Site icon Aparadh Bichitra

সৌহার্দ্যপূর্ণ সফরেই দিল্লি যাচ্ছি-পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অবি ডেস্কঃ বিশেষ কোনো ইস্যু নিয়ে আলোচনা নয়, বরং সৌহার্দ্যপূর্ণ সফরে ভারত যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। রোববার সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। দেশটির সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং সেটি অত্যন্ত উষ্ণ।

 

সেই সম্পর্ক ধরে রাখতে এবং দিল্লির আমন্ত্রণে সাড়া দিতেই প্রথম বিদেশ সফরে ভারত যাচ্ছি। দিল্লি সফরে তিস্তা বা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা হবে কি-না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিষয় আসতে পারে। তবে এসবের কোনো কিছুই মুখ্য নয়, আমি যাচ্ছি সৌহার্দ্যপূর্ণ সফরে। উল্লেখ্য, ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের আমন্ত্রণে আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি দিল্লি যাচ্ছেন নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। ৭ই জানুয়ারি নবগঠিত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর এটাই হবে তার প্রথম বিদেশযাত্রা।
সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার ফোরাম জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশন জেসিসি’র বৈঠকে নেতৃত্ব দেয়া ছা্‌ড়াও দেশটির শীর্ষ পর্যায়ে তার সৌজন্য এবং পরিচিতিমূলক সাক্ষাৎ হতে পারে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেসিসি বৈঠকের এজেন্ডা বা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাক্ষাতের অ্যাপয়েনমেন্ট চূড়ান্তকরণের আলোচনা চলছিল।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত ও জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, মন্ত্রী যা বললেন- এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের আগে ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখভালে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ দূত ইয়াং হি লি এবং পরে জাপানের রাষ্ট্রদূত মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। দুই দূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়েও সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রী। জাপানের রাষ্ট্রদূতকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী বলেন, আমরা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাদাভাবে কথা বলেছি। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উভয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি বড় সমস্যা। আমরা এর জরুরি সমাধান চাই। দূতদ্বয়ের সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন জানিয়ে নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা বলেছি তা হলো এ সংকট দ্রুত সমাধানে সবার দায়িত্ব রয়েছে। বাংলাদেশ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এখন তাদের নিরাপদে রাখাইনে ফেরত পাঠানো নিশ্চিত করতে বিশ্বের সবার জোরালো ভূমিকা রাখা উচিত। এ সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এতে মিয়ানমারের সমস্যা হবে, বাংলাদেশেরও সমস্যা হবে। প্রতিবেশী ভারত, থাইল্যান্ডসহ গোটা অঞ্চলই এ সমস্যার মুখে পড়বে। আর চীন, হয়তো তাদের উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারবে না। তাই আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই। অপর এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কও ভালো। মিয়ানমারের যিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই মন্ত্রীর সঙ্গে ইউএনএ আমি কাজ করেছি। আমি যেটা মনে করি আমাদের সম্পর্কের মধ্যে ছোট্ট ওই বিষয়টি আমাদের কষ্ট দিচ্ছে। তাদের ১১ লাখ লোক আমাদের দেশে পড়ে আছেন। আমরা চাই- এটা তারা সমাধানে এগিয়ে আসবেন। মিয়ানমারের তরফে সাড়া পাচ্ছেন কি-না? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, না, তা না, তবে প্রসেসটা স্লো। এতে তিনি হতাশ কি-না? এই প্রশ্নও আসে। মন্ত্রী বলেন, না আমি আশাবাদী মানুষ। আমি মনে করি যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে এর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। জাতিসংঘ দূত ইয়াংহি লি কে প্রত্যাহারে মিয়ানমার চিঠি দিয়েছে। তাকে মিয়ানমার স্বাগত জানায় না। এ অবস্থায় বেকায়দায় থাকা এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাংলাদেশ কি সাপোর্ট আশা করে? জবাবে মন্ত্রী বলেন, লি অত্যন্ত রিনাউন্ড প্রফেসর। তাকে আজ মিয়ানমার ঢুকতে না দিয়েও কাল আমন্ত্রণ করে নিয়ে যেতে পারে। বিশ্বে কোনো কিছুই স্থির না। লি ভাষানচর যেতে চান মর্মে যে খবর বেরিয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তাকে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু বলেছি সেখানে কাজ চলছে তা শেষ হওয়ার পর বিশ্ব সম্প্রদায়ের সব প্রতিনিধিকে নিয়ে যাওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো কিছুই গোপন করছি না। আমরা ওপেন। সংকট সমাধানে আমরা আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক সবার সহযোগিতা চাই।