রাতের বেলা ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখো না-আকরাম হোসাইন

0
540

অবি ডেস্ক: ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনকে উদ্দেশ করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, ‘ভিপি-জিএস তো তোমরাই হবা, দেইখো ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখো না।’

 

সোমবার ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর প্লাটফর্ম ‘পরিবেশ পরিষদ’র সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতবিনিময় সভা শেষে এ কথা বলেন ছাত্রদল নেতা। সভা শেষে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে বের হন। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের হাত ধরে ছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম কর্মী ও দলীয় অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ আলোচনা দেখা যায়। পরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের শীর্ষ এই দুই নেতা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন। এ ছাড়া উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তারা। ফেরার পথে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনকে দেখলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভিপি-জিএস তো তোমরাই হবা, দেইখো ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখো না।’

এ সময় সেখানে হাস্যরসাত্মক পরিবেশ তৈরি হয়। পরে স্মৃতি চিরন্তনে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেলে তুলে দিয়ে বিদায় জানান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। প্রার্থী ও ভোটার হওয়ার যোগ্যতা ইস্যুতে ছাত্রলীগে ভিন্ন মত সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই। আমরা আমাদের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আমরা তার পক্ষে থাকব।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামন। এ সময় প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামালসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী।

এ সময় ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের দুই অংশ, জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের দুই অংশ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্রমৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র আন্দোলনসহ ১৪টি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, এই ডিজিটাল যুগে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম হলকেন্দ্রিক তাই ভোট কেন্দ্র হলে করা হোক। সহাবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে কিন্তু ছাত্রদলকে ইতিবাচক ধারায় আসতে হবে। তাহলে তারা সহাবস্থান করতে পারবে । বয়স নিয়ে রাব্বানী বলেন, যে কেউ প্রার্থী হতে পারে। তবে তাদের বয়সসীমা ত্রিশ হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল অন্তর্কোন্দলের কারণে ক্যাম্পাস ছেড়েছে। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা প্রভোস্টের মাধ্যমে হলে থাকলে আমাদের সমস্যা নেই।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, ছাত্রদলসহ সব ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি করা হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থিতার ক্ষেত্রে যারা ডাকসুর ফি প্রদান করেন, তাদের সবাইকে সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না। ভোট কেন্দ্র একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করতে হবে। পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে নির্বাচনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হবে।

তার পাশে উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা ছাত্রলীগ নেতারা, আমাদের নেতাকর্মীদের, ক্যাম্পাসে এলে, বিভিন্ন সময় মারধর করে।

তিনি ডাকসুর সভাপতির (ভিসি) ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রী করারও দাবি জানান। এ সময় ছাত্রদল নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে যাবে বলে ঘোষণা দেন আকরাম হোসাইন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × one =