যারা কথা কম বলেন তারা চিন্তা বেশী করেন

0
622

আচ্ছা, আপনি কি কথা বেশী বলেন? অনেকেই এই প্রশ্নের উত্তরে “না” বলবেন। কারণ সত্যিকার অর্থেই যারা কথা বেশী বলেন তারা কখনো বুঝতেই পারেন না তারা বেশী কথা বলছেন।

 

কথা বেশী বললে অযথা কথা চলেই আসে যা বিরক্তিই উৎপাদন করে থাকে সামনের মানুষটির মনে। আর এছাড়াও বেশী কথা বলা মানুষের জন্য আরেকটি দুঃসংবাদ রয়েছে। আর তা হচ্ছে, যারা কম কথা বলেন তারা অনেক বেশী বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন। এর অর্থ হচ্ছে যারা বেশী কথা বলেন তারা নিজেদের অযথা কথা দিয়ে মানুষকে বিরক্ত তো করছেন ঠিকই, সেই সাথে নিজেকে কম বুদ্ধিমান মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করছেন। কিন্তু ঠিক কী কারণে কম কথা বলা মানুষেরা বেশী বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন, তা জানেন কী? চলুন জেনে নেয়া যাক।

১) যারা কথা কম বলেন তারা চিন্তা বেশী করেন। আর অনেক ক্ষেত্রেই কথা কম বলে চুপচাপ থাকার অর্থ হচ্ছে তারা মনে মনে চিন্তা করে চলেছেন। একটি আলোচনার মধ্যে সবাই যখন কথা বলেন তখন একজন কম কথা বলা মানুষও কথা বলতে আগ্রহী হন, কিন্তু তার কথা বলা শুরু করতে বা কিছু বলার প্রধান অন্তরায় হচ্ছে তিনি সকলের কথা শোনেন এবং চিন্তা করতে বেশী পছন্দ করেন। আর এই চিন্তা করার ক্ষমতাটিই কম কথা বলা মানুষকে বুদ্ধিমান করে তোলে।

২) যারা চুপচাপ বেশী থাকেন এবং কথা কম বলতে পছন্দ করেন তারা লেখেন ও পড়েন বেশী। তারা তাদের এনার্জির সবটুকু ব্যয় করতে চান কোনো গঠনমুলক কাজে। তারা সৃজনশীল কাজ করতেও বেশী পছন্দ করেন। আর এতে তাদের বুদ্ধি ধারালো হতে থাকে। যারা বেশী কথা বলেন তাদের মধ্যেই এই বিষয়টি বেশ কম নজরে পড়ে।

৩) এএআরপি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়, ‘কম কথা বলার বিষয়টি মস্তিষ্কের জন্য ভালো এতে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা সঠিক থাকে এবং কোনো কথা বলার আগে চিন্তা করে নেয়ার সুযোগ পাওয়া যায়’। যারা চুপচাপ বেশী থাকেন তাদের মস্তিষ্ক অনেক দ্রুত কাজ করে এবং তারা নিজেকে শান্ত রেখে অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা করে কোনো একটি ব্যাপারের ক্ষেত্রে নিজেদের মত প্রকাশ করে থাকেন। আর চিন্তা করে কথা বলার এই বিষয়টিই বুদ্ধিমান মানুষের পরিচায়ক।

৪) ‘সান্টেফিক আমেরিকা’র একটি ইন্টার্ভিউয়ে ‘কোয়াইট: দ্য পাওয়ার অফ ইন্ট্রোভার্টস’ এর লেখক সুসান কেইন বলেন, ‘অন্তর্মুখী বৈশিষ্ট্য এবং লজ্জার কারণে চুপ থাকার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যারা লজ্জা পান তারা নিজের কথার বিপরীতে নেতিবাচক কিছু ব্যাপারে কথা শুনতে লজ্জিত বোধ করেন বলেই চুপ থাকেন, কিন্তু যারা অন্তর্মুখী স্বভাবের তারা অন্যের কথা শুনে তা নিয়ে ভাবতে এবং শিক্ষা গ্রহনেই বেশী ব্যস্ত থাকেন’। চুপচাপ থাকা মানুষ অন্যের কথা শুনে তা থেকে জ্ঞান নেয়ার চেষ্টা করেন এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন কিছু শিখতে নিজেকে প্রস্তুত করে নেন। অপরদিকে কথা বেশী বলা মানুষেরা শুধুমাত্র উলটো উত্তর ও আরও একগাদা কথা বলার জন্যই মুখিয়ে থাকেন এবং তেমন কিছুই শেখার চেষ্টা করেন না।

৫) বুঝে শুনে ও স্থান, কাল, পাত্র বিবেচনা করে কথা বলাটা জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানের পরিচয় প্রকাশ করে। এক্ষেত্রেও যারা অনেক কম কথা বলেন তারা যতোটুকুই কথা বলুক না কেন অনেক ভেবে চিন্তে বলেন। যারা কম কথা বলেন তারা মস্তিষ্কে তাদের কথা সাজিয়ে তারপর তা মুখে বলে প্রকাশ করে থ্যাকেন। অপরদিকে বেশী কথা বলার মানুষেরা অনেক সময় নিজেরাও সঠিক বুঝতে পারেন না তারা কি কথা বলছেন। সুতরাং এখানেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

14 − ten =