চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দরিদ্র হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ

0
638

দেশে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দরিদ্র হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। এই তথ্য সরকারি সংস্থা- হেলথ ইকোনমিক ইউনিটের। প্রতি বছর কিডনি বিকলের শিকার ৬০ হাজার মানুষের প্রয়োজন হয় ডায়ালাইসিস।

 

আর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ১০ লাখ মানুষের। বছর ঘুরতেই এই সংখ্যায় যোগ হয় আরও দুই লাখ। ন্যাশনাল হেলথ একাউন্টের হিসেবে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৭ ভাগ বহন করতে হয় ব্যক্তিকে। সার্কভুক্ত দেশে ব্যক্তিপর্যায়ে এটিই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ব্যয়। মানে আপনার পরিবারের কারও কিডনি কিংবা ক্যান্সার টাইপ অসুখ হলে, ২-৩ বছরের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে আপনি মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত। নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে গরীব হয়ে যাবেন, এত অনিশ্চিত একটা সময়। আমার সব সময়েই মনে হয়েছে, মানুষের সবচে’ দুঃখ আর দুর্দশার সময় হচ্ছে ফ্যামিলির কেউ একজন বড় অসুখে পড়ে গেলে। ওই ব্যাক্তি নিজে অসুখে পড়ে তো বটে-ই। গোটা ফ্যামিলিটাই পথে বসার উপক্রম হয়। এজন্য কেউ চ্যারিটি চাইলে যতটুকু পারবো ততটুকু করবো, এটাই ছিল প্ল্যান কয়েক বছরে। গত ৮ মাসে টুকটাক যত চ্যারিটি তার সবই ছিল লোকজনের ট্রিটমেন্টে দেয়া ছোট ছোট হেল্প।কিন্তু আমার অনেক অসহায় লাগে। এই মাসে এক সাস্টেই ৫ জন এরকম ব্যায়বহুল দূরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন। সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই চিত্র হবে। সারাদেশের জনগোষ্ঠীর অসহায় চিত্র আরও করুণ। সবার কাছে অনুরোধ, এই সময়টাতে কিছু হলেও হেল্প করতে চেষ্টা করা। অন্য অনেক চ্যারিটির চাইতে এই সাহায্যের আবেদন অনেক করুণ এবং অনেক দুঃখজনক। পারলে নিজের পরিচিত গন্ডিতে হলেও কিছু হেল্প করা। আর সরকার? একটা ক্রাউড সোর্সিং ফান্ড করতে পারে। হেলথ হেল্প সারচার্জ বা ট্যাক্স ধরতে পারে। যেমন আপনি ৫০০ টাকা রেস্টুরেন্টে বার্গার খাইলে ৫ টাকা চলে যাবে ‘হেলথ হেল্প ফান্ডে’। মোবাইল ফোনে মেসেজ দিলে একটা সারচার্জ ধরা যেতে পারে। পার্লারে সাজতে গেলে ২০টাকা হেলথ ফান্ড সারচার্জ ধরা যেতে পারে। যেখান থেকে সরকারি ব্যাবস্থাপনায় একটা ভালনারেবল ডিজিজ হেলপিং স্কীম হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা বীমা চালু হতে পারে, অন্তত দেশ যাদের উপর এতদিন ইনভেস্ট করেছে, জীবনের ২০-২৫ বছরে গিয়েই তারা মারা যাচ্ছে টাকার অভাবে। দেশের বিশ্ববিদ্য্যালয়গুলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পারমানেণ্ট একটা হেলথ ফান্ড করতে পারে, তার শিক্ষার্থী, শিক্ষক আর এলামনাইদের জন্য।নিজেরা নিজেরা মাসে মাসে কিস্তি নিয়ে। বীমা কোম্পানীদের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তি করে। আর অসম্ভব শুনাবে যদিও। তবুও জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচিও জনপ্রিয় করা উচিত। নেপালের মতো পুঁচকে দেশে পারে। রুয়ান্ডার মতো দূর্ভিক্ষের ক্ষত শুকানো দেশ পারে। আমরাও তো জনপ্রিয় করতে পারি। যাদের টাকা আছে। মাসে কয়েকশো টাকা দিতে পারে কিস্তি। তারা হেলথ ইনস্যুরেন্স কিনে রাখুক। একটা দেশ তার জনসংখ্যার উপরের ১% বড়লোক; কর্মজীবীদের টপ ৩% সরকারি চাকুরজীবীদের জন্য দ্রুত আরামদায়ক আর প্রফিটেবল হয়ে উঠছে। এদের ঝুঁকি আছে। কিন্তু ব্যয় বহন, বীমা চালানো এসবের মুরোদ আছে। অন্যদিকে বাকী ৯৫% মানুষ-ই আছে ‘বড় অসুখে’ সর্বস্ব হারানোর ঝুঁকিতে। হাত পেতে বাঁচবার মতো ঝুঁকিতে। প্রতি বছর অর্ধ কোটি পরিবারের একজন অসুস্থ হচ্ছে। নিমিষেই পরিবারটি ঔষধ আর ডাক্তার করতে করতে ‘গরীব’ হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে একটা দীর্ঘমেয়াদী করণীয় অবশ্যই থাকা উচিত। ক্লাস্টার ভিত্তিক স্বাস্থ্যবীমা করতে চাইলে কত সরকারি ভর্তুকি লাগবে? প্রভাবশালীদের ২০ হাজার কোটি টাকা পাচারের চেয়ে কম নিশ্চয়

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 − three =