শীতকালীন সবজি চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষকরা

0
1130

চলতি আমন মৌসুমে জেলায় বৃষ্টি কম হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অধিক লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঝুকে পড়েছে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের কৃষকরা। উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোর ব্যস্ততায় দিন কাটছে।

বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব শীতকালীন সবজি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শীতের শুরুতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাবে এ জেলার কৃষকরা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেকোনো ফসল আগাম চাষ হলে বাজারে চাহিদা থাকে বেশি। তাই মুনাফাও অনেক বেশি পাওয়া যায়। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক মুনাফা লাভের জন্য বেগুন,মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির জুরি নেই। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম সবজি চাষে বেশ আলোড়ন সৃিষ্ট করেছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের শিবরাম এলাকার কৃষক নুরুল হক ও জহুরুল হক। তারা শ্যালক-দুলাভাই মিলে অন্যের জমি লিজ নিয়ে গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে নিজেদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি জেলার অর্থনৈতিক উন্নতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন। শিবরাম এলাকার সাড়ে তিন একর জমি বছরে ৭০ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে সারাবছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করছেন তারা। ক্ষেত থেকে সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা ট্রাকে করে সবজি ক্রয় করে নিয়ে যান। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করলে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করা সম্ভব। সবজি ক্ষেতে পোকামাকড় আক্রমণ করবেই। এদিকে মোগলহাট ইউনিয়নের, ফুলগাছ কোদালখাতা, মেঘারাম ও কুলাঘাট ইউনিয়নের শীবের কুটি, বনগ্রাম এলাকায় বেগুনের ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এ বেগুন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাবে পাইকাররা। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি চাষ হচ্ছে। সবজি চাষের ব্যাপকতার জন্য আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি, সারপুকুর, ভেলাবাড়ি, দুর্গাপুর, সদর উপজেলার বড়বাড়ি, গোকুন্ডা, মোগলহাট, মহেন্দ্রনগর, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা, মদাতি, চন্দ্রপুর, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না, ভেলাগুড়ি, সিংগিমারী, টংভাঙ্গা এবং পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ও কুচলিবাড়ি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের সবজি। শীতের শুরুতে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন জেলায় যাবে এ সবজি। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, কৃষকরা যে ফসলে মুনাফা পায়, সেটাতেই ঝুঁকে পড়েন। শুধু এ জেলায় নয়, সারাদেশে সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষকরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় আগাম সবজি চাষে ঝুকে পড়েছেন। উপ-পরিচালক বিদু ভুষণ রায় বলেন, কৃষি বিভাগের লোকজনের নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 1 =