রাজশাহী নগরী নিয়ে মেয়র লিটনের ‘মাস্টার প্ল্যান’ ঘোষণা

0
1971

আখতার রহমান, ব্যুরো প্রধান, রাজশাহীঃ
নতুন কর আরোপ ছাড়াই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য ৫৪৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রোববার দুপুরে নগর ভবনের এনেক্স সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়।
বাজেট বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরীকে বাস যোগ্য করতে বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সরকারের কাছে বড় প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই সেগুলো অনুমোদন হয়ে যাবে।
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র সরিফুল ইসলাম বাবু, রজব আলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ।
বাজেট বক্তব্য :
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বাজেট বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো- রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাজেট ঘোষণার প্রাক্কালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান সহ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
২০০৮ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাজশাহী মহানগরবাসী আমাকে নির্বাচিত করে নগরবাসীর সেবার দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। নির্বাচিত হবার পর রাজশাহীবাসীর সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে রাজশাহী মহানগরীকে একটি উন্নত, পরিচ্ছন্ন, শান্তি ও স্বস্তির আবাসভূমি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। এর ফলে রাজশাহী দেশের একটি পরিচ্ছন্ন মডেল সিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত রাজশাহী সিটি নির্বাচনে আবারও আমাকে এবং আমার পরিষদকে নির্বাচিত করে রাজশাহী নগরবাসী সেবা করার গুরু দায়িত্ব আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আজ ৩০ জুন ২০১৯ তারিখে এ পরিষদের ১ম বাজেট আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।

আটটি কর্মকৌশল
১. পরিকল্পিত নগর অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধার উন্নয়ন।
২. উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সবুজায়ন, পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ এর মাধ্যমে মহানগরীর পরিবেশ উন্নয়ন।
৩. নগরের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন।
৪. প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ব্যবস্থাপনা ও কর্মক্ষমতার উন্নয়ন।
৫. রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আধুনিকরণের মাধ্যমে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।
৬. কর্ম সম্পাদনে গতিশীলতা আনয়ন ও সেবার মান বৃদ্ধি।
৭. দাপ্তরিক কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ।
৮. আর্থিক ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন।
কোন প্রতিষ্ঠানের বাজেট শুধুমাত্র আয়-ব্যয়ের খতিয়ান নয়। এর মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ভাবনা প্রতিফলিত হয়। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের প্রাক্কালে নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে প্রতিশ্রুতি মহানগরবাসীকে দিয়েছিলাম, একটি গণমুখী বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তার বাস্তব রুপ দিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সে নিরিখেই ২০১৯-২০ বছরের বাজেটটি প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সাথে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের আয়-ব্যয়ের প্রকৃত অবস্থার উপর ভিত্তি করে উক্ত অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটও প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমান অর্থ বছরের বাজেট এবং বিগত অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের কপি ইতোমধ্যে আপনাদের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। যার কিছু উল্লেখযোগ্য দিক আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
আপনারা জানেন যে, ২০০৮ সালে খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, বেহাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঋণভারে জর্জরিত কোষাগার, অন্ধকারাচ্ছন্ন সড়ক বাতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। সে অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে নিরলস প্রচেষ্টা, আন্তরিকতা ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা বিগত মেয়াদে নগরীর বেহাল রাস্তা, ফুটপাত ,নর্দমা নির্মাণ ও সংস্কার, এলইডি বাতি সংযোজন, পাবলিক টয়লেট, পার্ক , খেলার মাঠ, কবরস্থান, এসটিএস নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, রাজস্ব উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনকল্পে পদক্ষেপ গ্রহণ, নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ,সর্বস্তরের নাগরিকদের সচেতনকরণসহ কর্পোরেশনের কার্যক্রমে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্তকরণের মধ্যে দিয়ে রাসিকের সার্বিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা আনয়নের মধ্য দিয়ে আমরা নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছিলাম। এজন্য আমি সম্মানিত নগরবাসীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই মেয়াদে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনারা আমার উপর যে আস্থা রেখেছেন, তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে উন্নয়ের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এবারেও উন্নয়ন কাজ ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। রাজশাহীকে মেগাসিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণসহ মাস্টার প্লান তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের নিকট প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া, চীন, ভারত, কানাডা, নরওয়ে এবং ইন্দোনেশিয়া সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় রাজশাহীর যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদী খনন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, নগরায়ন, কৃষিজ এবং ফলজ দ্রব্যাদি প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি উন্নয়ন সাধন করা হবে। এসব ক্ষেত্রে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করা সম্ভবপর হবে বলে আশা করছি।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এখন উন্নয়নের ¯্রােতধারায় বদলে যাওয়া নগরী। অনেকেই এই নগরীবে গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি ও আলোকিত নগরী হিসেবে দেখতে আসেন। নগরবাসীর নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য বিধানে এ সংস্থাকে চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। সেজন্য আমি বাংলার গণমানুষের নেত্রী জাতির বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নগরবাসীদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি এখন রাজশাহী মহানগরীর চলমান যেসব উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং গৃহীত ভবিষ্য পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নি¤েœ উপস্থাপন করছি :
(১) রাজশাহীর উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা
মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে রাজশাহীর বিভিন্নখাতে ব্যাপক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও চায়নার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পাওয়ার চায়না‘র মধ্যে গত ১২ মে ২০১৯ তারিখে সমঝোতা স্মারক চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। ৫০ বছর মেয়াদী মাস্টার প্ল্যান টি বাস্তবায়ন হতে শুরু করলে পাল্টে যাবে পুরো রাজশাহী মহানগরীর চিত্র। চুক্তি অনুযায়ী আগামী তিন বছর ৮ টি খাতকে সামনে রেখে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছে পাওয়ার চায়না। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন করবে পাওয়ার চায়না।
খাতগুলো হলো, পদ্মা নদী শাসন করে নগরীর তীর সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তোলা হবে স্যাটেলাইট টাউন, হোটেল, মোটেল, বিনোদন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বিশ^মানের বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা। ইকোপার্ক তৈরি। সায়েন্সসিটি তৈরি। হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকনিক্যাল সুবিধা বাড়ানো। সুয়ারেজ ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন। নগর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন। এর মধ্যে রয়েছে গণ পরিবহণ, রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভার। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা।
চলমান প্রকল্পের অগ্রগতির তথ্য
রাজশাহী মহানগরীর রাজশাহী-নওগাঁ প্রধান সড়ক হতে মোহনপুর-রাজশাহী-নাটোর সড়ক পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। ১৮২ কোটি ৬৮ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের আলিফ লাম মীম ভাটার মোড় হতে ছোট বনগ্রাম, মেহেরচন্ডী, বুধপাড়া, মোহনপুর হয়ে চৌদ্দপায়া রাজশাহী-নাটোর সড়ক পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় নগরীর ২টি মহাসড়কের পূর্ব-পশ্চিমমুখি ৬.৭৯৩ কিলোমিটার ৪ লেন সংযোগ সড়ক নির্মিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩.৬৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চলমান সংযোগ সড়কের রেলওয়ে ক্রসিং-এ ২০২.৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ১টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ৩.০০ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে নিরাপদ চলাচলে ২.২০ মিটার চওড়া ফুটপাত নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণাধীন সড়কে আলোকায়ন কাজ করা হবে। বর্তমানে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৮৫%। প্রকল্পটির সংশোধিত মেয়াদ ডিসেম্বর, ২০১৯ এর মধ্যে সমূদয় অংশের কাজ সম্পন্ন হবে এবং সড়কটি চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় নির্মাণাধীন সংযোগ সড়কে চলাচল শুরু হলে মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানজট পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হবে। একই সাথে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপকভাবে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।

রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ (৩য় পর্যায়)(১ম সংশোধিত) : ১৮২ কোটি ২২ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ‘রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর ৬.৩৬ কিলোমিটার প্রাইমারী, ১৯.২৯ কিলোমিটার সেকেন্ডারি এবং ৬৭.৭৫ কিলোমিটার টারশিয়ারি নর্দমা নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পটির আওতায় নগরীর প্রধান ৩টি খালে নির্বিঘ্নে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার আওতায় রেলওয়ে ক্রসিং-এ কালভার্ট প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১টি কালভার্ট প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রয়েছে। ১ম বারের মতো যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাদামাটি অপসারণে ৯ টি প্রাইমারি নর্দমার পাশে মোট ৮.৬৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন সংযোগ সড়কের মাধ্যমে এক্সাভেটর দ্বারা নর্দমার কাঁদামাটি অপসারণ কাজ করা হবে। এছাড়াও নর্দমার সন্নিহিত এলাকার মানুষের চলাচলের বিকল্প রাস্তা তৈরি হবে। প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৮৮%। প্রকল্পটির সংশোধিত মেয়াদ জুন, ২০২০ এর মধ্যে সমূদয় অংশের কাজ সম্পন্ন হবে। প্রকল্পটির আওতায় সকল নর্দমা ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হলে মহানগরীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবনীয় উন্নতি সাধিত হবে এবং মহানগরীর প্রায় ৭২% এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।

রাজশাহী মহানগরীর কল্পনা সিনেমা হল হতে তালাইমারী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ ১২৭ কোটি ৪৯ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর আলুপট্টি মোড় হতে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত বর্তমান সড়কটির প্রশস্ত করে ৪ লেন সড়কে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় সড়কের দুই পাশে নিরাপদ চলাচলে ২.২০ মিটার চওড়া ফুটপাথ নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে সড়কটির দক্ষিণ পাশে দৃষ্টিনন্দন ফুটপাথ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সড়কটি প্রশস্তকরণে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অধিগ্রহণকৃত ভূমি ব্যবহার করে ৪ লেন সড়ক নির্মাণ কাজ দ্রুত আরম্ভ করা হবে এবং জুন, ২০২০ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। এই সড়কটি চালু হলে নগরীর যানজট পরিস্থিতির উল্লেখ্যযোগ্য উন্নতি সাধিত হবে। রাত্রিকালীন নিরাপদ চলাচলের জন্য উক্ত সড়কে আলোকায়ন করা হবে। বর্তমানে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৫৩%।

রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন ১৭২ কোটি ৯৮ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর ওয়ার্ডসমূহের বর্তমান ১৩২.৩৭ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়কগুলো পুনঃনির্মাণের মাধ্যমে চলাচলের উপযোগী করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় ইতোমধ্যে প্রায় ১৮.০০ কিলোমিটার সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টেকসই সড়ক নির্মাণের নিমিত্ত আধুনিক এ্যাসফল্ট কার্পেটিং কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর গুরুত্ব পূর্ণ ৪.৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সিটি বাইপাস সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর ক্ষতিগ্রস্থ বীর শ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর সড়ক-এর ঢাকা বাস টার্মিনাল হতে তালাইমারী পর্যন্ত ৪ লেন সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সড়কসমূহের পাশে পানি নিষ্কাশনে প্রায় ৪৯.২১ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তাছাড়াও নিরাপদ চলাচলে ১৯.৫০ কিলোমিটার ফুটপাথ এবং ৪.২৩ কিলোমিটার সড়কে আলোকায়ন করা হবে। প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৩৫%। প্রকল্পটির সংশোধিত মেয়াদ জুন, ২০২০ এর মধ্যে সমূদয় অংশের কাজ সম্পন্ন হবে এবং নির্মিত সড়ক চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় ৪ লেন সড়ক নির্মাণ ও ওয়ার্ডসমূহের কার্পেটিং সড়কসমূহ পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে মহানগরীর প্রায় সকল সড়কে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ফলশ্রুতিতে মহানগরীর যানজট পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হবে।

সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ এবং প্রতœতত্ত্ব অবকাঠামোর উন্নতি সাধন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে রাজশাহী মহানগরীর টেকসই উন্নয়ন

২১ কোটি ৯৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ভারতীয় অর্থায়নে চলমান প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ উপশহর হাউজিং এস্টেটের সকল রাস্তা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উভয় পাশে নিরাপদ চলাচলে ১৭.৯৪ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ফুটপাত নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। জনসাধারণের বিনোদন ব্যবস্থার আওতায় পারিজাত আবাসিক এলাকার একটি জলাশয় (লেক) এবং সপুরা সিল্ক মিল-এর নিকট একটি জলাশয়ের পাড় সমূহে স্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষা ওয়াল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় নগরীর হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অতিজীর্ণ ছয়টি মন্দিরের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব মন্দিরে বর্তমানে পূজা অর্চনা করা হচ্ছে। জলাশয় সমূহের চারিদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে জনসাধারণের বিনোদন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। নগরীর যুব সম্প্রদায়কে বই পড়ায় অভ্যস্থকরণে বর্তমান পদ্মা লাইব্রেরী ভেঙ্গে ৫ম তলা বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত লাইব্রেরী ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। মহানগরীর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড উন্নয়নে অতিপুরাতন রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের মিলনায়তন ভেঙ্গে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৯৩%। প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে সমাপ্ত হবে। কাজ সমাপ্ত হলে মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও আবাসিক এলাকায় জনসাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত হবে। এছাড়াও মহানগরীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধিত হবে।

রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় হতে সোনাদিঘী মোড় এবং মালোপাড়া মোড় হতে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) : ১০৮ কোটি ২৭ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ উপশহর মোড় হতে দড়িখরবোনা, কাদিরগঞ্জ, মহিলা কলেজ, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে সোনাদীঘি মোড় এবং মালোপাড়া মোড় হতে রাণীবাজার মোড় হয়ে সাগরপাড়া বটতলা মোড় পর্যন্ত ২.৫০ কিলোমিটার বর্তমান সড়কটি ১২.০০ মিটার প্রশস্ত করে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় ইতোমধ্যে রাণীবাজার মোড় হতে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কতিপয় ভূমি মালিকের উচ্চ আদালতে ভূমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির সকল অংশের সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ করা সম্ভবপর হয়নি। সম্প্রতি দড়িখরবোনা মোড় হতে উপশহর মোড় পর্যন্ত অধিগ্রহণকৃত ভূমি বিরোধীয় কাঠামো ছাড়া অন্যান্য কাঠামো অপসারণ করে সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। কাদিরগঞ্জ চালপট্টি হতে মালোপাড়া মোড় হয়ে রাণীবাজার মোড় পর্যন্ত এবং মালোপাড়া মোড় হতে সোনাদীঘি মোড় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। উচ্চ আদালতে মামলার কারণে ধীর গতিতে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মূল ডিপিপি সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপি সরকারের অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৩৫%। প্রকল্পটির সংশোধিত মেয়াদ জুন, ২০২০ এর মধ্যে সমূদয় অংশের কাজ সম্পন্ন হবে এবং প্রশস্তকৃত সড়কটি চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় প্রশস্তকৃত সড়কে চলাচল শুরু হলে মহানগরীর অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল যান চলাচলের সড়কটিতে নির্বিঘেœ যান চলাচল নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ফলশ্রুতিতে মহানগরীর যানজট পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হবে।

