বায়েজীদ থানার ওসি আতাউর প্রশাসনের এক উজ্জল নক্ষত্র

0
1014

রাশেদুল ইসলাম: চট্টগ্রাম বায়েজীদ থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার প্রশাসনের উজ্জল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন, আর থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ তিনি সফল অফিসার। সফলতা এবং ব্যর্থতা দুটোই আছে, তবে সফলতার পাল্লা ভারী। বায়েজীদ থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর আইন শৃঙ্খলা যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আজ এলাকাবাসী ওসি আতাউরের প্রশংসায় পঞ্চমূখ। মাদক, সন্ত্রাস নির্মূল হয়েছে তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। থানার সকল অফিসারদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করে যাচ্ছেন এই গুণি অফিসার, কঠোর ভাবে সকল অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি দেখতে চাই অবনতি নয়। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে থানার সকল প্রশাসনের প্রতি। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ নির্বিঘেœ থানায় আসতে পারবে এবং প্রশাসনিক সহযোগীতা করার জন্য সদা সর্বদা আমরা প্রস্তুত আছি এবং থাকবো।

নির্ভয়ে সাদারণ মানুষ থানায় আসবে সেবা নিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন আমার থানার কোন অফিসার যদি অন্যায় ভাবে কাউকে কষ্ট দেয় এমন অভিযোগ পেলে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাই খেয়াল রাখতে হবে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের দ্বারা যেন হয়রানী না হয়। ভালো কাজের জন্য সি এম পি থেকে ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ ওসির পুরষ্কার লাভ করেছেন, শ্রেষ্ঠ ওসি হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন এ পুরষ্কার আমার একার নয় এ পুরষ্কার আমার ডিপার্টমেন্টের সকলের। তাই এই পুরষ্কার সবাইকে উৎসর্গ করে দিলাম, দায়িত্বে কর্তব্যে সব অফিসারেরা ন্যায় পরায়ন ছিল বিধায় আজ সফলতা পেয়েছি। আশা করি আগামীতে আমিসহ সকলের ভালো কাজের প্রেরণা জোগাবে এই পুরষ্কার। জেনে নেই এই গুণী অফিসারের শৈশব এবং কৈশর জীবনের কিছু কথা। সিরাজগঞ্জের ১৯৭৫ সালে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে দেলোয়ারপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন, পিতা: নুরুল হক খন্দকার, ছয় ভাই-বোনের মধ্যে ওসি আতাউর রহমান খন্দকার দ্বিতীয়। তিনি সবার আদরের মধ্যমণি ছিলেন। ছেলে বেলা থেকেই পড়া শুনায় ছিলেন খুব মেধাবী। ১৯৯১ সালে ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ১ম স্থান লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে সিরাজগঞ্জ বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ১ম স্থান লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইংরেজী বিভাগে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। পড়াশুনা শেষ করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। ২০০১ সালে এস আই পদে রাজশাহী থেকে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন, ট্রেনিং শেষে ২০০৫ সালে রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশ লাইনে যোগদান করেন। ওখান থেকে চট্টগ্রাম বায়েজীদ থানায় এস আই হিসেবে যোগদান করেন এবং আট মাস সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। সৎ নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার হওয়ার কারণে র‌্যাব-৮ বরিশালে যোগদান করেন। টানা তিন বছর সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করে, চট্টগ্রাম বন্দর থানায় সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে