সিরিয়ার যুদ্ধে শক্তিধর দেশগুলোর কাছে কি ধরনের অস্ত্র আছে?

0
497

সিরিয়ায় যৌথ হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। তারা তিনটি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

 

অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে সমর্থ হয়েছে।এখন একটা প্রশ্ন সামনে এসেছে। সিরিয়ার যুদ্ধে শক্তিধর দেশগুলোর কাছে কি ধরনের অস্ত্র আছে? আর রাশিয়া এবং সিরিয়া তাদের জবাব কীভাবে দিতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেট ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যেই ভূমধ্যসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস ডোনাল্ড কুক অবস্থান করছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে যুদ্ধের আঘাত এড়াতে দেশটি সিরিয়ার স্থাপনাগুলোতে ক্রুজ মিসাইল দিয়ে আঘাত করতে পারে। এর ফলে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না। এছাড়া যুদ্ধবিমান বহনকারী বেশ কিছু যুদ্ধজাহাজও পারস্য উপসাগরে মোতায়েন করছে মার্কিন নৌবাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে কাতারে। এখানে রয়েছে আছে এফ-১৬ জঙ্গিবিমান। এছাড়াও রয়েছে সাবসনিক বি-৫২ বোমারু বিমান। যুদ্ধবিমানটিকে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে আগেও ব্যবহার করেছে।

যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা বাজেট পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। দেশটির যুদ্ধবিমান সাইপ্রাসে রাফ এক্রোতিরি ঘাঁটিতে অবস্থান করছে। সেখানে ব্রিটেনের আটটি সুপারসনিক টর্নেডো যুদ্ধবিমান রয়েছে। সম্প্রতি এগুলোতে আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটেনের মনুষ্যবিহীন ১০টি বিমান আছে। এগুলোকে রিপার ড্রোন বলা হয়। ইরাক ও সিরিয়ার যুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের আছে নজরদারি বিমান রিভেট। যেকোনো ধরনের আবহাওয়ার মধ্যে এটি কাজ করতে পারে।

ফ্রান্স

ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা বাজেট ৩৪০০ কোটি মার্কিন ডলার। ফ্রান্সের নৌবাহিনীর রয়েছে পরমাণু শক্তি পরিচালিত এয়ারক্রাফ্ট কেরিয়ার শার্ল দ্য গল। এটি অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা বহন করতে পারে। একই সঙ্গে ১৯শ সেনাও বহন করতে পারে এই এয়ারক্রাফ্ট কেরিয়ার। ফ্রান্স জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে তারা বেশ কিছু মিরাজ ও রাফাল বিমান মোতায়েন করেছে। সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে তারা এগুলো ব্যবহার করেছে।

সিরিয়া

সিরিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ২৫শ কোটি মার্কিন ডলার। সম্প্রতি ইসরাইলের হামলায় সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়ার রয়েছে এসএ-৫ গামন বিমান হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি সম্প্রতি উন্নত করা হয়েছে। এর ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র খুব দ্রুত যেকোন যুদ্ধবিমানকে আঘাত করে মাটিতে নামিয়ে আনতে পারে। সঙ্গে রাশিয়ার এসএ-২২ এবং এসএ-১৭ ধরনের অস্ত্রও যুক্ত করা হয়েছে। সিরিয়ার আছে চীনের সরবরাহ করা স্পর্শকাতর কিছু রাডার ব্যবস্থা। তবে সিরিয়ার বেশিরভাগ বিমানই পুরনো। এগুলো ব্যবহার করতে হলে বড়ো ধরনের মেরামত প্রয়োজন।

রাশিয়া

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ছয় হাজার ৯শ কোটি মার্কিন ডলার। ধারনা করা হচ্ছে রাশিয়া তাদের এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করবে। রাশিয়ার কিছু বহুস্তরের বিমানবিধ্বংসী ব্যবস্থা সিরিয়াতে মোতায়েন করা হয়েছে। সিরিয়াতে রাশিয়ার আরও কয়েক ধরনের যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সুখয় -২৪ বোমারু বিমান, সুখয়-২৫ যুদ্ধবিমান, বহু ভূমিকা পালন করতে পারে এরকম জঙ্গি বিমান, পরিবহন বিমান, গোয়েন্দা বিমান এবং হেলিকপ্টার গানশিপ। এছাড়া দেশটি সিরিয়াতে মিগ ২৪ এবং মিগ ৩৫ ব্যবহার করছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

6 + 10 =