ব্যবসায়ীকে টাকার জন্যই হত্যা!

10
749

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাপড় ব্যবসায়ী সুমন খান হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। পুলিশ ও পরিবারের সন্দেহ, টাকার জন্যই এই ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে।

 

সুমন খান গত ৫ নভেম্বর গাজীপুরে তৈরি পোশাক কেনার পর রাজধানীতে ভাইয়ের বাসায় আসার পথে নিখোঁজ হন। চার দিন পর গত শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সুমনের পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, ঢাকায় আসার মাসখানেক আগে ইসলামী ব্যাংক জামালপুর শাখায় সাড়ে তিন লাখ টাকার একটি টিটি করেছিলেন এই ব্যবসায়ী। এরপর কাপড় কেনার জন্য গত ৫ নভেম্বর ভোরে দেওয়ানগঞ্জের বাসা থেকে ঢাকার উদ্দেশে বের হন। সেদিন দুপুরেই ঢাকা হয়ে গাজীপুরে পৌঁছেন তিনি। এরপর তিনি তৈরি পোশাক ও অন্যান্য কাপড় কেনার জন্য সারা দিন গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ছিলেন। সুমন খানের বড় ভাই পিন্টু খান গতকাল রবিবার দুপুরে বলেন, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে গাজীপুরে এসেছিলেন তাঁর দোকানের দুই কর্মচারী আল আমিন ও তারা মিয়া। পোশাক ও অন্য কাপড় কেনার পর ওই দিন রাত ১০টার দিকে পিকআপ ভাড়া করে আল আমিনকে দিয়ে সেগুলো দেওয়ানগঞ্জে পাঠিয়ে দেন। আল আমিন ভোরের দিকে দেওয়ানগঞ্জে পৌঁছে যান। আরেক কর্মচারী তারা মিয়া কোনাবাড়ী এলাকায় তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় থাকার কথা বলে সুমনের কাছ থেকে বিদায় নেন। তারা মিয়া ওই রাতে কোনাবাড়ীতে থেকে পরের দিন ৬ নভেম্বর বিকেলে দেওয়ানগঞ্জে ফিরে গিয়ে দোকানে যোগ দেন। পিন্টু খান জানান, তারা মিয়া তাঁদের পরিবারের লোকজনকে বলেছেন, রাত ১০টার দিকে সুমন কোনাবাড়ী থেকে বাসে করে টঙ্গীর দিকে রওনা হন। রাত ১১টার দিকে তিনি টঙ্গী পৌঁছার কথা তারা মিয়াকে জানিয়েছেন। কিন্তু সেই রাতে সুমন পুরান ঢাকার বাদামতলীতে ভাইয়ের বাসায় থাকার কথা ছিল। ইসলামপুর থেকেও কাপড় কেনার কথা ছিল তাঁর। পরিবারের সদস্যরা জানান, সেদিন সুমন গাজীপুরে এক লাখ ৯৭ হাজার টাকার কাপড় কিনেছিলেন। তাঁর কাছে আরো টাকা ছিল। রাজধানীর ইসলামপুরেও কাপড় কেনার কথা ছিল তাঁর। সে জন্য পুরান ঢাকার বাদামতলীতে ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। জানা গেছে, সুমন খান নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাবা আব্দুল খালেক খান গত ৭ নভেম্বর দেওয়ানঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ৯ নভেম্বর রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির উদ্ধার হয়। ওই ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে দেখে সুমনের পরিবার তাঁকে শনাক্ত করেন এবং পরে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত করেন। সুমনের ভাই রুবেল খান বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, ব্যবসায়ী সুমন খান হত্যাকাণ্ডে কে বা কারা জড়িত, তা এখনো জানা যায়নি। পরিবারসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত চলছে। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নিখোঁজ হওয়ার দিন সুমনের কাছে নগদ টাকা ছিল। তবে কত টাকা ছিল, তা পরিবারের কেউ জানত না। তদন্তে তাঁর কাছে থাকা টাকা, ব্যাংকে টিটি করে যে টাকা পাঠিয়েছিলেন এবং আরো যে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকার কাপড় কেনার প্রস্তুতি ছিল সেসব বিষয় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এমনও হতে পারে ওই টাকার জন্য তাঁকে অপহরণ করে হত্যা করা হতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 3 =