স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুমিল্লার লাকসাম থানায় দ্রুত বিচার আইনে ও বেআইনী সমাবেশ করে গাড়ী ভাংচুর সহ অগ্নিসংযোগ করার দায়ে গৃহীত মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী আব্দুল মান্নান মনুর বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার কাপ্তান বাজার এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বেপরোয় চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। কুমিল্লা থেকে পলাতক বিএনপির এই নেতা কাপ্তান বাজার ও ওয়ারী এলাকার আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে ভুক্তভোগী একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
এই নিয়ে স্থাণীয় আওয়মীলীগ সহ সাধারন ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান মনু ২০১৪ সালের ২৫ মে মহাসড়ক অবরোধ করে বেআইনী সমাবেশ করার সময় গাড়ী ভাংচুর সহ অগ্নিসংযোগ করার দায়ে লাকসাম থানায় ১৪ নং এফ আই আর-এ এহজাহারভুক্ত আসামী এবং ২০১০ সালে ১২ জুন লাকসাম থানা পুলিশের উপর হামলার অপরাধে দ্রুত বিচার আইনে ৬ নং মামলার এজাহারভুক্ত আসামী হওয়ার পরে পালিয়ে রাজধানী ঢাকায় চলে আসে। ঢাকা এসে আশ্রয় নেয় ওয়ারী এলাকার আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার বাড়ীতে। এই নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে মনু ধানের শীষের গান বাজানো বন্ধ করে সুর ধরে জয় বাংরা শ্লোলগানের। ধীরে ধীরে গড়ে তুলে ওয়ারী, কাপ্তান বাজার এলাকায় চাঁদাবাজীর রামরাজত্ব। ফুটপাতের পান দোনদার থেকে ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর পর্যন্ত চলে আসে মনুর চাঁদাবাজীর নিয়ন্ত্রনে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয় ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে। কাপ্তান বাজার এলাকার মনুর রয়েছে একটি মারদাঙ্গা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব প্রদানকারী সক্রিয় সদস্য ১৫ থেকে ২০ জন। এরা কাপ্তান বাজারের মুরগীর ব্যবসা, মাংসের দোকান, ফুটপাতের ফলের দোকান, চায়ের দোকান, রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, ঔষধ ব্যবসায়ী, ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর সহ বিভিন্ন রকমের ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে দৈনিক ১শ থেকে ৫শ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মাসিক ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকে। কোন ব্যবসায়ী মনু বাহিনীকে তাদের চাহিদার অতিরিক্ত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ঐ ব্যবসায়ীর উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। অথবা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয় বা এলাকা ছেড়ে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে হয়। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাপ্তান বাজারের এক মুরগী ব্যবসায়ী বলেন, প্রতি দিন মনু বাহিনীকে দুইশ টাকা করে চাদা দিতে হতো। কিন্তু গত ৩ মাস ধরে তাদেরকে প্রতি দিন ৪শ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। প্রথমদিকে প্রতি দিন ৪শ টাকা করে চাদা দিতে অস্বীকার করেছিলাম। এই জন্য আমাকে ১৭ দিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। পরে তাদের শর্ত মেনেই ব্যবসা চালাচ্ছি। এদেরকে চাঁদা না দিয়ে ঢাকা শহরে কেউ ব্যবসা চালাতে পারবে না। প্রতিবাদ করলে কেউ প্রান নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে না। ওয়ারী এলাকার এক ইউনানী ঔষধ ব্যবসায়ী বলেন, মাসখানেক আগে আব্দুর মান্নান মনু সহ ৮/৯ জন লোক আমার প্রতিষ্ঠানে এসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। না দিলে ব্যবসা গুটিয়ে গ্রামের বাড়ী চলে যেতে হবে। এই কথা কারোর কাছে প্রকাশ করলে আমকে প্রানে মেরে ফেরবে। এই ঘটনায় আমি আইনের সহযোগিতা নিতে পারিনি। পুলিশে সাথে মনু বাহিনীর গভীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। এতে আরো উল্টো আমাকেই বিপদে পড়তে হবে।
এদিকে ওয়ারী থানার ওসি বলেন, এধরনের ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে আমরা দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।