‘স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী খুনিদেরকেও ক্ষমতায় আসতে দেওয়া উচিত হবে না

0
497

যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না, তাদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী খুনিদেরকেও ক্ষমতায় আসতে দেওয়া উচিত হবে না।’ আগামী নির্বাচনে সেই খুনিদের কি আবার ক্ষমতায় আনবেন?-প্রশ্ন করেন মন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পাঁচতারা রেডিসন ব্লু হোটেলে ‘বে টার্মিনাল’ নির্মাণে অধিগ্রহণকৃত জমির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বন্দরের নিজস্ব অর্থে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আকারে অন্তত তিনগুণ বড় এই বে টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে নগরের হালিশহরে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে। বিএনপি জামায়াতের উদ্দেশে নৌপরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ভাবধারায় মিলে বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করছে তাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকা উচিত নয়। তাদের বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার দায়িত্ব হল বাঙালি জাতির। তাহলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।’ বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিয়ে পালানোর পথ খুঁজছে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, ‘মাঠে নামলে জনগণ তো জানতে চাইবে দেশব্যাপী মানুষ পুড়িয়ে মারার কথা। তখন বিএনপি নেত্রী জবাব কী দিবেন? এ জন্যই ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বে টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ফুরিয়ে যাওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা কেটে গেছে। আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ নয়, দেশের জন্যই অগ্নিপরীক্ষা।’ বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেন, ‘আগের সরকারের সময় চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিকতা রক্ষা না হওয়ায় দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই বন্দরের নতুন তিনটি টার্মিনাল নির্মাণকাজ হচ্ছে, যন্ত্রপাতি যোগ হচ্ছে। বে টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হওয়া শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। বে টার্মিনাল নির্মাণ শুরু হওয়া এর বড় প্রমাণ। আগামী নির্বাচনে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে চট্টগ্রামসহ দেশের উন্নয়নও থমকে যাবে।’ বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বে টার্মিনাল নির্মাণে এম এ লতিফের উদ্যোগ ছিল প্রশংসনীয়। এরপর চট্টগ্রাম চেম্বার ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে বে টার্মিনালে গুরুত্ব তুলে ধরে। কিন্তু তখন অনেকে এতে কান দিতে চায়নি। এখন বে টার্মিনাল হচ্ছে বাস্তবতা।’ সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ বলেন, ‘২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে এই বে টার্মিনাল থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি শুরু হবে। এই টার্মিনাল নির্মাণের ফলে বর্তমানের চেয়ে চারগুণ বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে। জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না। একসাথে ১০ থেকে ১৫টি জাহাজ ভিড়তে পারবে। আর বন্দরকেন্দ্রিক যানজট অনেকটা কমবে।’ উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের পতেঙ্গার অদূরে হালিশহর এলাকায় সাগর ঘেঁষে গড়ে ওঠছে এই বে টার্মিনাল। প্রাথমিকভাবে ৯০৮ একর জমির ওপর এটি গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে ৬৭ একর জমি ব্যক্তি মালিকদের কাছ থেকে বুঝে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বন্দর তহবিল থেকে ৩৫২ কোটি ৬২ লাখ টাকা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে গতকাল। জেলা প্রশাসন এই টাকা অধিগ্রহণকৃত জমি মালিকদের বুঝিয়ে দেবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × two =