Site icon Aparadh Bichitra

বরিশাল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ৫০ হাজার টাকার জন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন

উজিরপুর প্রতিনিধিঃ মাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য তিন বন্ধু মিলে খুঁন করলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম চৌধুরী(৪৮)কে। ২৪ জুন সোমবার দুপুর ১ টায় বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এবং ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্ধীতে অকোপটে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার কথা শিকার করলেন গ্রেফতারকৃত আবুল তালুকদার(৪০)। সে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কাজিরা গ্রামের মৃত খালেক তালুকদারের ছেলে। পুলিশ সুত্রে জানা যায় কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার কর্মকার পাড়া গ্রামের মৃত রুপ মিয়া চৌধুরীর ছেলে নজরুল ইসলাম চৌধুরী নারায়নগঞ্জে স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে। সেখানে তিনি স্বর্নের ব্যবসা করত। পাশেই করতোয়া ও এস আর কুরিয়ার সার্ভিসে শ্রমিকের কাজ করত আবুল ও তার ২ সহযোগী। একই এলাকায় বসবাসের সুবাধে ৬ মাস যাবৎ নজরুলের সাথে তাদের সক্ষতা গড়ে উঠে।

এক সময় নজরুল ইসলাম ব্যবসা করতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হওয়ায় মে মাসের শেষের দিকে গ্রামের বাড়ী থেকে জমি বিক্রি করে নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসে। আরো টাকার প্রয়োজন, বিষয়টি আবুল সহ বন্ধুদের জানালে আবুল তালুকদার তাকে বলে তার স্ত্রী উজিপুরে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১ লক্ষ টাকা লোন করে নজরুলকে দিতে পারবে। তবে লোন করতে হলে ব্যাংকে পূর্বের পাওনা ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। সে মোতাবেক ২ জুন ঢাকা থেকে তিন বন্ধু মিলে বিকেল ৫ টায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ইচলাদি বাসস্ট্যান্ডে নামে কালক্ষেপন করে অন্ধকার রাতের জন্য অপেক্ষা করে। এরপর সেখান থেকে মাহেন্দ্রা যোগে আটিপাড়া সড়ক থেকে মুগাকাঠী মোল্লাবাড়ী নেমে তাকে নিয়ে হাটতে শুরু করে। একপর্যায় ভরতের ভিটায় পরিত্যক্ত বাড়ীর গভীর জঙ্গলে ঢুকলে নজরুল কিছুটা বিচলতি হয়ে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করে আমরা কোথায় যাচ্ছি। এসময় আবুল বলেন জঙ্গল পেরুলেই আমার বাড়ী।

কথা বলতে না বলতেই অপর দুই সহযোগী পিছন থেকে গলায় গামছা পেচিঁয়ে মাটিতে ফেলে স্বাসরোধ করে হত্যা করে নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ সবকিছু নিয়ে পরিত্যক্ত বাড়ীর কচুরিপানা ভর্তী ডোবায় ফেলে ব্লেট দিয়ে পেট কেটে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। ৭ জুন স্থানীয়রা ঐ বাড়ীতে ঘাস কাটতে এসে ডোবায় অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখে উজিরপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। ওই দিন ওসি তদন্ত হেলাল উদ্দিন লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেন। এদিকে নিহতের ছেলে মুন্না চৌধুরী ৩ জুন নারায়নগঞ্জ থানায় একটি সাধার ডায়েরী করে। লাশের সংবাদ পেয়ে ৮ জুন নিহতের পরিবার বরিশাল সেবাচিম হাসপাতাল থেকে লাশ সনাক্ত করে তাদের বাড়ীতে নিয়ে যায়।

এসময় উজিরপুর মডেল থানায় একটি অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করা হয়। ওসি তদন্ত হেলাল উদ্দিন জানান উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২২ জুন হত্যাকারী আবুল তালুকদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ২৪ জুন জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম পিপিএম এর মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে লোমহর্ষক হত্যান্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন গ্রেফতারকৃত আবুল। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।