ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচলেও মৃত্যু থেকে রক্ষা পায়নি

0
660

সিএনজি অটোরিকশাচালকের ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচলেও মৃত্যু থেকে রক্ষা পায়নি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থী তহুরা বিনতে শরীফ (২৪)। দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর বৃহসপতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বুধবার বিকালে হবু বরের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে চালকের লালসা থেকে বাঁচতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের উপর দ্রুতগতিতে চলা সিএনজি অটোরিকশা থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন তহুরা। শুক্রবার আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে চট্টগ্রাম মহানগরীর আতুরার ডিপো হাজীপাড়া এলাকার সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তার লাশ। অথচ সেদিনই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার। নিহতের স্বজনরা জানান, তহুরার সমপর্ক মেনে নিয়ে দীর্ঘদিনের বন্ধু মাহফুজের সঙ্গে বিয়ে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। মাহফুজ হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসেন বুধবার সকালে। সেদিন বিকালেই নগরের আগ্রাবাদে তাদের দুজনের দেখা হওয়ার কথা ছিল। হবু বরের সঙ্গে দেখা করতে নগরীর আতুরার ডিপো এলাকা থেকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে তহুরা রওনা দেন আগ্রাবাদের উদ্দেশে। কিন্তু দ্রুতগতিতে চালানো অটোরিকশাচালকের লুলুপ দৃষ্টি ও আচরণে ভয় পেয়ে যান তহুরা। একপর্যায়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের মাঝামাঝি অংশে এসে অটোরিকশা থামিয়ে তহুরাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে অটোরিকশাচালক। তহুরার চিৎকারে ব্যর্থ হয়ে চালক দ্রুতগতিতে সিএনজি অটোরিকশা চালাতে থাকে। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে সিএনজি থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন তহুরা। স্থানীয় লোকজন তহুরাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তার মা-বাবা তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে দুদিন চিকিৎসার পর বৃহসপতিবার রাত ৩টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তহুরা। তহুরার চিকিৎসক নিউরো সার্জন কামাল উদ্দিন বলেন, আঘাতের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। ওই অবস্থায় স্বাভাবিক চিকিৎসা তথা মেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা ছাড়া অস্ত্রোপচারের কোনো অবস্থা ছিল না। আর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর এ ধরনের কারও বেঁচে থাকার নজির নেই বললেই চলে। চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, তহুরা চট্টগ্রাম মহানগরীর আতুরার ডিপো হাজীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ শরীফের কন্যা। তিনি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। সিএনজি অটোরিকশা চালকের লালসার হাত থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় থানায় এখনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 2 =