বিলাতি ধনিয়া চাষে নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন চাষীরা

0
813

সিলেটে ধনিয়া ‘বনঢুলা’ নামে পরিচিত। যেকোন খবারে ব্যবহার উপযোগী ধনিয়া। সালাদ-তরকারী সুস্বাদু ও লোভনীয় করেত এর জুড়ি নেই। তাই দেশ-বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। ধনিয়ার উচ্চ বাজার মূল্য ও অল্প পুঁজিতে অধিক লাভজনক হওয়ায় বিলাতি ধনিয়া চাষে ঝুঁকেছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অনেক চাষী।

ধনিয়া চাষে নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন তারা। জানা গেছে, উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে বিলাতি ধনিয়ার ব্যাপক চাষ হচ্ছে। ইউনিয়নের মুন্সিরগাঁও, মনুকোপা, পালগাঁও, বেতসান্দি ছনখাইড়, পিটাকরা ও ফরহাদপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৮ একর জায়গাজুড়ে এ ফসলটি চাষ করছেন চাষীরা। এর ফলে স্বচ্ছলতা ফিরেছে চাষী পরিবারের। কর্মসংস্থান হয়েছে অসংখ্য বেকারের। বিশেষ করে আয়-রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নারীদের। নারীরা ৩০০ টাকা হারে প্রতিদিন পাতা আহরণ করেন। তাছাড়াও, ১০০আঁটি প্রতি (আঁটি বাঁধার জন্যে) ১০ টাকা হারে বাড়তি টাকাও আয় করেন তারা। সরেজমিন ওই এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায় ধনিয়ার পরিচর্যা, পাতা আহরণ ও ধনিয়ার ক্ষেত রক্ষণাবেক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। কথা হয় মুন্সিরগাঁও এলাকার চাষী আবুল কালাম’র সাথে। তিনি জানান, দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে আর বেশি দূর এগোতে পারিনি। ইচ্ছে ছিল ভাগ্যবদলের জন্যে বিদেশ পাড়ি দেয়ার। পরে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। এক পর্যায়ে শুরু করি বিলাতি ধনিয়া চাষ। সফলতা ধরা দেয় হাতের মুঠোয়। বর্তমানে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ করেছি। বছরে প্রতি বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষে খরচ আসে ৭০ হাজার টাকার মতো। এগুলো বিক্রি করে খরচ বাদে মুনাফা আসে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রায়। আরেক চাষী মুজিবুর রহমান চৌধুরী কাওসার জানান, আমাদের এখানে মূলতঃ ফাল্গুন মাসে এর বীজতলা তৈরি করতে হয়। চারা উৎপাদন হলে চৈত্র-বৈশাখ মাসে ধনিয়া রোপণ করা হয়। রোপণের ১৫/২০দিন পর হতেই এগুলো বিক্রি শুরু হয়ে যায়। প্রতিদিন ৬ হাজার টাকার মতো ধনিয়া বিক্রি করা যায়। প্রতি বছরই ধনিয়া বিক্রি করে আমার দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার মত আয় হয়। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিশ্বনাথের অলংকারী ইউনিয়নের বেশক’টি গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বিলাতি ধনিয়া চাষ হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকাগুলোর অনেক বেকার ও শিক্ষার্থীরা বিলাতি ধনিয়া চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। আগ্রহী চাষীদের উপজেলা কৃষি অফিস প্রয়োজনীয় পরামর্শ-সহযোগিতাও দিচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × four =