প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

1
564

স্কুলের আয়ের ৫৯ লাখ টাকা নিয়ম অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন চট্টগ্রামের ইমরাতুননেছা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা বেগম।

 

তিন বছরে এ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এবার তার বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তবে ফেরদৌস আরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত বিদ্যালয়টির তিন বছরে আয়ের একটি বড় অংশই তিনি হিসাব বিভাগে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। পরে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। মামলা চলাকালে তিনি ফিরোজশাহ কলোনি সিটি করপোরেশন স্কুলে বদলি হন। পরে সেই স্কুল থেকেই তিনি এলপিআরে যান। জানা গেছে, অনিয়মের বিষয়টি চসিকের সংশ্নি ষ্টদের নজরে আসে ২০১৭ সালের শেষের দিকে। স্কুলের আয় চসিকের হিসাব বিভাগে জমা না হওয়ায় সে সময় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ে নোটিশের জবাব না দেওয়ায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় সংশ্নিষ্টদের। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েক দফা নোটিশ দেওয়া হয় ওই শিক্ষিকাকে। এসবের কোনো জবাব না পাওয়ায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, কমিটি তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে প্রায় ৫৯ লাখ টাকার অনিয়ম পায়। কমিটি এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে। চসিক এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, ‘স্কুল শিক্ষিকার অনিয়মের বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে আমরা পিলে চমকানোর মতো তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষিকা স্কুলের আয়ের টাকা নয়ছয় করেছেন। আয়ের সম্পূর্ণ টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন তিনি। কোনো মাসে স্কুলের আয় হয়েছে এক লাখ টাকা। কিন্তু সেখানে তিনি জমা দিয়েছেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এভাবে আমরা প্রায় ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনটি সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’তিনি জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা এলপিআরে রয়েছেন। তাই তার প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, ছুটির টাকাসহ নানা খাতে পাওনা সমন্বয় করে আত্মসাৎ করা টাকাগুলো উদ্ধার করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ূয়া বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষিকা স্কুলের আয়ের টাকা মেরে দিয়েছেন বলে জেনেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাকাগুলো উদ্ধারের জন্যও নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে ফেরদৌস আরা বলেন, ‘বিষয়টি সঠিক নয়। এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। চসিকের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। বিষয়টিতে সমঝোতা করা হচ্ছে। এত টাকা কীভাবে আত্মসাৎ করা যায়? শোকজের জবাব না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, তখন তিনি ঝামেলায় ছিলেন। তাই জবাব দিতে পারেননি।

 

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen + four =