ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা

0
608

পাস হওয়ার পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজধানীর পল্টন থানায় বুধবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ধারা ২৩(২), ২৪(২) ও ২৬(২)-সহ পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন ১৯৮০-এর ৪/১৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় অভিযুক্তরা হলো- কাউসার গাজী (১৯), সোহেল মিয়া (২১), তারিকুল ইসলাম শোভন (১৯), রুবাইয়াত তানভির (আদিত্য) ও মাসুদুর রহমান ইমন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল‍্যা নজরুল ইসলাম। এদিকে মামলায় গ্রেফতার ৫ আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সত্যব্রত শিকদার আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপ-পরিদর্শক শিব্বির আহমেদ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। পাশাপাশি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখারও আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিলটি ২০ সেপ্টেম্বর সংসদে পাস হওয়ার পর গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিলটিতে সম্মতি দেন। ওইদিন থেকে এটি আইন হিসেবে কার্যকর হয়। এর আগে রাজধানীর মালিবাগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোল‍্যা নজরুল ইসলাম বলেন, গত ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কতিপয় ব্যক্তি তাদের ফেসবুক একাউন্টে শতভাগ কমনের নিশ্চয়তা দিয়ে টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয় বলে প্রচার করা হয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি টিম যাত্রাবাড়ীর দনিয়ার কাজলার পাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে ২জনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন এবং বিকাশ সিম রেজিস্ট্রেশনের খাতা জব্দ করা হয়। এছাড়া একই দিন রাতের দিকে বাড্ডার আলিফ নগর এলাকা থেকে তিনজনকে তিনটি মোবাইল ও দুটি ল্যাপটপসহ গ্রেফতার করা হয়। মোল্যা নজরুল বলেন, এ প্রশ্ন ফাঁসকারী প্রতারণা চক্রের মাস্টার মাইন্ড কাউসার গাজী গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, বর্তমানে তারা প্রশ্ন ফাঁস করতে না পেরে নিজেদের মতো প্রশ্ন তৈরি করে ফেসবুকে বিভিন্ন ফেক আইডি ব্যবহার করে শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল। কাউসারকে এ কাজে সহযোগিতা করত তার বন্ধু সোহেল। সে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করত। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মোল্যা নজরুল জানান, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি প্রশ্ন ফাঁস করলেও এবার প্রশাসনের তৎপরতায় তা করতে পারেনি। কিন্তু ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে ১০টি ফেক ফেইসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মেডিকেলের প্রশ্ন পাওয়ার প্রচারণা চালায়। তারা ফেক প্রশ্নপত্র তৈরি করতে বিভিন্ন সাজেশন বই, বিগত বছরগুলোর প্রশ্নপত্র একত্রে করে একটি ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে। সিআইডির কর্মকর্তা মোল্যা নজরুল আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি তদন্তধীন আছে। প্রতারক চক্রের আরো সদস্যকে গ্রেফতারের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 + 13 =