তরুণী-যুবতীদের সতীত্ব ও সর্বশ্ব হারানোর ফাঁদ যশোরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আস্থা

0
821

মাধবী ইয়াসমিন রুমা :
যশোরের তরুণী-যুবতীদের সতীত্ব ও সর্বশ্ব হারানোর ফাঁদ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আস্থা। সংস্থাটির পরিচালক মেহেদী হাসান শিহাব ওরফে আদিত্য ইসলাম অর্পন। ২০১৭ ইং সালে আস্থার জন্ম। থ্যালাসোমিয়া আক্রান্ত শিশুদের রক্তের ব্যবস্থা করার কথা ব্যক্ত করে নিয়ম-নীতি বহির্ভূতভাবে সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আনতে থ্যালাসোমিয়া আক্রান্ত শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী ডোনার সংগ্রহ করে। কয়েক মাস ভালো ভাবে কাজ করলেও বর্তমানে সংস্থার কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। সংস্থাটির কোনো অনুমোদন নেই বলেও সূত্রটি জানায়। রক্ত সংগ্রহকালীন সময়ে ওইসব তরুণী ও যুবতী ডেনারদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে তাদেরকে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে ২০২১ সালে বিয়ে করবে, টোপ ফেলে তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে।

এক পর্যায়ে সংস্থাটির পরিচালক মেহেদী হাসান শিহাব শিহাব বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ধার স্বরুপ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয়। একাধিক মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক শিহাব শুধু টাকা হাতিয়ে ক্ষ্যান্ত হয় না, প্রেম ও বিয়ের কথা বলে প্রতিনিয়ত ওই সব তরুণী ও যুবতীদের সতীত্ব হরণ করে চলছে বলে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ। যদি কোনো তরুণী বা যুবতী অন্তঃ সত্ত্বা হয়ে পড়ে শিহাবকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তখন শিহাব বিভিন্ন টালকাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রতারক প্রেমিক শিহাব কৌঁশল খাটিয়ে ভ্রুণ নষ্ট করে দেয়। সেইসাথে শিহাব তাদের সাথে সম্পর্ক শেষ করে, অন্য মেয়ের সাথে একই কায়দায় সম্পর্ক গড়ে তোলে। মূলত আস্থা সংস্থাটি নারী ধরার ফাঁদ হিসাবে ব্যবহার করছে সংস্থাটির পরিচালক মেহেদী হাসান শিহাব ওরফে আদিত্য ইসলাম অর্পন। তিনি যশোরের ভোলা ট্র্যাংক রোডের কাষ্টমস অফিস এলাকার বাসিন্দা। মায়ের চাকুরীর সুবাদে শিহাবের যশোরে অবস্থান ও বসবাস। তার স্থায়ী ঠিকানা ময়মনসিংহ বলে জানা যায়। শিহাব নিজেকে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পরিচয় দেয়। তবে এই পরিচয়টিও সঠিক নয় বলে ভূক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, শিহাব হাইস্কুলের গন্ডি পার হয়নি। কিন্তু প্রতিটি মেয়ের সাথে শিহাব বলে, সে যশোর জেলা স্কুল থেকে ২০০৪ ইং সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। শুধু তাই নয়, ময়মনসিংহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পাশ করেছে। ভূক্তভোগী সূত্রটি জানায়, প্রতারক প্রেমিক শিহাব প্রতিটি মেয়েকে ২০২১ সালে বিয়ে করবে বলে কথা দেয়। শিহাব প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে সোনিয়া জান্নাত নামের একটি মেয়ের সাথে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কৌঁশলে সোনিয়াকে শয্যা সঙ্গিনী করে প্রতারক শিহাব। কিন্তু তাকে বিয়ে না করে মাগুরা সীমাখালী এলাকার তৃপ্তি নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে। নারীলোভী হওয়ায় শিহাবের সাথে তৃপ্তির সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে শিহাব রাজধানীর জান্নাত জেরিন নামের এক মেয়েকে ফোন করে নিজের পরিচয় দেয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাকে প্রথমে বন্ধুত্বের আহবান করে। বন্ধুত্বের পরে প্রেম এবং ২০২১ সালে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সম্পর্কের মাঝেই শিহাব সমস্যার কথা বলে জান্নাতের কাছ থেকে ধার স্বরুপ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। জান্নাত প্রেমিক শিহাবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যশোরের নীমতলা এলাকার শিহাবের ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকা দেয়। যার একাউন্ট নং-১৬৩১০১২৩১২৪। বেড়াতে নিয়ে যেয়ে জান্নাতকে জোরপূর্বক ভোগ করে। জান্নাতের সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় বন্ধু রনির মাধ্যমে নড়াইল রোড এলাকার শোভার সাথে পরিচয় হয় শিহাবের। প্রেম ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শিহাব তাকেও শয্যা সঙ্গিনী করে। শোভাকে সর্বনাশ করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে তার কাছে থেকে স্বর্ণের চেইনও হাতিয়ে নিয়েছে শিহাব। এরই মধ্যে শোভা অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে শিহাবকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তখন শিহাব কৌঁশলে শোভার বাচ্চা নষ্ট করে দেয়। একই সাথে সে খুলনার জলির সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে একই কায়দায়। উক্ত ভন্ড প্রেমিক যশোরের পালবাড়ী এলাকার বাবলী নামের এক স্বেচ্ছাসেবিকার সাথে বিয়ে ও প্রেমের কথা বলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে বিয়ে না করে বিভিন্ন টালবাহানা করলে বাবলী শিহাবের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে। নাহার নামের এক মেয়েকে আস্থার অফিসের মধ্যেই শয্যা সঙ্গিনী করে বলে সূত্রে জানা গেছে। একাধিক মেয়ের সাথে শিহাবের অবৈধ সম্পর্ক থাকার কথা জানতে পেরে জান্নাত তার ৩৫ হাজার টাকা ফেরত চাইলে সে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সেইসাথে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং উল্টো জান্নাতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যদি কোনো মেয়েকে শিহাবের ভালো লাগে, তাহলে যেভাবেই হোক তার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে। পরে ফোন করে প্রথমে আপু সম্মোধন করে কথা শুরু করে। তারপর প্রেমের প্রস্তাব, পর্যায়ক্রমে ২০২১ সালে বিয়ের প্রস্তাব। আর তার এ মিষ্টি কথার ফাঁদে পড়ে মেয়েরা তাদের সর্বশ্ব হারাচ্ছে। মূলত সংগঠনের অন্তরালে চলছে নারী ভোগের কারবার।
প্রতারিত হওয়ার পর যদি কোনো মেয়ে প্রতিবাদ করে, তাহলে প্রতারক প্রেমিক শিহাবের সাফ কথা, আমি কোনো মেয়ের কাছে যাই না। মেয়েরা সবাই আমার কাছে আসে। জানা গেছে, প্রতারক প্রেমিক শিহাবের বাবা ও নানা বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তগাছা এলাকায়। মা সোনিয়া ওরফে শিউলীর কর্মস্থান যশোর হওয়ায় বর্তমানে যশোরে অবস্থান। এ ব্যাপারে আস্থার পরিচালক মেহেদী হাসান শিহাব ওরফে আদিত্য ইসলাম অর্পনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে অপরাধ বিচিত্রা‘র অনুসন্ধান চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × 3 =