Site icon Aparadh Bichitra

আওয়ামী লীগ তো জনগণকে ত্যাজ্য করে দিয়েছে, তাদের সাথে ঐক্যের কি দরকার : রিজভী

আওয়ামী লীগকে সংশোধন করে সঠিক পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আওয়ামীলীগকে ছাড়া জাতীয় ঐক্য হবেনা দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ তো জনগণকে ত্যাজ্য করে দিয়েছে, তাদের সাথে ঐক্যের কি দরকার।

আর যে কাজ করলে ঐক্য করা যাবে আগে সেগুলো করুন। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, সংসদ ভেঙে দিন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন তাহলে বুঝবো যে আপনারা জাতীয় ঐক্য চান। সংশোধন করে সঠিক পথে আসুন তখন বিবেচনা করা যাবে আপনাদের জাতীয় ঐক্যে নেয়া হবে কিনা। রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐক্যকে সাম্প্রদায়িক বলায় ওবায়দুল কাদের ও আওয়ামীলীগের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা কাণ্ডজ্ঞা, বিবেক হারিয়ে একেক সময় একেক কথা বলছেন, সকালে এক কথা বললে বিকেলে তার বিপরীত কথা বলছেন। আর কাকে সাম্প্রদায়িক বলছেন? আওয়ামীলীগ হেফাজতের সাথে চুক্তি করেনি, জামায়াতে সাথে মিলে একসঙ্গে আন্দোলন করেনি? তদের সাথে একই মঞ্চে বসেনি? এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে যান কেন? সরকার গণতন্ত্রের মুখোশও এখন ছুড়ে ফেলেছে মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশত্যাগে বাধ্য করার পর সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থে এসকে সিনহা সাহেব এর প্রতি সরকারের যে ঘটনাগুলো বেরিয়ে আসছে তাতে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই সাবেক প্রধান বিচারপতিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। আর এটি করতে গিয়ে বিশ্ব দবরবারে শেখ হাসিনা কলঙ্কিত হয়েছেন। এই ঘটনা বিচার বিভাগের ওপর ব্যক্তি শেখ হাসিনার ভয়ঙ্কর আক্রমণ। বিচার বিভাগের ওপর আধিপত্য বিস্তারই এই আক্রমণের মূল লক্ষ্য। জোর করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে দেশ থেকে বিতাড়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা এখন সম্রাজ্ঞীতে পরিণত হয়েছেন। সর্বশেষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দিতে যাচ্ছেন। গণতন্ত্রের মুখোশটুকু ছুঁড়ে ফেলে গণতন্ত্রের শেষ চিহ্ন মুছে দিয়েছেন। ফলে সম্রজ্ঞীর শাসন এখন পুরোদমে চলছে। ২১ আগষ্ট বোমা হামলার পুরো বিষয়টাই একটি প্রহলিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি আওয়ামী রাজনীতির কুটিল পাটিগণিত। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার দেশীয় ও বৈদেশিক চক্রান্তের বিপজ্জনক ব্লুপ্রিন্ট। বিএনপি-কে নিশ্চিহ্ন করার নানাবিধ ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ২১ আগষ্ট বোমা হামলা মামলায় সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আইন আদালতকে। কারণ আইন আদালত এখন সম্পূর্ণভাবে সরকারের হাতের মুঠোয়। রিজভী বলেন, ২১ আগষ্ট বোমা হামলা মামলায় দীর্ঘদিন পর অধিকতর তদন্তের নামে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌্যান তারেক রহমানকে জড়ানোর ঘটনায়। এর পূর্বে দুইবার চার্জাশটে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শুধুমাত্র প্রতিহিংসা পূরণের জন্য টার্গেট করেই সম্পুরক চার্জশিটে তার নাম উক্ত মামলায় জড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বেপরোয়া ক্ষমতার আস্ফালনে আইন আদালতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহার আকন্দের তথাকথিত নিখুঁত ও গভীর তদন্ত কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সরকারী অনেক দলিল দস্তাবেজ হয় গায়েব অথবা সৃজন পরিবর্তন করা হয়েছে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূইয়া, আহমেদ আজম খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।