নতুন প্রকল্প
রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন : ২৯৭৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে নগরীর সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদনের নিমিত্ত দাখিল করা হয়েছে। ভৌত অবকাঠামোসমূহের সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে রাজশাহীকে বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করা এবং নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রণীত প্রকল্পটির আওতায় ওয়ার্ডসমূহের সকল শ্রেণীর ৩৮২.৬২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ/উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল রাস্তায় পানি নিষ্কাশনে ৩৪৬.৯২ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ক্রমবর্ধমান নগরায়নের প্রেক্ষাপটে বর্ধিত যানবাহন চলাচল বিবেচনায় মহানগরীর তালাইমারী মোড় হতে কাঁটাখালী মোড় এবং বিলসিমলা মোড় হতে সিটি হাট পর্যন্ত বর্তমান ৮.৮৫ কিলোমিটার সড়ক ৪ লেন সড়কে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ৫৪.৪৪ কিলোমিটার ফুটপাত ও ৫৯.৭০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মহানগরীর ১৯টি সরকারি খাস প্রাকৃতিক জলাশয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন করে বিনোদন পার্কের আদলে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মহানগরীতে ৩০টি আধুনিক গণশৌচাগার নির্মাণ, ৪৩টি কবরস্থানের অবকাঠামো উন্নয়ন, ৪টি বিনোদন পার্কের উন্নয়ন এবং সিটি বাইপাস মোড় ও ভদ্রা স্মৃতি অম্লান-এ সৌন্দর্য্যবর্ধক কাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ৩টি ওয়ার্ড কার্যালয়, লক্ষীপুর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ভূমিতে ১০তলা নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শাহ্ মখদুম দরগা শরীফ নির্মাণ, নগর ভবনের পশ্চিম পাশে সিটি কনভেনশন হল, সিটি অতিথিশালা, ধর্মসভার অবশিষ্টাংশ এবং ৪টি কাঁচা বাজার নির্মাণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান স্মৃতি সৌধ, ৫০ স্কুলে বঙ্গবন্ধু’র প্রতিকৃতি এবং ভাষা শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ৮টি রেলক্রসিং-এ ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জনসাধারণের নিরাপদ পারাপারের জন্য ১৭টি ফুটওভার ব্রীজ, ৩০টি যাত্রী ছাউনি ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে ল্যান্ডস্কেপিং কাজ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক সড়ক যন্ত্রপাতি এ্যাম্বুলেন্স, লাশ পরিবহন ভ্যান এবং শিশু পার্কের জন্য ১৬ সেট গেমস ক্রয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগে সরকারের অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের মধ্যেই সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।

রাজশাহী মহানগরীর সড়ক বাতি ও ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আধুনিকায়ন : ৮৯৫ কোটি ৩৯ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের প্রধান প্রধান সড়কে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ৭৭০৭ টি ১২০ ওয়াটের এলইডি বাতি এবং ৪০ ওয়াটের ১৮২৬৪ টি এলইডি বাতি সংযোজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ২৬টি মোড়ে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি ভারতীয় ঋণ ও সরকারের জিওবি তহবিলের আওতায় বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের ডিপিপি বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগে সরকারের অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের মধ্যেই সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।

রাজশাহী মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ও নর্দমা সমূহের উন্নয়ন : ৪৯ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর ওয়ার্ডসমূহের প্রান্তিক এলাকায় ৫২.১১ কিলোমিটার বর্তমান কার্পেটিং ও সিসি রাস্তা পুনঃনির্মাণের মাধ্যমে চলাচলের উপযোগী করা হবে। এছাড়াও প্রান্তিক এলাকাসমূহের পানি নিষ্কাশনে ৩৯.৮৩ কিলোমিটার টারশিয়ারী নর্দমা নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির ডিপিপি ইতোমধ্যে সরকার অনুমোদন প্রদান করেছেন। প্রকল্পটির আওতায় সড়ক ও নর্দমা নির্মাণ কাজ সহসা শুরু করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় ওয়ার্ডসমূহের প্রান্তিক এলাকার সড়ক ও নর্দমাসমূহ চলাচল উপযোগী কাজ সম্পন্ন হলে উক্ত এলাকাসমূহে নির্বিঘেœ যান ও জনসাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা সম্ভবপর হবে। ফলশ্রুতিতে প্রান্তিক এলাকাসমূহের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।

রাজশাহী মহানগরীর প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন : ৭৯৫ কোটি ৮০ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে নগরীর জলাশয় সমূহের অব্যহত ভরাট বন্ধ করাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার্থে প্রকল্পটির আওতায় মহানগরীর মোট ২২টি প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় মোট ৭৪.৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে ২২টি জলাশয় সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা হবে। উক্ত জলাশয়সমূহের খনন, চারিদিকে ওয়াকওয়ে, ল্যান্ডস্কেপিং সৌন্দর্য্যবর্ধক বেঞ্চ, পাড় সংরক্ষণ, ছাউনি ও লাইটিং কাজ করে বিনোদন পার্ক হিসাবে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় জলাশয়সমূহে সারা বছর পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পের ডিপিপি বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে সরকারের অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের মধ্যেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।

