রাষ্ট্রপতির ছেলের নাম ভাঙ্গিয়ে সিএনএন বাংলাটিভির পরিচালক শাহিন আল মামুনের প্রতারনা অব্যাহত

0
7146

স্টাফ রিপোর্টারঃ মহামান্য রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এর ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক কে সিএনএন বাংলা টিভির চেয়ারম্যান সাজিয়ে সর্বসাধারনের সাথে প্রতারনা করে চলছে সিএনএন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিন আল মামুন। সম্প্রতি এ বিষয়ে অপরাধ বিচিত্রা রাষ্ট্রপতির ছেলের নাম ভাঙ্গিয়ে সিএনএন বাংলা টিভির প্রতারনা শিরোনামে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করলে প্রতারক শাহিন আল মামুনের মুখোশ খুলে যায়।

 

তবে তার প্রতারনা কিন্তু এখনো থেমে নেই, প্রতারনার কৌশল হিসেবে এবার বেছে নিয়ে দেহ ব্যবসায়ী নারী, মানুষের ভোটার আইডি কার্ড জালিয়াতি, কাজী অফিসের সিল, স্বাক্ষর নকল, পত্রিকার সম্পাদকের স্বাক্ষর নকল ও প্রশাসনিক লোকজনের নাম ঠিকানা, সিল, স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া সনদপত্র তৈরি করে বিভিন্ন দপ্তরে উপস্থাপন সহ নানা ধরনের প্রতারনা। আর এসব প্রতারনার ফাঁদে ফেলে সাধারন মানুষের নিকট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। সম্প্রতি প্রতারক শাহিন আল মামুন এক সিনিয়র সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তার ভাড়াটিয়া নারীর মাধ্যমে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে কোর্ট থেকে ঐ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদাও দাবী করেছে। ১০ লাখ টাকা চাঁদা পেলে শাহিন আল মামুন ঐ সাংবাদিকের নামের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে তদ্ববির করে যাচ্ছে। কিন্তু ঐ সাংবাদিক মামলাটিকে চ্যালেঞ্জ করে বাদীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা প্রস্তুতি নিয়েছে, যাতে প্রতারক শাহিন আল মামুন সহ তার পুরো প্রতারক চক্র ধরা পড়ে।
ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, শাহিন আল মামুনের সহযোগি রত্না আক্তার (৩২), পিতার নাম- আঃ লতিব, মাতা নাম-মাতার নাম- জহুরা বেগম, জন্ম তারিখ-২০/৯/১৯৮৭, সাং গ্রাম+পোঃ-ডগাই,ডেমরা, ঢাকা-১২১২, ভোটার আইডি কার্ড নং-৭২১৪৭৮১০৯১০৭৮। কিন্তু ডেমরা থানার ডগাই এলাকার ৬৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিসে খোজ নিয়ে এই নামের কোন ভোটারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। যার প্রত্যায়নপত্র অপরাধ বিচিত্রার কাছে জমা আছে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটার আইডি কার্ড নং-৭২১৪৭৮১০৯১০৭৮ সার্চ করে রত্না আক্তার নামের কোন ভোটারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অথচ রত্না আক্তার এই ভোটার আইড কার্ডের তথ্য ব্যবহার ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে সাংবাদিকের নামে আদালতে মামলা করে শাহিন আল মামুনের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য।
শাহিন আল মামুনের নির্দেশে রত্না আক্তার আদালতে মামলা করার সময় যেই কাবিননামা ব্যবহার করেছে, তাতে নারায়গঞ্জের ফতুল্লা কাজী অফিসের ঠিকানা, কাজীর সিল, স্বাক্ষর, বরের স্বাক্ষর নকল, ভুয়া উকিল, ভুয়া স্বাক্ষী ব্যবহার করে কাবিননামা তৈরি করেছে। কারন কাবিননামা ছাড়া আদালতে যৌতুকের মামলা করা যায় না। তাই শাহিন আল মামুন রত্না আক্তারকে কিছু টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনে এই ধরনের ভুয়া কাবিননামা তৈরি করেছে। রত্না আক্তার কে, কোথায় থাকে, একমাত্র মাত্র শাহিন আল মামুনই ভালো জানে। একটি সুত্র জানায়, রত্না আক্তার শাহিন আল মামুনের ৪ নাম্বার স্ত্রী। মানুষকে ফাসানোর কাজেই তাকে ব্যবহার করা হয়।
কাবিননামার সুত্র ধরে ফতুল্লা কাজী অফিসে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মামলায় উল্লেখিত কাবিননামাটির কোন অস্তিত্ব নেই। এব্যাপারে ফতুল্লা কাজী অফিসের কাজী ফারুক আহমদ বলেন, ২৫/০১/২০১৫ ইং তারিখে আমার অফিসে রতœা আক্তার নামে কোন বিধবা মহিলা বিবাহ রেজিষ্ট্রিশন হয় নাই। অথচ আমার অফিসের নাম ঠিকানা সিল স্বাক্ষর ব্যবহার করে এই কাবিননামা তৈরি করা হয়েছে। এই কাবিননামাটি সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট। একটি প্রতারক চক্র মানুষকে ফাঁেদ ফেলার জন্য এই ধরনের ভুয়া কাবিননামা করেছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার।
এদিকে কাবিননামায় বরের স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে, সত্যিকারে কাবিননামায় বরের স্বাক্ষর, স্বাক্ষীর স্বাক্ষর, উকিলের স্বাক্ষর, কাজীর স্বাক্ষর সহ পুনাঙ্গ নাম ঠিকানা উল্লেখ থাকা আবশ্যক। কিন্তু বরের স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে, স্বাক্ষী, উকিল, কাজী সহ কারোই কোন অস্তিত্ব নেই। বিবাহ পড়ানো ব্যক্তিকে দেখানো হয়েছে কাজী অফিসের স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমানকে। কিন্তু ঐ ঠিকানায় মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান নামে কোন মাওলানার অস্তিত্ব খুজে পাওয় যায়নি। কাবিননামার স্বাক্ষীদের ঠিকানা অনুযায়ী কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি। ভুয়া কাবিননামার বিরুদ্ধে কাজী ভুক্তভোগি বরকে একটি প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করেছে।
অথচ শাহিন আল মামুন ভাড়াটিয়া মহিলা দ্বারা এই ধরনের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে যৌতুকের মামলা দিয়ে ঐ সাংবাদিকের নিকট মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে আসছে। সিএনএন বাংলা টিভির সাংবাদিকতার মুখোশ পড়ে প্রতারক শাহিন আল মামুন হাজার হাজার মানুষকে সর্বসান্ত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহিন আল মামুনের প্রতারনার শিকার তার এক ব্যবসায়িক পার্টনার বলেন, মেয়ে মানুষের ফাঁদে ফেলে তার নিকট থেকে ২৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মামুন। মামুন খুব খারাপ লোক তার অফিসে ৮/১০ দেহ ব্যবসায়ী নারী আছে, যারা মামুনের নির্দেশে কাজ করে। অল্প কিছু টাকা পেলে তারা যে কোন মানুষকে প্রতারনার ফাদে ফেলে দেয়। আরা কৌশলে টাকা পয়সা লুটে নেয়।
ভুক্তভোগি সাংবাদিক জানান, বিষয়টি নিন্দনীয়। মামলাটি আদালতের মাধ্যমে সমাধান করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শাহিন আল মামুনের মুখোশ খুলে দেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen + 2 =