ছয় মাস চাকুরী করেন। ২০১০ সালে শান্তি মিশনে আফ্রিকাতে চলে যান, এক বছরের মিশন শেষ করে দেশে ফিরে এসে চট্টগ্রাম সি এম পিতে যোগদান করেন। ওখান থেকে বায়েজীদ থানায় যোগদান করেন এবং সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। বায়েজীদ থানা থেকে ধারাবাহিকভাবে পাঁচলাইশ সেকেন্ড অফিসার হিসেবে যোগদান করেন, আট মাস দায়িত্ব পালন শেষে তদন্ত ওসির পদোন্নতি পেয়ে বান্দর বন নাইখাংছড়ি শারদা বিভিন্ন থানায় দীর্ঘ সময় সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন শেষে চট্টগ্রাম সি এম পি ডবলমুরিং থানায় যোগদান করেন। টানা এক বছর নয় মাস নিষ্ঠার সহিত কাজ করেন। সফলতার প্রাপ্তির অনেক অফিসার ইনচার্জ এর পদোন্নতি পেয়ে পরে কক্সবাজার টেকনাফ থানায় যোগদান করেন। সেখানে টানা চৌদ্দ মাস সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন ওসি আতাউর খন্দকারের বিচক্ষনতার কারণে মানব পাচার একে বারে বন্ধ হয়ে যায় একটা সময় সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বেড়ে যায়, কঠোর অবস্থানে থাকার কারণে অপরাধীদের নির্মূল করতে সম্ভব হয়। সফল ভাবে থানার মিশন শেষ করে ২০১৬ সালে দারফু মিমনে দেমের বাইরে চলে যান এক বছর সফল মিশন শেষ করে দেশে ফিরে এসে ঢাকা আশুলিয়ায় যোগদান করেন। ছয় মাস দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন শেষে চট্টগ্রাম সি এম পি বায়েজীদ থানার ১৭/০৫/২০১৮ ইং তারিখে যোগদান করেন অফিসার ইনচার্জ হিসেবে। বায়েজীদ থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর আইন শৃঙ্খলা যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রশাসনের প্রতি বেড়েছে মানুষের আস্থা ও অপরাধীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তবে অধিকাংশ অপরাধীরা প্রশাসনের জালে আটক হয়েছে, দশ মাসে প্রাপ্তির শেষ নেই। তাঁর সফলতার কথা না বললেই নয় দেশি বিদেশী সতেরটি আমর্স উদ্ধার প্রায় আড়াই লক্ষ পিচ ইয়াবা উদ্ধার, পঞ্চাশ থেকে একশত কেজি গাঁজা উদ্ধার, হাজার লিটার চোলাই মদ, ২০০ উপরে সাজা প্রাপ্ত আসামী আটক, দাগী আসামী পঞ্চাশ জনের মতো আটক। এভাবে বিভিন্ন অপরাধের আসামী গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। এই সৎ আদর্শবান পুলিশ অফিসার কমিউনিটিং পুলিশ মিটিং করেচেন পঞ্চাশ বার। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি আছে জানতে চাইলে বলেন সাধারণ মানুষকে সেবা নিশ্চিত করা মডেল থানা হিসেবে তৈরি করতে চাই এই বায়েজীদ থানাকে। তিনি আরো বলেন বৃদ্ধ অসহায় নারী, পুরুষ, অসহায় শিশু এবং বিধবা নারীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে পুলিশ যে জনগণের সত্যিকারের বন্ধু সেটাই নিশ্চিত করা আমার লক্ষ। তিনি সৎ ও আদর্শের কারণে জাতিসংঙ্ঘ পদক পেয়েছেন দুইবার ২০০০ ও ২০১৬ সালে এই গুণী অফিসার। পরিবার নিয়ে কথা হলে মিসেস সুলতানা ইয়াসমিনের সাথে ২০০৪ সালে এক অনারম্বর পরিবেশে পারিবারিক ভাবে বিবাহে আবদ্ধ হন। মিসেস ইয়াসমিনের প্রশংসা না করলেই নয়, পারিবারিক ভাবে এবং প্রশাসনিক ভাবে সু-পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেছেন এবং ছেলে মেয়েকে মানুষ করার পিছনে যথেষ্ট দায়িত্ববান মিসেস ইয়াস মিন সুলতানা ছেলে-মেয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন তিন মেয়ে ও পরিবারকে নিয়ে বেশ সুখেই আছি। বড় মেয়ে ইসমত জাহান অনুপা ৮ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে আতিয়া ইবপাত চতুর্থ শ্রেণীতে আছে, আনিকা আনোয়ার দ্বিতীয় শ্রেণীতে আছে, সব শেষে তিনি বলেন দেশ ও জনগণের সেবা করে মরতে চাই।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve − eleven =