রাজশাহী মহানগরীর সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন : ২৯৯৫ কোটি ১১ লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি সড়কে নির্বিঘ্নে যান চলাচলের উদ্দেশ্যে ১২.৫০ মিটার চওড়া করে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি বর্তমানে প্রণয়নাধীন পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত ডিপিপি প্রণয়নপূর্বক সরকারের অনুমোদনের নিমিত্ত দাখিল করা হবে।

রাজশাহী মহানগরীর কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন : ৪৯২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মহানগরীতে নতুন ৫০.০০ একর ভূমি বরাদ্দের মাধ্যমে আধুনিক স্যানিটারী ল্যান্ডফিল্ড নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমান ল্যান্ডফিল্ড ভরাট হয়ে যাওয়ায় নতুনভাবে ল্যান্ডফিল্ড নির্মাণের প্রয়োজন। প্রস্তাবিত ল্যান্ডফিল্ডে হাসপাতাল বর্জ্য পুড়িয়ে বিনষ্ট করণে আধুনিক ইন্সিনারেশন প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নাধীন রয়েছে। দ্রুত ডিপিপি সরকারের অনুমোদনের নিমিত্ত দাখিল করা হবে।

রাজশাহী মহানগরীর শ্রীরামপুর পদ্মা নদীর তীরে বঙ্গবন্ধু ইকো পার্ক নির্মাণ : ৪২৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মহানগরীর শ্রীরামপুর পদ্মা নদীর তীরে প্রায় ১০০.০০ একর ভূমি বরাদ্দের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ইকোপার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত পার্কে আধুনিক বিনোদন ব্যবস্থা, রাত্রী যাপনের জন্য কটেজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নাধীন পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত ডিপিপি সরকারের অনুমোদনের নিমিত্ত দাখিল করা হবে।

রাজশাহী মহানগরীতে শেখ রাসেল সায়েন্স সিটি ও সাফারি পার্ক নির্মাণ : ৫১১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মহানগরীতে প্রায় ১০০.০০ একর ভূমি বরাদ্দের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে শেখ রাসেল সায়েন্স সিটি ও সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত পার্কে শিশুদের শিক্ষামূলক বিনোদন কাঠামো ও বিভিন্ন পশুপাখির সমন্বয়ে সাফারি পার্ক এবং রাত্রী যাপনের জন্য কটেজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নাধীন পর্যায়ে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপন

রাজশাহী শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদী এ মহানগীর উন্নয়ন ও বিকাশের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। এ নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা তথা নদী সচল রাখার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র একান্ত ইচ্ছায় পদ্মা নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এ ড্রেজিং কাজ শেষ হলে ভারতের সাথে আমদানি- রপ্তানির নতুন করিডোর হবে পদ্মা নদী। ড্রেজিং পরবর্তী এখানে আন্তর্জাতিক নদীবন্দর প্রতিষ্ঠা হলে নৌপথে বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত হতে মালামাল অনেক কম খরচে পরিবহন করা সম্ভব হবে। এছাড়াও মালামালগুলি ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় অনেক কম খরচে পৌছানো যাবে। নদীবন্দর প্রতিষ্ঠার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং বেকার সমস্যারও সমাধান হবে। এতে করে রাজশাহীতে বিনিয়োগের এক নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে।
শিল্পায়ন

আপনারা ইতোমধ্যে অবগত আছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে রাজশাহীতে তিনটি শিল্পাঞ্চল অনুমোদন দিয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে, বিসিক-২, বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও চামড়া শিল্পপার্ক। এই তিনটি শিল্পাঞ্চলে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া শতাধিক গার্মেন্টস, শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লক্ষাধিক ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

যানজট কমাতে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ

রাজশাহী মহানগরীর যানজট নিরসনে ব্যাটারি অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ণ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী সকাল ও বিকেল দুই শিফটে চলাচল করবে অটোরিকশা। অটোরিকশাকে মেরুন ও পিত্তি রঙে চিহ্নিতকরণ ও চলাচলের জন্য টাইম টেবিল নির্ধারণ করা হয়েছে। ১০ হাজার অটোরিকশা এবং ৫ হাজার চার্জার রিকশার বেশি নিবন্ধন যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একমুখী যান চলাচল ও পথচারী সড়ক চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে নগরীর যানজট নিরসন হবে।
পিপিপির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ
সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালীকরণ, শিল্পায়ন ও বাণিজ্যের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি, মহানগরীর আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের গৃহীত উদ্যোগ পিপিপি এর ভিত্তিতে বেসরকারি উদ্যোগী সংস্থার মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কার্যক্রম অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ২০০৯ সালে ১৬ তলা ‘সিটি সেন্টার’, আটতলা ‘স্বপ্নচূড়া প্লাজা’ ও আটতলা ‘দারুচিনি প্লাাজা’ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিগত ৫ বছর এই ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বে এসে ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সিটি সেন্টার ও স্বপ্নচূড়া প্্রাজার নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এছাড়া দারুচিনি প্লাজাসহ আরো কয়েকটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

