কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের শিশু রেশমা আক্তারকে ভুল চিকিৎসা প্রদানকারী ডাক্তার মো.শাহেদ আনোয়ার ভুইয়াকে সড়কের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে এলাকাবাসী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই ডাক্তারের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ডাক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।গত সোমবার দুপুরে নাঙ্গলকোট-লাকসাম সড়কের টুয়া রাস্তার মাথা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। ওই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় বর্তমানে অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শিশু রেশমার স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার আশা। সে উপজেলার টুয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে এবং টুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ডা.মো.শাহেদ আনোয়ার ভূঁইয়া নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি লাকসাম বাইপাস এলাকার ইউনিটি ট্রমা এ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন। সোমবার দুপুরে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাকসাম যাওয়ার পথে তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি নাঙ্গলকোটের টুয়া রাস্তার মাথা এলাকায় আসলে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় লোকজন সড়কটি অবরোধ করে রাখে।এ সময় গাড়ীর যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে।
প্রায় ১ ঘন্টা সড়কটি অবরুদ্ধ থাকে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ‘খুনি ডাক্তারের বিচার চাই, কসাই ডাক্তারের বিচার চাই’ বলে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেয়।এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.আশ্রাফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। পরে ডাক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার মক্রবপুর ইউনিয়নের টুয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রেশমা রাস্তা পারাপারের সময় সিএনজি চালিত অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লেগে পায়ের গোড়ালীতে আঘাত পায়। পরে সিএনজির ড্রাইভার তাকে উদ্ধার করে লাকসাম ইউনিটি ট্রমা এ্যান্ড জেনারেল হসপিটালে নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে।ওই হাসপাতালে রেশমার চিকিৎসা করেন ডা.মো.শাহেদ আনোয়ার ভুঁইয়া। ওই চিকিৎসক রেশমাকে এক মাস চিকিৎসা দেওয়ার পর অপারেশনের মাধ্যমে পায়ের উরু থেকে মাংস কেটে ক্ষত স্থানে (গোড়ালী) প্রতিস্থাপন করেন। এরপর আরও একমাস পার হলেও ক্ষতস্থানে মাংস জোড়া না লেগে ধীরে ধীরে পুরো পায়ে পচন ধরতে শুরু করে।এতে অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে ওই শিশুর মা নার্গিস আক্তার তাঁর এক আত্মীয়ের সহায়তায় গত ১৮ আগস্ট রেশমাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। এছাড়া ওই চিকিৎসক গত চার মাসে বিভিন্ন পরীক্ষা ও চিকিৎসার নামে রেশমার পরিবারের সহায়-সম্ভল বিক্রি করে আনা দুই লাখ টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। বর্তমানে শিশুটির পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।