সময় অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন তাজুল ইসলাম চৌধুরী। কে কখন আমাদের ছেলে চলে যাবেন, তা কেউ জানে না। আমৃত্যু তাঁরা নিজেদের এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তাঁদের মৃত্যুতে রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনো দিনই পূরণ হওয়ার নয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 + 1 =