ডাস্টবিনের পচা খাবার খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছেন এক নারী

0
1630

রাস্তার পাশে ডাস্টবিন। সেখানে সবাই ফেলে গেছেন পচা খাবার, ময়লা-আবর্জনা। দুর্গন্ধে ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না। সকাল বেলা বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে ডাস্টবিনে ফেলে যান পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

 

বিকেল পর্যন্ত এসব ময়লা-আবর্জনা পচে যায়। তবে পচে যাওয়া এসব ময়লা-আবর্জনার দিকে নজর পড়েছে এক নারীর। দৌড়ে গিয়ে ডাস্টবিন থেকে এসব পচা খাবার তুলে খেতে শুরু করলেন তিনি। ডাস্টবিনের পচা এসব খাবার খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছেন ওই নারী। ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানের সামনের পৌর ডাস্টবিনের সামনে এ চিত্র দেখা যায়। ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে সবার যখন দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা তখন সেখানেই বসেই পচা খাবার খাচ্ছেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার (৯ মে) মাগরিবের নামাজের আজান অর্থাৎ ইফতারি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ডাস্টবিন থেকে পচা ভাত তুলে ওই নারীকে খেতে দেখা যায়। তবে বিষয়টি স্থানীয় অনেকের চোখে পড়লেও গুরুত্ব দেয়নি কেউ। ডাস্টবিন থেকে ভাত খাওয়ার দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করতে গেলে লজ্জা পেয়ে দাঁড়িয়ে যান ওই নারী। সেই সঙ্গে বিরক্তি প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে আশপাশে না তাকিয়ে খাবার শেষ করে চলে যেতে শুরু করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে দ্রুত হেঁটে চলে যান। স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ এক নারী দৌড়ে এসে পৌর ডাস্টবিনের কাছে যান। এ সময় তিনি ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনার মধ্যে খাবার খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে পচা ভাতের একটি পোটলা পেয়ে যান। পোটলাটি খুলেই দ্রুত ওই পচা ভাতগুলো খেতে শুরু করেন ওই নারী। তার বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর হবে। তার পায়ে জুতা নেই। পরনে লাল সালোয়ার কামিজ রয়েছে। হাতে কাচের চুড়ি ও কানে দুল রয়েছে তার। তাকে দেখে মনে হয় না ডাস্টবিনের নোংরা খাবার খেতে পারেন। তবে কে এই নারী, কী তার পরিচয়, জানেন না স্থানীয়রা। তবে মাঝেমধ্যে তাকে এই এলাকায় দেখা যায় বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানের পাশের মুদি দোকানি আকাশ বলেন, কিছুদিন ধরে ওই নারী এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন। ডাস্টবিনের পাশে মাঝেমধ্যে বসে থাকেন। রাতেও তাকে ময়লা-অবর্জনার পাশে ঘুমাতে দেখা যায়। সারাদিনের খাবার হিসেবে ডাস্টবিনের পচা খাবারই তার একমাত্র ভরসা। ওই নারীর বাসা কোথায়, পরিবারের কেউ আছে কিনা তা আমার জানা নেই। স্থানীয় চায়ের দোকানি ওমর আলী বলেন, ওই নারীকে এখানে প্রায়ই দেখা যায়। তবে কারও সঙ্গে কথা বলেন না তিনি। তাকে কেউ কিছু দিতে চাইলে নিতে চান না। টাকা দিতে চাইলেও নেন না। পৌরসভার লোকজন ময়লা-আবর্জনা ট্রাক বা ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার আগেই ডাস্টবিনের পচা খাবারগুলো খেয়ে কেটে পড়েন ওই নারী। স্থানীয় ভুটিয়ার গাতি গ্রামের ইজিবাইক চালক আরিফ বলেন, মাঝেমধ্যে ওই নারীকে ডাস্টবিনের খাবার খেতে দেখি। একদিন তার পরিচয় জানতে চাইলাম, এতে প্রচণ্ড রেগে যান। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলেন না ওই নারী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × three =