নৈতিক শিক্ষা মানব চরিত্রকে সুশোভিত করে

0
2458

লেখকঃ-এস ইবাদুল ইসলাম
চেয়ারম্যানঃ-জাতীয় ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি
বিশেষ প্রতিনিধিঃ-বাংলাদেশ আমেরিকান প্রেস সার্ভিস

মানুষ জন্মগত ভাবে “মানুষ” হিসাবে পরিচিত পেলেও মনুষ্যত্ব অর্জন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কবি গুরু রবীন্দ্র নাথের লেখা মনে পড়ে গেলোঃ-

ভালো-মন্দের দ্বন্দের মধ্য থেকে
ভালোকে বেছে নেবে বিবেকের দ্বারা,
প্রথার দ্বারা নয়। এই হচ্ছে “মনুষ্যত্ব”।

 

মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মূল্য বোধ্যের মধ্যেই মানুষের প্রকাশ। ¯েœহ, মায়া, মমতা, সহায়তা, ন¤্রতা, ভদ্রতা, সৌজন্য বোধ, মনুষ্যত্বকে বিকাশিত করে। শিক্ষার সাথে মনুষ্যত্বের সম্পর্ক নিবিড়। আর এই শিক্ষাই মানুষের বিকাশিত হওয়ার পথ। নিয়মে, কল্যানে সুন্দরে ভরিয়ে দেয় আমাদের জীবন। আপন মহিমায় আপন করে নেয়। মানবিক নৈতিকতা ছাড়া শিক্ষা সুফল আনতে পারেনা। আর মানবিক নৈতিকতা পূর্ন শিক্ষা মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত রাখে। নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের মাঝে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। নৈতিকতার স্বরুপ প্রকাশিত হয় সততা, ন্যায়পরায়নতা, আদর্শবাদী মনোভাবে। আমাদের সৎ ও সুন্দর জীবন যাপনের জন্য নৈতিক শিক্ষা অপরির্হায্য। মানুষের বড় সম্পদ হলো মূল্যবোধ। নৈতিক শিক্ষা নৈতিক মূল্যবোধের জন্ম দেয়। মানুষের আতিœক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ একান্ত জরুরী।

পরিবার থেকেই একটি শিশুর মূল্যবোধের শিক্ষা শুরু হয়। তাকে নানাভাবে শিখতে হয় এই মূল্যবোধ বিষয়টি। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজ থেকে প্রতিনিয়ত শিখে একজন আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে উঠে একটি শিশু। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যায় বেশির ভাগ ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই নৈতিক শিক্ষার অভাবে শিক্ষা গ্রহন করেও নানা অপর্কমে জড়িয়ে পড়ে কোন না কোন ভাবে। নানাবিধ উন্নয়নের মাঝেও মানুষ মানবতা ভুলে নিজের পশুত্বকে জাগিয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত।

প্রখ্যাত ব্রিটিশ কবি ও উপন্যাসিক স্যার উইলিয়াম গোল্ডিং বলেছেন “মানুষের আদিমতা ও হিং¯্রতা সহজাত, সেরকম বুনো পরিবেশে পেলে মানুষ তার সভ্যতার লেবাস খুলে হিং¯্র হয়ে উঠে। আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিক শিক্ষার অভাবে নৈতিক মূল্যবোধের ব্যপক অবক্ষয় শুরু হয়েছে অন্যায় করে কে কত বড় হতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলছে।

মানুষ নিষ্পাপ হয়ে পৃথিবীতে আসে এরপর বেড়ে উঠে এবং পুরো জীবনই শিক্ষা গ্রহন করে। কেউ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয় আর কেউবা কুশিক্ষা গ্রহন করে। তাই নৈতিক শিক্ষা মানব চরিত্রকে সুশোভিত করে। পরিবার থেকে শিশুর মধ্যে নৈতিকতা বোধ জাগ্রত করতে হবে। সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠার জন্য সুস্থ্য ও স্বাভাবিক পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। অভিভাবকদের আন্তরিকতা নিয়ে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পর্কে শিশুকে অবহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা বিকাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা হওয়া উচিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। জীবনকে সুখী ও সমৃদ্ধ করতে অবশ্যই নৈতিকতার মাধুর্যের উৎকর্ষ সাধন করতে হবে। নৈতিক শিক্ষার মধ্যে দিয়ে সমাজ জীবনের ন্যায়-নীতি, মানবিক মূল্যবোধ ও মহৎ আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে সত্য ও ন্যায় কর্মে সচেতনতার জোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। অধ্যবসায় থাকতে হবে। আর মানবজীবনের মূল লক্ষ্য হলো প্রকৃত শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষা তথা মনুষ্যত্ব অর্জন। আর এর মাধ্যমেই সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র ও জাতি বিবেদ অন্যায়-অনিয়ম ও অবিচার ভুলে দেশাতœবোধের মহাসমাবেশ ঘটাতে পারবে। কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতাকে অক্ষুন্ন রাখতে হলে বিবেদ ভুলে দেশের উন্নয়নকে প্রসারিত করতে মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে সর্বাগ্রে। আমরা চাই নতুন করে অর্থনৈতিক বিপ্লব যা আনবে দেশ ও দশের উন্নয়ন ও ভাগ্যের পরিবর্তন সে লক্ষেই, আসুন আমরা জনমত নির্বিশেষে এক হয়ে কাজ করার অঙ্গিকার করি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

14 + four =