জেমস এ কে হামীম: আপনার সন্তান কোথায় যায় কি করে আপনি জানেন তার কার সাথে খেলাধুলা করে। কতটুকু খেয়াল রাখেন আপনি যদি আপনার সন্তান টিউশনের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়।আসলেই কি সে টিউশনের জন্য গিয়েছে স্কুল কলেজের বিশ্ববিদ্যালয় কথা বলে আসছিল কি? তারা স্কুল কলেজে আছে কিনা খবর নিয়েছেন কখনো।
রাজধানীর ঢাকা তার আশ পাশে এলাকায় প্রায় সময় রাস্তায় চলতে ফিরতে দেখা যায়, রিকশায় বসে থাকা তরুণী মুখে কাপড় চাপা দেওয়া, পাশে আরেকটি তরুণ বসা, তরুণীটি হয়তো জনসাধারণের কাছে নিজের পরিচয় গোপনে চেষ্টা করে। এই উঠতি বয়সের তরুণ তরুণীরা যখন বাসায় ফিরে তখন তাদেরকে কি কোন জবাবদিহি করতে হয়। বাবা মায়েরা কি জিজ্ঞেস করে তাঁরা এতক্ষণ কোথায় ছিল।
স্কুল কলেজের ড্রেস পড়ে কিংবা ভদ্র, শান্ত চেহারার ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন পার্ক অথবা শহরের বিভিন্ন যায়গায় যেমন হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, বিভিন্ন শপিংমলে অশ্লীন অথবা বিব্রতকর অবস্থায় দেখা যায়।তাদের বাবা মায়েরা কি তাদেরকে বাসায় ফেরার পর জিজ্ঞাসা করে কোথায় ছিলে, কোথা থেকে আসলে এখন।
বর্তমান সময়ে দেখা যায়, অনেক বাবা মায়েরা এখনো হয়ত সন্তানকে হাতে তুলে খাইয়ে দেন। এদের সন্তানের পরীক্ষার রেজাল্টের খবর রাখে, স্কুল কলেজের খবর রাখে।তার আদরের সন্তান তার জীবন গতি কোথায় যায় তার কোন খেয়াল রাখার সময় হয়তো তাদের কাছে সময় নেই।
প্রায় সময়ই রাস্তায় কোন রিকশা কিংবা সিএনজিতে ভুলে চোঁখ গেলে লজ্জায় মাথা কাটা যায়। এসব নিলজ্জবোধ ছেলে মেয়ে গুলোর প্রকাশ্য নষ্টামি করে যাচ্ছে‘বয়সের দোষ’ হলেও এ ক্ষেত্রে বাবা মায়েদের ও দোষ কম নয় ।
ছেলে মেয়েকে দেশের সেরা সেরা বিশ্ববদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে লোকসমাজে নিজেদের স্ট্যাটাস বৃদ্ধির তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন কেউ কেউ। তাদের ছেলেমেয়েদের এসব আধুনিক রঙ্গশালায় এসে আর নষ্টামির আমলনামা বর্তমানে ভালোই দেখা যাচ্ছে সহজলভ্য ইন্টারনেটের এই যুগে! গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝোপে ঝাড়ে জৈবিক চাহিদা চরিতার্থ করে বন্ধুদের সাথে রসালো বর্ণনা করে আড্ডা জমায় আদরের সন্তানেরা। মোবাইলের লাউড স্পিকারে বান্ধবির সাথে অশ্লীল কথোপকথন বন্ধুদের নিয়ে উপভোগ করে স্মার্ট! (তাদেরভাষায়) ছেলেরা! অথচ প্রায়ই সকল বাবা মায়েরা ঠিকই বলে বেড়ায় আমার ছেলে/মেয়ে কিন্তু আর দশজনের মত না। আর আপনার এই সার্টিফিকেটই যথেষ্ট আপনার সন্তানকে বিপথগামী করার জন্য।
যে কোন ছেলে বা মেয়ের মা বাবার সাথে কথা বললে তারা তো নিশ্চিত করেই বলবেন, তাদের সন্তান অন্য মানুষ হতে কিছুটা ভিন্ন৷ তবে অশ্ললীনতা করছে কে? তবে ওরা কারা নোট, বই, লাইব্রেরীতে যাবার কথা বলে, বাড়তি ক্ল্যাসের কথা বলে বা ক্ল্যাস ফাঁকি দিয়ে বা ক্ল্যাসের ফাঁকে, মেসে, হোটেলে, নির্জন ফ্ল্যাটে, ঝোপঝাড়ে যায়। রিক্সায়,কিংবা সিএনজিতেই মেতে ওঠে যৌন খেলায় মোবাইল, ইণ্টারনেট জুড়ে কেন এ অশ্লীল ছবির ছড়াছড়ি বলবেন কি?
অনেক অভিভাবক বিশ্বস্ত বান্ধবীদের বাড়িতে বা বিশ্বস্ত বান্ধবীদের সাথে স্বল্প সময়ের জন্যও কোথাও যাওয়ার অনুমতি দেন না৷ কিন্তু তাদের সন্তান মিথ্যা বলে প্রেমিকের সাথে যা তা করছে, তার খবর কে রাখে৷
ইভটিজিং, যৌন সন্ত্রাস, ধর্ষণ, নেশার জগতে যারা আছে তারা। সন্তান আপনার আমার তাদের প্রতি বেখেয়ালী আচরনই তাদের এমন পশুর মতো হতে বাধ্য করেছে। বর্তমানে আমাদের সমাজের দিকে একটু খেয়াল করুন কি চলছে বা কি হচ্ছে। হঠাৎ করেই কিন্তু বর্তমানের ইভটিজিং, যৌন সন্ত্রাসের মত ঘটনাগুলো সৃষ্টি হয়ে যায় নি। কোচিং সেন্টারগুলোতেও বেড়ে চলছে ধর্ষণের মত ঘটনা। যার অধিকাংশতেই দেখা যায় শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক কর্তৃকই ঘটছে ধর্ষণের মত পৈশাচিক ঘটনা।
আপনার সন্তানের ভালো আপনি চান বলেই তার ভবিষাৎ নিয়ে আপনি শঙ্কিত। তার জন্য আপনি তাকে ভালো নামি-দামী স্কুল কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি আলাদাভাবে কোচিং সেন্টারে পাঠাচ্ছেন, ভালো কথা সেই সাথে একটু খেয়াল রাখুন আপনার সন্তানের প্রতি সে কোথায় যায় কি করে। তার কাছে জবাবদিহী চান। সেই সাথে তাকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলুন। তাকে আদর্শ চরিত্রবান করে তোলার ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। পরিবারই পারে তার পৌষ্যকে আদর্শ চরিত্রবান ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে।
আমি বিশ্বাস করি আপনার আমার একটুখানি সচেতনতায় আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম সৎ-চারিত্রিক গুনাবলীর অধিকারী হবে এবং সেই সাথে আমাদের এই সমাজ অপরাধমুক্ত হবে।