ক্রীড়া
আমাদের সার্বিক কার্যক্রমের মধ্যে ক্রীড়া গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকাকালে কাউন্সিলর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন খেলাধূলার আয়োজন ও পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এবারো কাউন্সিলর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ আরো বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যুব সমাজকে মাদক থেকে বিরত রাখতে খেলাধূলার বিকল্প নেই। সেজন্য খেলাধূলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়েছে। ক্রীড়ার উন্নয়নে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা
জমি জটিলতায় রাজশাহীতে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠার কাজ দীর্ঘদিন আটকে ছিলো। জটিলতা নিরসন করে রাজশাহীতে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশীদুল হাসান গত ১৯ মে রাজশাহীতে এসে সাক্ষাৎ করেন এবং বিকেএসপি প্রতিষ্ঠার মেয়রের সহযোগিতা কামনা করেন। বিকেএসপি প্রতিষ্ঠায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।

দরিদ্র ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান কার্যক্রম (চলমান)
কমিউনিটি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট ফান্ড হতে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদানের মাধ্যমে মহানগরীতে ২২৭টি বাড়ি নির্মিত হয়েছে। সর্বোচ্চ ১ কাঠা জমির উপর বাড়ি নির্মাণের জন্য বাড়ীর মালিকগণকে স্বল্প সুদে সহজ কিস্তিতে এ পর্যন্ত ৪ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানার উন্নয়ন
(ক) বর্তমানে শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা রাজশাহী মহানগরীর একটি অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
(খ) চিড়িয়াখানার অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যায়ক্রমে চলছে। এর মধ্যে কিছু প্রাণীর খাঁচা, বাচ্চাদের বিভিন্ন রাইডস, পাবলিক টয়লেট, পার্কিং স্ট্যান্ড, ফুল বাগান, ক্যান্টিন, পিকনিক স্পট, রান্না করার জন্য চুলা, লেকের উপর ফুটওভার ব্রিজ, চিত্ত বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরণের মুরাল তৈরীর কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। চিড়িয়াখানার নতুন অফিস বিল্ডিং নির্মাণের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
(গ) জীববৈচিত্র সংরক্ষণে চিড়িয়াখানাটি সুন্দর ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২১ প্রজাতির পাখি ও ৩ ধরণের সরিসৃপ জাতীয় প্রাণি রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থান হতে জনগণের হাতে আটক ও উদ্ধারকৃত ছোট ছোট প্রাণি ও পাখি চিড়িয়াখানায় প্রদর্শণীর জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়াও অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশের্^র পাহাড়ে চা বাগান তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পঞ্চগড় থেকে অর্গানিক চারাগাছ এনে রোপন করা হয়েছে।
(ঘ) চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী “নভোথিয়েটার” নির্মাণের কাজ চলছে।
(ঙ) চিড়িয়াখানার অফিসের সামনের পুকুরটি সংস্কার কার্যক্রম চলছে। দর্শণার্থীদের বিনোদনের জন্য পুকুরের মাঝখানে একটি ঝর্ণা/ফোয়ারা স্থাপন করা হবে। জীববৈচিত্র রক্ষায় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হবে।
(চ) ইতোমধ্যেই অতি বিপন্ন প্রজাতী ঘড়িয়াল সংরক্ষণের জন্য রাজশাহী চিড়িয়াখানা ও জাতীয় চিড়িয়াখানার পুরুষ ও স্ত্রী ঘড়িয়াল বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ঘড়িয়াল রাখার স্থানটিকে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
(ছ) মাস্টারপ্লান অনুযায়ী আরো কিছু খাঁচা তৈরী সম্পন্ন হলে বিভিন্ন চিড়িয়াখানা ও সাফারী পার্কের সাথে যোগাযোগ করে বড় প্রাণি আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।
(জ) মাস্টারপ্লান অনুযায়ী পাখি সংরক্ষণের জন্য একটি এভিয়ারি তৈরী করা হবে। এভিয়ারিটি তৈরী হলে এটিই হবে দেশের মধ্যে কোন চিড়িয়াখানার সর্ববৃহৎ এভিয়ারি ।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম
মহানগরীর শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়মুখীকরণের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন রাজশাহী সিটি প্রাক প্রাথমিক কেন্দ্র নামে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছে। মহানগরীর ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১১, ১২, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২১, ২৩, ২৪, ২৫, ২৮, ২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে মোট ২০ টি কেন্দ্রে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ সব কেন্দ্রে মোট ৩৯ জন শিক্ষিকা পাঠ দানে নিয়োজিত আছেন। এ শিক্ষা ব্যবস্থাপনাটিকে আরো আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কর্নার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন আলেখ্য প্রজন্মের কাছে উপস্থাপনের উদ্দেশে ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে নগর ভবনের দ্বিতীয় তলার উন্মুক্ত স্পেসের পাশে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। দেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনই সর্ব প্রথম বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের মাধ্যমে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কর্ণারটি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত। এই কর্ণার থেকে মানুষ বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবেন। এতে তারা দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হবেন। রাজশাহী মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বঙ্গবন্ধুর আগমন বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে গবেষণা শুরু করেছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ঐতিহাসিক উপাদান দিয়ে কর্নারটিকে সমৃদ্ধকরণের পরিকল্পনা আছে। কর্নারটি সমৃদ্ধকরণের প্রাথমিক পরিকল্পনায় আছে।
আধুনিক কসাইখানা (শ্লটার হাউজ) নির্মাণ
আধুনিক জবাইখানা না থাকায় বর্তমানে যত্রতত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করা হয়, যা নাগরিক স্বাস্থ্যের জন ক্ষতিকর। এ অবস্থা নিরসনকল্পে অত্যাধুনিক ৪ টি পশু জবাইখানা নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
রাজশাহী সিটি মিউজিয়াম
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন- ২০০৯-এর ৫২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজশাহীর শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিাহাস ও প্রতœতাত্ত্বিক সম্পদ সংরক্ষণ, গবেষণা ও পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২০০৮ সালের নির্বাচিত পরিষদ ‘ইতিহাস, পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ও পর্যটন উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি’ গঠন করে। এ কমিটি বিস্তর আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট গবেষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর রাজশাহী সিটি মিউজিয়াম স্থাপনের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কার্যক্রমের কিছুটা অগ্রগতি হলেও পূর্ণতা পায়নি। বর্তমান পরিষদ উল্লিখিত বিষয় বিবেচনা করে কর্পোরেশনের বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ও আর্কাইভসের সমন্বয়ে রাজশাহী সিটি মিউজিয়াম বিকাশের নব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়ন
