ম্পার ফলনে তরমুজ চাষীদের মুখে হাসি

0
1084

কামরুল হাসান রুবেলঃ আগাম তরমুজ চাষে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে।আকারেও বড়, সঙ্গে দামও মিলছে ভাল।এবারের গরমে তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে।সর্বোপরি আগাম ফলনে লাভ হবে তিনগুন। এমন পরিস্থিতিতে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা ও তার আশপাশের চরাঞ্চলে তরমুজ চাষীদের মুখে রোদের ঝলমলে হাসি। সরোজমিনে গিয়ে কথা হয়,জিয়ারাম খুলা পাড়া ইউনিয়নের রুস্তম আলী সাথে তিনি বলেন, এ বছর আড়াই কানি জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে।এ বছর আগাম তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই একবার দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে। যদিও চাষে মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল। তাছাড়া ক্ষেতে থাকা তরমুজের আকারও বড় হচ্ছে।

ঠিক মতো পরিচর্যা করায় এক একটি তরমুজ প্রায় দশ কেজি অবধি ওজনের হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এ মাসের শেষের দিকে প্রায় ৬০০ তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। তখন সাইজে ছোট হবার পাশাপাশি প্রতিটি তরমুজের দাম কমে যাবে। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই এলাকায় আগে তরমুজ চাষ হতনা। গ্রামের কিছু বাসিন্দা পাশ্ববর্তী গলাচিপা, রাঙ্গাবালী উপজেলায় শ্রমিকের কাজ করতে যেত। সেখানে তাঁরা তরমুজ চাষের পদ্ধতি শিখে গ্রামে ফিরে চাষ শুরু করে। চাষিরা জানায়, এপ্রিলের আগে তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয় না। কিন্তু এ বছর আগেভাগেই চাষ হয়েছে। ফলনের পাশাপাশি ওজনো হয়েছে বেশ। সব মিলিয়ে খরচের টাকা ইতোমধ্যেই সামান্য বিক্রিতে উঠে এসেছে। গতবছরের থেকে লাভও হয়েছে অন্তত তিনগুন। সাধারনত মাঘ মাসের শুরু থেকে চাষ শুরু হয়। তখন নদী শুকিয়ে আসতে থাকে। চাষ হয় বালুচর এলাকায়। চাষিরা জানান, নদীর পলি মাটিতে তরমুজ বা শসা চাষ ভাল হয়। সামান্য সারেই জমি তৈরি হয়ে যায়। ২০০ গ্রাম (২ হাজার ২০০) তরমুজ বীজের দাম দুই হাজার ৬৫০ টাকা। এক একর জমিতে বীজ ছড়ানোর পর সার দিতে হয়। সার কিটনাশকের সঙ্গে রয়েছে জমি তৈরির জন্য ট্রাক্টর এবং সেচের জল তোলার খরচ। সব মিলিয়ে এক একর জমি চাষ করতে খরচ পড়ে ২৮ হাজার টাকা। আর প্রতি একরে লাভ মেলে গড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা। চাষিরা জানালেন, এ বছর কলাপাড়া,গলাচিপা, রাঙ্গাবালীর, বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি করে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষেতে বসেই ছোট-বড় ধরনের প্রতিটি তরমুজ গড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কলাপাড়ার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ঢাকার পাইকারী বাজারে তরমুজ সরবরাহ করেন। সেখানে পাইকারি হারে তরমুজের দ্বিগুন দাম পাওয়া যায়। তার মতে অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীই চরাঞ্চল থেকে তরমুজ ঢাকায় পাঠান। চাষি লুৎফর রহমান বলেন, গত বছর শিলা বৃষ্টিতে চাষের খুব ক্ষতি হয়েছিল। তরমুজ বড় হয়নি। ছোট আকারের তরমুজের জন্য ভাল দাম পাওয়া যায় না। তাছাড়াও শিলা বৃষ্টিতে তরমুজের গায়ে দাগ পড়েছিল। অনেক তরমুজ ফেটেও গিয়েছিল।এবছর হালকা শিলাবৃষ্টি হলেও তরমুজের কোন ক্ষতি হয়নি। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিরুওম কুমার সরকার বলেন, এখানকার অধিকাংশই মত্জীবি। এক সময় তারা বেকার থাকতেন। তখন জেলেরা অন্য জেলা থেকে তরমুজ কিনে এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন। এখন কলাপাড়ার অনেক জায়গায় চাষ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকেই ট্রাকে করে ঢাকাসহ অন্য জায়গায় তরমুজ চালান যায়। তরমুজের পাশাপাশি নানা সব্জি এবং শসা চাষ হচ্ছে চরাঞ্চলে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × two =