স্কয়ার হাসপাতাল যেন এক কসাইখানা

10
2572

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি, মারধর এবং বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এক্ষেত্রে রাজধানীর নামিদামী হাসপাতালগুলো এগিয়ে।

 

ইউনাইটেড হাসপাতালে বিরুদ্ধে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগের রেষ কাটতে না কাটতেই এবার স্কয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠলো এক প্রসূতি নারীকে জোর করে ডেলিভেরি করানো অভিযোগ। অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালে সাংবাদিকরা গেলে তাদের ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। রোগীর স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুক্রবার ডেলিভারির সঙ্গে সঙ্গে নবজাতককে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সোমবার (৯ এপ্রিল) সকালে চিকিৎসকরা ওই নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন। আইসিইউতে রেখে ৫ লক্ষাধিক টাকা বিল হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। এ সময় পরিবারটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে হাতাহাতির ঘটানাও ঘটে। ঢাকার পান্থপথে অবস্থিত এই হাসপাতালে এমনি অসংখ ঘটনা ঘটে থাকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নবজতাকের বাবা শাহবুদ্দিন টিপু (২৯) বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমার স্ত্রী তাসলিমা তারানুম নোভাকে চেক-আপের জন্য স্কয়ারে নিয়ে যাই। এ সময় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রেনুমা জাহান কয়েকটি চেক-আপ করিয়ে বলেন প্রসব বেদনা উঠলে তাকে হাসপাতালে আনতে। এ সময় অন্য এক ডাক্তার এসে বলে, আমার স্ত্রীকে ভর্তি করাতা হবে। আমি বলি আমার স্ত্রীর তো কোনো প্রসব ব্যথা নেই সেহেতু আমি ভর্তি করাবো না। কিন্তু এক প্রকার জোর করেই ডাক্তার আমার স্ত্রীকে ভর্তি করে প্রসব বেদনার জন্য ইনজেকশন দেয়। এরপর শুক্রবার আমার স্ত্রীকে ডেলিভারি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। অপারেশন থিয়েটার থেকে আমাকে জানানো হয় আমার বাচ্চা মারা গেছে। এরপরেও ডাক্তাররা আমার বাচ্চাকে আইসিইউতে রেখে দেয়। টিপু আরো অভিযোগ করে বলেন, কেন আমার স্ত্রীকে জোর করে ভর্তি করানো হলো। আর কেনই ডাক্তাররা ৫ লাখ টাকা নিয়ে এই চার দিন মৃত বাচ্চাকে আইসিইউতে রেখে ব্যবসা করলেন। প্রসূতির মামা মেজর (অবঃ) রেজা-উল-করিম বলেন, স্কয়ার হাসপাতালের অদক্ষতা, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না দেয়া ও ভুল চিকিৎসাতেই আমার ভাগ্নির মেয়ে মারা গেছে। ডাক্তারদের ইচ্ছামতো কেন আমার ভাগ্নিকে ডেলিভারি করানো হলো। আমার ভাগ্নি এবং ভাগ্নি জামাইয়ের অনুমতি ছাড়াই টাকার জন্য কেন ডাক্তাররা ডেলিভারি করানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি আরো বলেন, ‘স্কয়ার হাসপাতাল কি কসাইখানা?’এ ঘটনায় সোমবার দুপুরের দিকে রোগীর স্বজনদের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপরও চড়াও হয়। ঘটনার সময় স্কয়ার হাসপাতালের হেড অব ম্যানেজমেন্ট লে. কর্নেল (অব.) নুরুল আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের হাসপাতালের ঢোকার অনুমতি না দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। ডাক্তারদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, এই মুহূর্তে ডাক্তাররা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন না।

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 1 =