সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে কাঁচা-পাকা মিষ্টি মালটা। পুরো বাগান জুড়ে এখন ছোট-বড় মালটার সমাহার। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব মালটার রং সবুজ। দেখতে অনেকটা মিষ্টি লেবুর মত। ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে।
আবার কোনো কোনো গাছে ব্যাপক ফলও এসেছে। রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবার মালটা চাষে সফল হয়েছেন চাষীরা। তাছাড়া কম খরজ, ব্যাপক ফলন, লাভও অধিক। তাই কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে মানন্নোয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে পাহাড়ে এ উৎপাদিত মালটা। রাঙামাটি ছাড়িয়ে এসব মালটা রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দেশীয় মালটার চাষ। তাছাড়া ফলনও হয়েছে বাম্পার। এরই মধ্যে সফলতা পেয়েছেন রাঙামাটির শুকরছড়ি গ্রামের অনেক মালটা চাষী। তাই মালটা চাষের আগ্রহ বেড়েছে পাহাড়ের কৃষকদের। পাহাড়ে উৎপাদিত এ মাল্টার চাহিদা অনেক। রাঙামাটি জেলায় প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে মালটা বাগান গড়ে তুলেছে কৃষকরা। পাহাড়ি মাটি উর্বর ও সঠিক পরির্চযার কারণে সহজে বেড়ে উঠেছে মালটা গাছগুলো। তাছাড়া ফলনও হচ্ছে বাম্পার। স্থানীয় মালটা চাষী হেম কুমার চাকমা বলেন, রাঙামাটি কৃষি বিভাগের মালটা ছাড়া গাছ দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছে। সেছাড়া গাছ বোপন করে আমি মালটা বাগান গড়ে তুলেছি। গত আড়াই বছর ধরে পাহাড়ে মালটা চাষ করে আসছি। চলতি বছর মালটার উৎপাদন বেপত হয়েছে। তাই আর্থিকভাবে আমি লাভবান হয়েছি। রাঙামাটি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান, পাহাড়ে উৎপাদিত মালটা নাম বারি মালটা-১। অন্যান্য মালটার রঙ দেখতে হলুদ হলেও পাহাড়ে উৎপাদিত মালটা দেখতে সবুজ। খেতেও মজাদার। রসালো আর মিষ্টি। স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাল্টা চাষীদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। হেম কুমার চাকমার মত অনেক এখানে মালটা বাগান গড়ে তুলেছে। এসব মালটা চাহিদা অনেক। তাই সহজে বাজারজাত করা যায়। তাই পাহড়ি জমিতে মালটা চাষ বাড়াতে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাল্টা ছাড়াগাছ বিতরণ করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, মাটি ও আবহাওয়া যে কোন চাষাবাদের জন্য উপযোগি। তাই সহজে কৃষকরা সফলা পায়। তেমনি মালটা বাগান করে অনেক কৃষক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। তিনি বলেন, রাঙামাটি জেলায় প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে মালটা উৎপাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ১২ মেট্রিক টন করে উৎপাদিত হচ্ছে মালটা। যা চাহিদার তুলনায় অনেক। আর এসব মালটা বিক্রি করে ৪থেকে ৫ কোটির অধিকা আয় করছে চাষীরা। পাহাড়ে জুম চাষের পরির্বতে অনেক কৃষক এখন মালটা চাষ করছে। পাহাড়ে উৎপাদিত দেশীয় মালটার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে স্থানীয় কৃষকরা।