রাজশাহী মহানগরীকে উন্নত-বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে ও পরিবেশদূষণরোধে সবুজায়নের লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গত ২০জুন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। এ বছর নগরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে ১০ হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আরো ১৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হবে। পরবর্তী বছরগুলোতেও ধারাবাহিকভাবে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
একটি পরিচ্ছন্ন মহানগরী গড়ে তোলার জন্য প্রথম মেয়াদের সময় ১ জুলাই ২০০৯ সালে রাত্রীকালীন বর্জ্য আবর্জনা অপসারন কার্যক্রম চালু করা হয়েছিল। বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের পর পূর্বের ন্যায় কার্যক্রম চালু করেছে। এর সুফল মহানগরবাসী ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে। পরিচ্ছন্ন মহানগরী গড়তে ইতোমধ্যেই ইমামগণ, শিক্ষকবৃন্দ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, চেম্বার অব কর্মাস, বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক মালিকসহ মহানগরীর বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (মসজিদ, মন্দির, গির্জা) ইত্যাদিতে উদ্বুদ্ধকরণ ব্যানার প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যানার প্রদান করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জনসচেতনার লক্ষ্যে পত্রিকা, ক্যাবল লাইনে বিজ্ঞাপন, মসজিদে প্রাক খুতবা, মাইকিং এবং লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। আমি দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি মহানগরবাসী এবং আপনাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ মহানগরীকে আরো পরিচ্ছন্ন রাখতে সক্ষম হবো।
বর্জ্য আবর্জনা হতে রিসাইকেলের মাধ্যমে সার, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ উৎপন্নের জন্য আমেরিকান একটি কোম্পানী এলএসসি ও রাসিকের সাথে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আশা করি চলতি বছরে ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে আনতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সকল ক্লিনিকের আউট হাউজ মেডিকেল বর্জ্য পরিবেশসম্মত ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কর্মচারীরা মেডিকেল ও ক্লিনিক থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করবে, তাদের ভ্যানে করে প্ল্যান্টে নিয়ে গিয়ে সেখানে পরিশোধন ও অপসারণ করবে।
এই কার্যক্রম চালু হলে মেডিকেল বর্জ্য পৃথকভাবে সংগ্রহ এবং ট্রিটমেন্টের কার্যক্রম চালু হবে। এই প্রজেক্টে অত্যাধুনিক অটোক্লেভ এবং ইন্সিনারেশন প্লান্ট স্থাপন করা হবে। আাপনাদের অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে, সুষ্ঠু আবর্জনা ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে ০২ টি স্কীড লোডার, ০১ টি চেইন ড্রোজার ও ০১ টি এক্সাভেটর সংযোজন করা হয়েছে। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে আরো ০৪ টি স্কীড লোডার, ০২ টি চেইন ড্রোজার ও ০২ টি এক্সাভেটর সংযোজন করা হবে। বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের জন্য আমরা ব্র্যাকের সহযোগিতায় আরো ১৯০ টি রিকশ গারবেজ ভ্যান সংযোজন করা হয়েছে ওয়ার্ড এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে। পরিচ্ছন্নকর্মী ও এই কাজে নিয়োজিত সকল মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের চিহ্নিত করার জন্য পোশাক সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ এ কাজে নিয়োজিত কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিহ্রাসের জন্য গামবুট, হান্ডগ্লোভস, নোজমাক্স, রেইনকোর্ট ইত্যাদি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আপনারা অবগত আছেন, বিডিক্লিন নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দেশব্যাপী পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জনগণকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীতেও তারা তাদের কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করছে এবং তাদের সহযোগিতায় আগামী ডিসেম্বর নাগাদ একটি ব্যাপক জনসমাগমের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি করতে চাই। যেখানে দেশের একজন বিশিষ্ট বরেণ্য ব্যক্তিকে আমরা উপস্থিত করবো এ বিষযে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও বর্তমান মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মাশরাফি বিন মর্তুজা আমাদের প্রথম পছন্দ। পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর নগরী গড়তে আমিসহ আমার পরিষদের সকল সদস্যের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মহানগরবাসীর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবো বলে আমরা বিশ^াস করি।
মশক নিয়ন্ত্রণ : মশক নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়েছে। মশক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় স্প্রে মেশিন ও ও ওষুধ ক্রয় করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ডিজিটাল কার্যক্রম
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে ২০০৯ সালের ২৪ জুন বৎধলংযধযর.মড়া.নফ ওয়েব সাইট চালু হয়ে পরবর্তীতে বৎধলংযধযর.ঢ়ড়ৎঃধষ.মড়া.নফ. এর মাধ্যমে নগরবাসীর সহজে তথ্য প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পুরো কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিতকরণ হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনে আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের ই-ফাইলিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের জন্য নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যা সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে সহায়ক হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করি।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রোগ্রামের আওতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সেবামূলক ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু করেছে। নগর ভবনে একই স্থান থেকে দ্রুততম সময়ে নাগরিকদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। টেন্ডার, হোল্ডিং ট্যাক্স, লাইসেন্সসহ সকল তথ্য সেবা অনলাইনে গ্রহণ ও প্রেরণ কার্যক্রম রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন সম্পাদন করছে।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন
রাজশাহী মহানগরীর উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও সুম্পর্ক বজায় রাখা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের রাজশাহীতে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ করা হচ্ছে। আপনারা অবগত আছেন, ইতোমধ্যে চায়না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, ইন্দোনেশিয়া ও কানাডার রাষ্ট্রদূত, ঢাকায় ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনারসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ রাজশাহী সফর করেছেন এবং রাজশাহীতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আগামীতেও বিভিন্ন দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে রাজশাহীর উন্নয়ন কাজকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
আমি এখন সংক্ষেপে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।
২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট : বিগত অর্থ বছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়িয়েছে ৩২৪ কোটি ৮৯ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা।
২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট : আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ ধরে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৪৭ কোটি ১৮ লক্ষ ১২ হাজার ২৭৪ টাকা ৬৬ পঁয়সা ।
বাজেটের মূল বৈশিষ্টগুলো হচ্ছে

