নকল প্রসাধনী চকবাজার হয়ে যাচ্ছে সারাদেশে!

0
1289

বিশ্বের নামিদামি প্রসাধনী কোম্পানির নাম ও লোগো সম্বলিত পিভিসি টিউব, স্টিকার, ক্যান ও বিভিন্ন সাইজের খালি মোড়ক চীন থেকে কন্টেইনার যোগে আসছে চিটাগাং ও পানগাঁও পোর্টে।

 

সেখান থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয় কেরানীগঞ্জের জিনজিরায়। তারপর সেসব টিউব, ক্যান ও মোড়কে নকল প্রসাধনী তৈরি করে ভরে ভেজাল প্রসাধনী কারখানার মালিকরা পাঠিয়ে দেন পুরান ঢাকার চকবাজারে। জিনজিরায় তৈরি এসব নকল প্রসাধনী চকবাজারের চম্পাতলী ও চুড়িহাট্টায় গোডাউনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করেন এক শ্রেণির অসাধু কসমেটিকস ব্যবসায়ী। প্রশাসন প্রায়ই কেরানীগঞ্জের এসব নকল প্রসাধনী কারখানায় অভিযান চালিয়ে মালিকদের জেল-জরিমানা করলেও স্থায়ী ভাবে এসব কারখানা বন্ধ করতে পারছে না। শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জিনজিরায় বিভিন্ন স্থানে নিভিয়া, ভেসলিন, ফেয়ার এন্ড লাভলী, ডাভ, সানসিল্ক, গার্নিয়ার, হিমালয়, ক্লিন এন্ড ক্লিয়ার, পেনটিন, হ্যাভক প্রভৃতি নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী তৈরি হচ্ছে। এসবের মোড়কে মেড ইন আমেরিকা, দুবাই, ইউকে, ভারত প্রভৃতি দেশের নাম লেখা রয়েছে। চকবাজারের মাহমুদ এন্ড ব্রাদার্স এর এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাজী একরাম উল্লাহ মার্কেট, ওয়াহেদ ম্যানশন, মুনসুর খান প্লাজা, দেলোয়ার প্লাজা, খান মার্কেট, তাজমহল মার্কেট, খাতুন মার্কেট, আশিক টাওয়ার, জাহাঙ্গীর মার্কেট থেকে নকল প্রসাধনী বিক্রেতাদের আটক করলেই জানা যাবে ওইসব মার্কেটে কারা নকল প্রসাধনী সাপ্লাই দিচ্ছে। চকবাজারের প্রসাধনী আমদানিকারক হাজী এমডি মাইনুল জানান, সরকার চট্টগ্রাম ও পানগাঁও নৌ পোর্টে আসা কন্টেইনারগুলো আটকে দিলে নকল প্রসাধনী তৈরি বন্ধ হবে। তিনি আরো বলেন, পুলিশ দিয়ে তাদের ধরা যাবে না কারণ তারা নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে নকল প্রসাধনী কারখানা মালিকদের সহযোগিতা করে থাকে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহে এলিদ মাইনুল আমিন জানান, প্রশাসন ও র্যাব যৌথভাবে কয়েকদিন পরপরই কেরানীগঞ্জের নকল প্রসাধনী ও পণ্য তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করে। এরকম কোনো কারখানার সন্ধান পেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি র্যাবের উপ-পরিচালক মেজর আশ্রাফুল হক ও বিএসটিআইর কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানসহ র্যাব-১০ এর একটি টিম কেরানীগঞ্জ মডেল থানার নেকরোজবাগ ও পটকাজোরের তিনটি নকল প্রসাধনী কারখানায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই মাসের সাজা প্রদান করে। পরে তারা কারখানা তিনটি সিলগালা করে দেয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + 15 =