দুই ভাইয়ের বুকের মাঝে ছিল সন্তান

0
709

অবি ডেস্কঃ পুরান ঢাকার চকবাজারের পাঁচটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দ কুমার দত্ত সড়কের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে।

 

প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের লাশ উদ্ধার হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতেই একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিথর ঝলসানো দেহ।

রাতেই ধ্বংসস্তুপ থেকে একে অপরকে জড়িয়ে থাকা দুইজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকারী সদস্যরা। এ অবস্থায়ই একটি বডি ব্যাগে (মরদেহ যে সাদা ব্যাগে করে বহন করা হয়) করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে পাঠানোর পর দেখা যায়, দুই ভাইয়ের মরদেহের মাঝে রয়েছে একটি শিশুর মরদেহ। পরে একই পরিবারের এই তিন সদস্যের মরদেহ শনাক্ত করেছেন ছোট ভাই ইদ্রিস।

স্বজন হারানোর শোকে ঢামেক মর্গে ঢুকরে কাঁদছিলেন ইদ্রিস। বলছিলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে কাজ শেষে তারা তিন ভাই অপু, আলী ও ইদ্রিস দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইদ্রিসের এক বন্ধুর ফোন পেয়ে দোকানের চাবি বড় ভাইদের বুঝিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়। পাশেই খেলা করছিল বড় ভাই অপুর (৩২) তিন বছরের ছেলে আরাফাত। এমন সময় ঘটে বিস্ফোরণ, ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মারা যায় এই পরিবারের তিন সদস্য।

আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই হয়তো দুই ভাই আরফাতকে মাঝে রেখে একে অপরকে জড়িয়ে রেখেছিলেন বলে ধারণা করছেন ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

একই পরিবারের এই তিন সদস্যের মরদেহ শনাক্ত করেছেন ছোট ভাই ইদ্রিস। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে মরদেহগুলো শনাক্ত করেন তিনি। স্বজন হারানোর শোকে ঢামেক মর্গে ঢুকরে কাঁদছিলেন ইদ্রিস। বলছিলেন, ‘এখন আমাকে শাসন করবে কে? ইদ্রিস জানান, ওয়াহিদ মঞ্জিলে তাদের কেমিক্যালের দোকান ছিল। সেখানেই পুড়ে মারা গেছেন তার বড় ও মেঝ ভাই। সঙ্গে মারা গেছে তার বড় ভাইয়ের ছেলে আরাফাত।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 − 1 =