(ক) বাজেটে নতুন কোন কর আরোপিত হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সকল স্থাপনার উপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্পোরেশনের আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
(খ) এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। এ বাজেটে শহরের সড়ক ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নের সাথে এগুলো রক্ষনণাবেক্ষণের উপর এ বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
(গ) এ বাজেটে নাগরিক সেবা সম্পসারণ ও সেবার মান উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
(ঘ) এ বাজেটে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, পার্ক, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির আওতায় আনা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
(ঙ) এ বাজেটে ডেঙ্গু ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে মশক নিধন এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

রাজশাহী মহানগরীকে সর্বঙ্গীন সুন্দর একটি নগরীতে পরিণত করতে আমাদের আন্তরিকতা এবং প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে। উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও অর্থের জোগান। আর এই অর্থ সংস্থাপনের জন্য স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র সরকারি বা বিদেশী সাহায্য ও ঋণের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে পারে না। তাকে নিজস্ব আয়ের উপর ভর করে নিজের পায়ে দাড়ানোর চিন্তা করতে হবে। যা সময়ের দাবি। এজন্য প্রয়োজন সকল নাগরিকের পরিপূর্ণ আন্তরিকতা ও সহযোগিতা। কর্পোরেশনের যেমন দায়িত্ব রয়েছে নগরবাসীর নাগরিক স্বাচ্ছন্দের ব্যবস্থা করা, তেমনিভাবে নাগরিকদেরও কর্তব্য রয়েছে কর্পোরেশনকে তার কাজে সার্বিক সহযোগিতা করা। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে কর্পোরেশনের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নিয়মিত কর পরিশোধসহ উন্নয়ন কাজে সর্বাতœক সহায়তা করার জন্য রাজশাহী মহানগরবাসীকে আহবান জানাই। নগরবাসীর নাগরিক জীবনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঘোষিত বাজেটের সঠিক বাস্তবায়নে আমি আপনাদের দোয়া ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

আপনারা আমাদের সাথে থাকুন, পাশে থাকুন। এ বাজেট প্রণয়ণে অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, হিসাব বিভাগ, জনসংযোগ শাখাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানগণ যে সহযোগিতা করেছেন, সেজন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − five =