কিশোরী কন্যাকে খুন করে গঙ্গার পানিতে ভাসিয়ে দেন বাবা-মা

0
966

পাশের গ্রামের দূরসম্পর্কের আত্মীয়র সঙ্গে প্রেমে জড়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রতিমা মণ্ডল। এ সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে কিশোরী কন্যাকে খুন করে গঙ্গার পানিতে ভাসিয়ে দেন বাবা-মা।ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ভূতনিতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটে।

শনিবার সকালে বস্তাবন্দি ওই কিশোরীর মৃতদেহ সাইকেলে করে নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। নৌকায় করে মাঝ নদীতে গিয়ে সেই মরদেহ পানিতে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।আনন্দবাজার জানায়, এ ঘটনায় ভূতনি থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। ওই মামলায় বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত আরও এক আত্মীয়কে খুঁজছে পুলিশ।এদিকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল। নামানো হয়েছে স্পিডবোট। পাশাপাশি স্থানীয় মাঝিরাও নৌকা নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমার বাবা ধীরেন মণ্ডল পেশায় দিনমজুর। বড় মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে প্রতিমার সঙ্গে পাশের গ্রামের দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

স্থানীয়রা জানান, বাবা ধীরেন এবং মা সুমতি এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি। এ নিয়ে গত বেশ কয়েক দিন ধরে বাড়িতে অশান্তি চলছিল।শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধীরেন, সুমতি ও তাদের এক আত্মীয়কে একটি ভারী চটের বস্তা সাইকেলে চাপিয়ে গঙ্গার দিকে নিয়ে যেতে দেখেন গ্রামবাসী। শুধু তাই নয়, বেশ কিছুক্ষণ পরে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে সেই চটের বস্তাকে একটি নৌকায় তোলা হয়। নৌকাটি মাঝ গঙ্গায় গেলে সেই বস্তা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অনেকের দাবি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের এই ঘটনায় সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ভূতনি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ধীরেন ও সুমতি তাদের মেয়ে প্রতিমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে চটের বস্তায় ভরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, ওই কিশোরীর মরদেহ সাইকেলে চাপিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে গঙ্গার তীরে দেহটি পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু গর্ত খুঁড়লে লোকজন বিষয়টি জেনে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় মাঝ নদীতে মরদেহটি ফেলা হয়।পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কিশোরীর বাবা মেয়েকে খুন করার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, মেয়েকে খুন করার অভিযোগে বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় কিশোরীর এক আত্মীয়কে খোঁজা হচ্ছে। নদী থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

9 + 7 =