মানিকগঞ্জের শিবালয় ও দৌলতপুরে পদ্মা-যমুনা নদীতে মা ইলিশের প্রজননের সময় জেলেদের ইলিশ শিকার ঠেকাতে অবশেষে র্যাব অভিযান শুরু করেছে। আজ বৃহস্পিবার সকাল থেকে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে নদীতে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব।
ঢাকার র্যাব-৪ (সিপিসি)-২ এর উপ সহকারি পরিচালক মেজর আব্দুল হাকিমের নেতৃত্বে ৩০ জন র্যাব সদস্যের এক প্লাটুন ফোর্স স্পিড বোট ও ইঞ্চিন চালিত নৌকাযোগে নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। ইলিশ সংরক্ষণে প্রশাসনের অভিযানের সাথে র্যাব যুক্ত হওযায় এলাকার সচেতন মহলে স্বস্তি ফিরেছে। এ সময় অভিযানে ১৩ জন জেলেকে আটক করা হয়। পাশাপাশি দেড় শ মণ ইলিশ ও দেড় লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ফেলাসহ জব্দকৃত ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা ও জেলা কারাগারে বিতরণ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আবুদারদা আটককৃত ১৩ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মনিরুজ্জান, শিবালয় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামসহ র্যাবের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত নদীতে ইলিশ ধরা ও ক্রয়-বিক্রয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জেলার হরিরামপুর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার প্রায় দেড় শ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা-যমুনা নদীতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলেরা অনবরত ইলিশ শিকার করে অবাধে বিক্রয় করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও লোকবল-নৌযান সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অবৈধ শিকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছিলো না। এ অবস্থায় চলমান নিষিদ্ধ সময়ের শেষের দিকে র্যাব অভিযান না করে শুরুতে করলে অনেকাংশে জেলেদেরকে ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখা সম্ভব হতো বলে মনে করছেন অনেকে। স্থানীয় অধিবাসী আব্দুল মান্নান জানান, বিলম্বে ইলিশ ধরা ঠেকাতে নদীতে র্যাব নামানো হলেও স্বস্তি এসেছে। ভবিষ্যতে নিষিদ্ধ সময়ের শুরু থেকেই নদীতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকলে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে। র্যাবসহ প্রশাসনের বিলম্ব অভিযানের অভাবে চোরা মাছ শিকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মানিকগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। সার্বিক অবস্থা বুঝে উঠতে এমন বিলম্ব হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত জেলায় অভিযানে মোট ২৯১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৮২ জনকে বিভিন্ন হারে তিন লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা, সাত লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলাসহ ২ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।