Site icon Aparadh Bichitra

রূপগঞ্জে অহেতুক নির্মাণ করা হয়েছে সেতু ও কালভার্ট

সড়ক নির্মাণ অগ্রাধিকার থাকলেও রূপগঞ্জে অহেতুক নির্মাণ করা হয়েছে সেতু ও কালভার্ট। বছরের পর বছর এগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সরকারি লাখ লাখ টাকা ব্যয়ের এসব কালভার্ট ও সেতুকে এখন অপচয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে জনগণের কাছে।

অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে অনেক সেতু ও কালভার্ট। উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত এসব সেতু নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নের অধীনে গত একযুগে নির্মিত ১৪টি সেতু ও নির্মাণাধীন আরো ১৫টি সেতুর অনেকগুলো কেবল অর্থ অপচয় বৈ অন্যকিছু নয় বলে ধারণা স্থানীয়দের। জানা যায়, গত একযুগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের অধীনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৪টি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন রয়েছে আরো ১৫টি সেতু ও কালভার্ট। আবার বেশ কিছু সেতু নির্মাণ করেছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এসব সেতুর কয়েকটি ছাড়া অন্যগুলো জনগণের কোনো কাজেই আসছে না বলে জানা গেছে। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা সেতুর মাঝে এমনো রয়েছে যার দু’দিকে কোনো রাস্তা নেই। একটি খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এ সেতুটি। আবার এমন সেতু রয়েছে যার মাত্র ১০ গজ রাস্তা আছে তারপর শুধু ফসলি জমি আর জমি। এছাড়া এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সাতটি সেতু। রয়েছে পাশাপাশি যমজ সেতু। আবার নতুন করা সেতু ডুবে গেছে আবাসন প্রতিষ্ঠানের বালুর নিচে। অব্যবহৃত ও অপরিকল্পিত সেতুর ছড়াছড়ি থাকলেও অনেক এলাকায় বাঁশের সাঁকোই এখনো ভরসা। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, রূপগঞ্জ-ইছাপুরা সড়কের দক্ষিণবাগ এলাকা থেকে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতের একটি রাস্তা ফসলি জমির মাঝখান দিয়ে গিয়ে আগারপাড়া এলাকায় মিশেছে। এ রাস্তা দিয়ে খুব কম লোকই চলাচল করে। এ সরু রাস্তার মাঝখানেই জোট সরকারের আমলে একটি সেতু নির্মাণ করা হয় ৯ লাখ ১২ হাজার ৪৩৮ টাকা ব্যয়ে। স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের বরাদ্দের টাকায় এ সেতু নির্মাণ করা হয়। এর দু’বছর পর এ সেতুটির পাঁচ গজ দূরে আরো একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। এ সেতুটিও নির্মাণে খরচ হয় ৯ লাখ টাকার ওপরে। বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা ও সেতু পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয় লোকজন এ সেতু দুটিকে জোড়া সেতু বলেই চিনে। অপরদিকে রূপগঞ্জের সদর ইউনিয়নের নবগ্রাম এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যার পাশ দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা রাস্তা। পাশে ক্যানেল। এই খালের ওপরই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে সেতু। এ সেতু দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারে না। আবার গুতিয়াবো-জাঙ্গীর ও জাঙ্গীর কবরস্থানের সড়কে সদ্য নির্মিত দুটি সেতু ডুবে গেছে বালুর নিচে। বর্তমানে গত অর্থবছরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর থেকে আরো ১৫টি সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে। যার ব্যয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এসব সেতুও অনেক জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অথচ উপজেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এখনো চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হয় বাঁশের সাঁকো। বক্তব্য নিতে গেলে এক দপ্তর অন্য দপ্তরকে দোষারোপ করেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবেদ হোসেন বলেন, অপরিকল্পিত যেসব সেতুর কথা বলছেন সেগুলো আমার সময়ে নির্মাণ হয়নি। আর আমাদের অধিদপ্তরের অধীনে কোনো অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণ করা হয়নি। সবগুলো সেতুই জনস্বার্থে নির্মিত।