Site icon Aparadh Bichitra

সমবায় সমিতির নামে করা হচ্ছে অবৈধ লেনদেন

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা জুড়ে নামে-বেনামে ব্যাঁঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অসংখ্য সমবায় সমিতি। এই সমবায় সমিতির নামে করা হচ্ছে অবৈধ লেনদেন।

 

বেশ কিছুদিন যাবত এলাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের আড়ালে চলছে দাদন ব্যবসার মহোৎসব। এসব সমিতি থেকে টাকা ঋণ নিয়ে অনেকেই হচ্ছেন সর্বশান্ত। কেউ কেউ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দ্বিগুন মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জানা যায়, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদানকারী ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক নিবন্ধিত মোট সমবায় সমিতির সংখ্যা ১৪৮ টি। সমিতিগুলো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য নিবন্ধন হয়ে তাদের সমিতির কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। অন্যদিকে অ-নিবন্ধনকৃত সমবায়গুলোর অধিকাংশই সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে পরিচালিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে বানিয়াচং সদর ইউনিয়নের আলোচিত দুইটি ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সমবায় সমিতি। এলাকার কিছু স্বার্থন্বেষী অসাধু অর্থলোভী ব্যক্তিরা প্রথমে তাদের আপনজন ও নিজ এলাকার পরিচিত জনদের ভোটার আইডির ফটোকপি ও ছবি সংগ্রহ করে তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের সভাপতি ও সম্পাদক বানিয়ে তাদের মাধ্যমেই নামে-বেনামে সমিতি গঠন  করে থাকে। সমবায় সমিতিকে নিজেদের ব্যক্তিগত প্রাতিষ্ঠানিক রূপদিয়ে শুরু করে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম। সমবায় সমিতির নিয়ম অনুসারে সমিতির সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয়, শেয়ার, বীমা, ঋণ কার্যক্রম করতে পারবেন। কিন্তু হাতে গোনা কিছু সমিতি ছাড়া অন্যসব সমিতিগুলো সদস্যদের বাহিরে ঋণ প্রদান করে থাকে। আবার অনেকে সমিতির নির্দেশিকা না মেনে নির্দিষ্ট কার্য এলাকার বাহিরে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বানিয়াচংয়ের সচেতন মহল এইসব অবৈধ সমবায় সমিতির নামে যারা দাদন ব্যবসা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নাম প্রকাশ না করার সর্ত্বে একাধিক ব্যক্তি বলেন, কিছু সমিতি সমবায় নীতিকে অমান্য করে মানুষের অসহায়ত্বয়ের সুযোগ নিয়ে উচ্চ হারে ঋণ দিয়ে থাকেন। কিছু সমিতি সরাসরি দাদন বা সুদের ব্যবসার সাথে জড়িত। সদর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি বলেন, তার এলাকার বেশ কিছু মানুষ ওইসব সমিতি থেকে সুদের টাকা নিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। পরে তারা বাড়ী-ঘর ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে গেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। আবার কিছু সমিতির পরিচালক বা সভাপতিগণ অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিত্তশালী ও সমাজের সাধারণ মানুষদের নিকট থেকে এককালীন চেক/পাশবহির মাধ্যমে আমানত গ্রহন করে থাকে। কিন্তু সময় মত আমানতের টাকা ফেরত না দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেরাই উধাও হয়ে যান। আবার ফিরে এসে দেই-দিচ্ছি দিব বলে নানা তালবাহানা করে থাকে। এতে সঞ্চয় আমানতকারী সাধারণ গ্রাহকেরা বিপাকে পড়ছেন। এ বিষয়ে একাধিক সমিতির সভাপতিদের সাথে কথা বললে তারা কোন সদুত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় অফিসার দেবাশীষ দেব বলেন, আমার জানামতে নিবন্ধিত সমবায় সমিতির নামে এধরনের কোন অভিযোগ নেই। যদি থাকে অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে নিবন্ধন ছাড়া সমিতির বিরুদ্ধে কোনে অভিযোগ থাকলে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। অ-নিবন্ধনকৃত সমবায় সমিতির মাধ্যমে লেনদেন করলে তার দায়-দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে।