রাজধানীর দুর্ধর্ষ প্রতারক আজিজুর রহমান সুমন গ্রেফতার

3
1631

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানী খিলক্ষেত থানায় নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় অবস্থিত রেসিডেনশিয়াল ল্যাবরেটারি কলেজের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সুমনকে ১৮এপ্রিল-২০১৯ গ্রেফতার করেছে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। সুমন কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ কয়েকজন বাড়ির মালিকের সাথে নানা ভাবে প্রতারনা করে আসছিল।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, আজিজুর রহমান সুমন একটি সঙ্গবদ্ধ প্রতারক চক্রের মাধ্যমে কলেজের নাম ব্যবহার করে বাড়ির মালিকদের ভাড়া প্রদান না করে অন্তত ৫টি বাড়ি দখল করে আছে। ১৮/০৪/২০১৯ ইং তারিখে নিকুঞ্জ-২ এর ১নং রোডের ২ নং বাড়ির মালিক বাদশা মিয়া সুমনের সাথে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বাড়ির বকেয়া বাড়া নিয়ে সালিশ বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে সুমন তার বাহিনী নিয়ে কলেজের সামনে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকরে এবং বাড়িটিতে ব্যাপক ভাংচুর করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ সময় স্থানীয় থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পৌছালে সুমন সহ তার লোকজন নিয়ে পুলিশের উপরও হামলা করে। পরবর্তিতে পুলিশ শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তাদেরকে এলাকা থেকে বিতারিত করে। এ সময় সুমন বাড়ির কেচিগেইট ভাঙ্গতে গিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হয়। পুলিশের উপর হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এব্যপারে খিলক্ষেত থানা পুলিশ ও বাড়ির মালিক বাদি হয়ে সুমনসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। খিলক্ষেত থানা মামলা নম্বর- ২০/১৪৯ ও ২১/১৫০ তারিখ ১৮/০৪/২০১৯ ইং। বাড়ির মালিক বাদশা মিয়া বলেন, আমার নিকট থেকে সকল চুক্তিনামা শর্ত মেনে বাড়ি ভাড়া নিলেও সুমন শুরু থেকে আমার সাথে প্রতারনা করে আসছিল। বাড়ি ভাড়ার অগ্রিম চেকের টাকা উত্তলন করতে মামলা পর্যন্ত করতে হয়েছে। যে মামলা এখনো চলমান আছে। মামলার তদন্ত কর্মকতা সাব-ইন্সপেক্টর তৌকির আহম্মেদ তালুকদার বলেন, সুমনের ব্যপারে এবং মামলার এজাহার নামীয় বাকী আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপর দিকে পুলিশের মামলার তদন্ত কর্মকতা ইন্সপেক্টর আদিল বলেন, সুমনের ব্যপারে পূর্বে ও বেশ কয়েকটি মামলা, সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমি সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবো। তবে সুমনের ব্যপারে তার অফিস পিয়ন নয়ন ও হল সুপার শাহ আলম বিশ্বাস এর দেওয়া তথ্য মতে ১নং রোডের ২নং বাড়ির চতুর্থ তলায় গভীর রাতে বিভিন্ন মেয়ে নিয়ে অনৈতিক কাজকর্ম করতো। সুমন মেয়ে নিয়ে ফুর্তি বিভিন্ন মাদক সেবন করে আবাসিক হলে থাকা ছাত্র/ছাত্রীদের উপর বিভিন্ন সময় শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। উক্ত সুমনের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সকল আদেশ নির্দেশ অমান্য করে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করে এবং এইচ.এস.সি পরিক্ষায় ফরম পূরণ বাবদ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। সুমন বাড়ির মালিকদের ভাড়া না দিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদেরকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে। বাড়ির মালিকদের ভাড়া না দিলেও তিনি নিজের আখের ঠিকই গুছিয়েছেন এর অর্থ তিনি কোটি টাকায় বরুয়া মৌজায় ৫ থেকে ৬ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন।
সুমন বর্তমানে জেলে থাকায় তার সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সুমনের পিতা ফরিদ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব খারাপ লোকেদের চক্রান্ত। আমার ছেলে সব বাড়ির মালিকদের ভাড়া প্রদান করছে। সুমনের বাবা ফরিদ হোসেনও এই মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। (চলবে)—

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen + 16 =