মৌলভীবাজার কুলাউড়ায় ব্রিজ ভেঙে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন শাজাহান কবীর চৌধুরী।
সোমবার ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে তিনি বলেন, কুলাউড়া ও মৌলভীবাজার হাসপাতালে মোট ৬৭ জন আহত ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় পাঁচজনের মরদেহ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এদিকে ভোরেই ৭টি সচল বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে দুর্ঘটনা কবলিত উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি। কুলাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মালেক এই তথ্য জানিয়েছেন।
সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে রবিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকার অদূরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ করছে এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযানে স্থানীয়রা ও অংশ নিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের হবিগঞ্জ জেলার উপসহকারী পরিচালক শিমুল মোহাম্মদ রফি বলেন, ‘১১টি ইউনিটের ৫৪ জন সদস্য ও ৫টি অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছে। গুরুতর আহত ২৭ জনের মধ্য জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
শ্রীমঙ্গল সেক্টরের ৪৬ বিজিবির সহকারী পরিচালক মো.শাহজাহান বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার পর রাত ১টার দিকে বিজিবির ২০ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল ঘটনাস্থলে নিয়োজিত রয়েছেন।
এর আগে, রবিবার রাত তিনটার দিকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল জানান, এই ঘটনায় দুটি বগি ব্রিজ ভেঙে খালের পানিতে উল্টে পড়ে গেছে। এছাড়া আরও তিনটি বগি স্থলভাগের সীমানায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছে। মোট পাঁচটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের কুলাউড়া স্টেশন ম্যানেজার অপেন কুমার সিং এই ঘটনায় ছয়জন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ১৫-২০ জন আহত রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন ঢাকাগামী যাত্রীরা। ফলে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি সিলেট থেকে ছেড়ে যায়।
