নানা কুকীর্তি আর অপরাধে জড়িয়ে যখন পুলিশের জাত গেল, জাত গেল রব। ঠিক তখনি ত্রাতারুপে চট্টগ্রামের মানুষের কাছে ধরা দিল এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি হচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. জহিরুল হক ভুঁইয়া।
যিনি অসহায় মানুষের সহায় হিসেবে অনেক আগেই পরিচিতি লাভ করেছেন। হাসপাতালে মুমুর্ষ কোন রোগীর রক্তের প্রয়োজন-তার ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ওষুধ কেনার টাকা নেই, ওষুধ কিনে দেন তিনি। হাসপাতালের কোন কর্মচারী বা চিকিৎসকের অবহেলার শিকার রোগীকে সেবার ব্যবস্থা করেন তিনি। এবার হাসপাতালের গন্ডি পেরিয়ে নতুন এক কীর্তি করে মানুষের আলোচনায় বিষয় বস্তুতে পরিণত হন এই পুলিশ কর্মকর্তা। সেটা হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ঝুপড়িতে থাকা ভাসমান এক পরিবারের বেড়ে উঠা তরুণী পপি আক্তারের (১৮) বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পার্কিং মাঠে এ বিয়ের আয়োজন করেন তিনি। তিনি বলেন, অন্য দশটা বিয়ের মতো পপির বিয়েতেও নানা পদের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে দেড়শ জনের খাবারের আয়োজন করা হয়। তিনি জানান, চট্টগ্রামের রীতি অনুযায়ী পাত্রপক্ষকে একটি পরিবারের প্রযোজনীয় সব উপকরণ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। পপির ইচ্ছা ছিল তার বিয়েতে যেন একটা সুন্দর বিয়ের গেইট করা হয়। তার ইচ্ছাটাও পুরণ করেছি। পপির বাবা বাবুল মিয়া জানান, তিনি একজন হতদরিদ্র অসহায় মানুষ। স্ত্রী ও কন্যা সন্তান পপিকে নিয়ে পথেই দিন-রাত কাটান। প্রায় ১২ বছর আগে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় ঝুপড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন পুলিশ কর্মকর্তা জহিরুল হক ভূঁইয়া। পরে এক ছেলে সন্তান জন্মের পর মারা যাওয়ায় আমার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। দীর্ঘ সময় এই অসহায় পরিবারের পাশে থেকে সহযোগিতা করে আসছিলেন জহিরুল হক ভূঁইয়া। এ পুলিশ কর্মকর্তার আর্থিক সহযোগিতায় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করা পপি এখন পা দিয়েছে ১৮ বছরে। এমন অবস্থায় বাবার ভূমিকা নিয়ে পপিকে বিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেন জহিরুল হক ভূঁইয়া। পাত্র ঠিক করা হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডি গ্রামের বাসিন্দা জসিমকে (২৫)। জসিম বলেন, পপিকে বিয়ে করতে পেরে আমি খুব খুশি। কারন একটি অসহায় পরিবারের পাশে আমি দাড়াতে পেরেছি। বিয়েতে আমার কিছুই চাওয়ার ছিল না। উপহার হিসেবে যা দিয়েছেন তা নিয়েও আমার আপত্তি ছিল। তবুও যা দিয়েছে তা আমি নিয়েছি।